বিবিধ ভাবনা (৩৩)
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on March 5, 2021
- Bangla Articles, সমাজ ও রাজনীতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
১. ভোটডাকাতের ভাবমূর্তির ভাবনা
বাংলাদেশের ভোটডাকাত সরকার সম্প্রতি বলেছে: সোসাল মিডিয়া দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। প্রশ্ন হলো, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে সোসাল মিডিয়া না ভোটডাকাত সরকার? দিনের ভোট যদি রাতে সরকারি দলের হাতে ডাকাতী হয়ে যায় -তবে কি দেশের ভাবমূর্তি থাকে? সরকারের দায়িত্ব তো ডাকাতি ঠেকানো; কিন্তু সরকার নিজেই যদি ডাকাতে পরিণত হয় -তবে কি দেশের ইজ্জত থাকে? যদি প্রতিবাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয় এবং গুম, খুন ও ধর্ষণের প্লাবন শুরু হয় -জনগণের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না হলে তো বিশ্ববাসী বুঝবে দেশের মানুষ কতটা মৃত। তাছাড়া ভোটডাকাতের আবার ভাবমূর্তির ভাবনা কিসের? সে ভাবনা থাকলে কি তারা চুরিডাকাতিতে নামতো? দুনিয়ার সামনে দেশের ভাবমূর্তি ডুবিয়েছে তো শেখ হাসিনা, সেনাপ্রধান আজিজ ও তাদের খুনি সহচরগণ -যা আল জাজিরা প্রকাশ করেছে।
দেশের পত্র-পত্রিকা ও টিভি সরকারের নিয়ন্ত্রনে। সেগুলি সরকারী দলের দুর্বৃত্তির কথা তুলে ধরেনা। সে দুর্বৃত্তির কথা সোসাল মিডিয়াতে তুলে ধরা হলে –সরকার বলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। যারা ডাকাতি, গুম, খুন ও ধর্ষণের সাথে জড়িত -তারা দুর্বৃত্তির স্বাধীনতা চায়। কিন্তু সে দুর্বৃত্তির কথা অন্যরা জানুক –সেটি চায়না। নিজেদের ভাবমূর্তি নিয়ে এতো ভাবনা থাকলে -তাদের উচিত ছিল সে অপরাধের পথে পা না বাড়ানো। সোসাল মিডিয়া নিশ্চুপ হলে তো দেশের ভাবমূর্তি আরো নষ্ট হবে। তখন বিশ্ববাসী জানবে, দেশে বিবেকবান মানুষ বলে কেউ নাই। অপরাধ করা যেমন অপরাধ, তেমনি সে অপরাধ সয়ে যাওয়াও তো অপরাধ। এটি কি করে সম্ভব যে জনগণ অপরাধ নিরবে সয়ে যাবে?
২. অবৈধ হাসিনা বলে কী?
সম্প্রতি শেখ হাসিনার উক্তি: যারা অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় আসে তারাই দেশকে অস্থিতিকর করে। ভাবটা এমন, সে নিজে যেন বৈধ ভাবে ক্ষমতায় এসেছে। শেখ হাসিনা দুইবার অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় এসেছে: প্রথমবার ২০১৪ সাল এবং দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ সিটে কোন নির্বাচনী বুথই খোলা হয়নি। এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে আগের রাতেই জনগণের ভোট ডাকাতী করে নেয়।
নির্লজ্জ হলে মানুষ জনসম্মুখে উলঙ্গ হতে পারে। তেমন নির্লজ্জরাই সবার সামনে ডাকাতির ন্যায় ভয়ংকর অপরাধে নামতে পারে। সে রকম নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছে শেখ হাসিনা। কথা হলো, দুর্নীতি ও ভোটডাকাতী করে ক্ষমতায় আসা কি অবৈধ নয়? তাতে কি দেশ অস্থিতিকর হয় না? ভোটডাকাতি বৈধ হলে অবৈধ পথ কোনটি?
৩. যে পাপ দুর্বৃত্তি সয়ে যাওয়ার
কে কত নামায পড়লো ও রোযা রাখলো -মহান আল্লাহতায়ালা শুধু সে হিসাবই নিবেন না। দুর্বৃত্তের নির্মূল ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় কার কি ভূমিকা -সে হিসাবও দিতে হবে। কারণ সে কাজটিও মুসলিম জীবনের মিশন। শুধু পানাহার নিয়ে বাঁচলে জীবন সুখের হয়না, ঘর থেকে নিয়মিত আবর্জনাও সরাতে হয়। তেমনি দুর্বৃত্তের শাসন মেনে নেয়া আদৌ ঈমানদারী নয়। তাতে সমাজ সভ্য ও শান্তিময় হয়না। শুধু নামায-রোযায় সে কাজ হয় না। এজন্যই ইসলামে ফরজ শুধু নামায-রোযা নয়, ফরজ হলো দুর্বৃত্ত নির্মূলের জিহাদ। যে দেশে জিহাদ নাই সেদেশ দুর্বৃত্তদের দখলে যায়। বাংলাদেশ দুর্বৃত্তদের দখলে যাওয়ার কারণ তো জনগণের জীবনে জিহাদশূণ্যতা। পাপ এখানে দুর্বৃত্তির নির্মূল না করে সয়ে যাওয়ার।
৪.সরকারের অপরাধ
পানাহারের ন্যায় কথা বলা, লেখালেখি করা ও মিছিল-মিটিং করা জনগণের মৌলিক অধিকার। পানাহারে সরকারের অনুমতি লাগে না। মিছিল-মিটিং করতেই বা জনগণের অনুমতি লাগবে কেন? বরং অপরাধ তো সে সরকারী নেতাদের যারা সে অধিকার কেড়ে নেয়া। যে আইন সে অধিকার কেড়ে নেয়, সে আইনই বেআইনী। সে আইন অসভ্য ও সংবিধান বিরোধী। সে অপরাধের জন্য সরকারের বিচার হওয়া এবং বিচারে কঠোর শাস্তি হওয়া জরুরি।
৫. মানবতার পরিচয় যুদ্ধ নিয়ে বাঁচায়
গরু-ছাগলের ভোটাধিকার ও মতামতের প্রকাশ নিয়ে আগ্রহ থাকে না। ফলে ভোটদান ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিলেও তারা রাস্তায় নামে না। গরু-ছাগলেরা চায় স্রেফ ঘাস। জনগণের মানবতা বুঝা যায়, তাদের মাঝে নাগরিক অধিকার নিয়ে বাঁচার যুদ্ধ দেখে। তাই ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়ে যাওয়ার পরও যারা নিরব থাকে -বুঝতে হবে তারা গরু-ছাগল থেকে সামান্যই উন্নত। তারা পানাহার ছাড়া বেশী কিছু চায় না। এমন জনগণের উপর ভোটডাকাতদের শাসন চেপে বসে। তাই বাংলাদেশে উপর যে স্বৈরাচারি শাসন চেপে বসেছে -তা কি বিশ্বের কোন সভ্য দেশে ভাবা যায়?
৬. ডাকাত তাড়াতে আগ্রহ কই?
যাকাতের শাড়ী পেতে বাংলাদেশে মানুষের ঢল নামে। বহু মানুষ ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা যায়। ঢাকায় কোটি লোকের বেশী মানুষের বসবাস। দশ জনের মধ্যে একজনও যদি ভোটডাকাত তাড়াতে রাস্তায় নামতো তবে ১০ লাখের বেশী মানুষ রাস্তায় হতো। তখন ভোটডাকাত সরকার কি তখন ক্ষমতায় থাকতে পারতো? কিন্তু সে ডাকাত তাড়াতে আগ্রহ কই?
৭.চেনার কাজটি হয়নি
সভ্যদেশে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়। অসভ্য দেশ ভোটডাকাতদের সরকারও বিনা প্রতিরোধে দীর্ঘায়ু পায়। ডাকাত না তাড়িয়ে যারা ঘুমায় তারা ডাকাতের বন্ধু এবং দেশের শত্রু। এবং যারা ডাকাত তাড়াতে ময়দানে নামে তাঁরাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। বাংলাদেশে সে দেশপ্রেমিকদের সংখ্যাটি কম। ফলে ডাকাতও শাসকের আসনে বসে। অথচ এ আসনে বসেছেন নবীজী (সা:) এবং তার মহান সাহাবীগণ।
প্রাণ বাঁচাতে যেমন হিংস্র পশুদের চিনতে হয়, তেমনি মানবিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে হলে গণতন্ত্রের শত্রু ভোট-ডাকাতদেরও চিনতে হয়। এবং কিন্তু বাংলাদেশে সে চেনার কাজটি হয়নি। ফলে শেখ মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্র হত্যাকারি ফ্যাসিস্টকে যেমন জাতির পিতা বলা হয়, তেমনি হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাতকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলা হয়। এরূপ অজ্ঞতা নিয়ে কি ভোটডাকাত দুর্বৃত্তদের শাসন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? ০৫/০৩/২০২১।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- নামাযে নিদারুণ ব্যর্থতার বিষয়গুলি
- বিবিধ ভাবনা (৪৪)
- বিবিধ ভাবনা (৪৩)
- কাঙ্খিত লক্ষ্যে রোযা কতটুকু সফল?
- বিবিধ ভাবনা (৪২)
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
MOST READ ARTICLES
- My COVID Experience
- একাত্তরের প্রসঙ্গ ও কিছু আলেমের কান্ড
- আমার কোভিড অভিজ্ঞতা
- শেখ মুজিবের সাথে কিছুক্ষণের স্মৃতি
- বাঙালী হিন্দুর রেনেসাঁ ও নাশকতা
RECENT COMMENTS
- site on বাঙালী মুসলিমের বিরুদ্ধে ভারতের কেন এতো আক্রোশ এবং প্রতিরোধই বা কীরূপে?
- Nawaz Ahmed on My COVID Experience
- Fitness Workout on Political, religious & demographic dynamics in South Asia & threatened co-existence of people with pluralities
- compare mobile phone deals unlimited data on বাঙালী মুসলিমের বিরুদ্ধে ভারতের কেন এতো আক্রোশ এবং প্রতিরোধই বা কীরূপে?
- Dr. Md. Kamruzzaman on বিবিধ ভাবনা (২৯)
ARCHIVES
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018