ডাকাতের গ্রাম

 ফিরোজ মাহবুব কামাল

সাধ ছিল বাঁচবো স্বাধীন ভাবে নিজ দেশে,

শক্তি দিয়ে লিখবো, দিল খুলে গাইবো মহান আল্লাহর জয়গান,

বিজয়ী করবো তাঁরই বিধান, এছাড়া জুটে কি জান্নাতে স্থান?

 কিন্তু দেশ খানি দখলে নিছে একপাল ক্ষুধার্ত হায়েনার দল।

 

দেশ যেন ডাকাতের গ্রাম।

শুধু অর্থ নয়, গহনা নয়, ডাকাতির শিকার হয় নিরস্ত্র

জনতার আবরু, ইজ্জত ও প্রাণ।

প্রাণ খুলে কথা বলা, অপরাধকে অপরাধ বলা -এ গ্রামে বিশাল অপরাধ।

প্রতিবাদে পথে নামলে, ডাকাতেরাও গালি দেয়ে, জেলে নেয় সন্ত্রাসী বলে।

 

অধিকৃত এ অরক্ষিত গ্রামে স্বাধীনতা কবরে গেছে বহু আগেই

বেঁচে নাই সভ্যতা, ভদ্রতা ও বিচার,

 বেঁচে আছে ডাকাতের নৃশংস ও অসভ্য স্বৈরাচার।

 

পুলিশ, সেনাদল, বিচারক, প্রশাসনও ভিড়েছে ডাকাতদের দলে,

শিক্ষিতের লেবাসে ভদ্র জন যারা, নৃশংস ডাকাতদের প্রণাম করে তারাও,

বিবৃতির ফানুস উড়ায় নিষিত রাতের ভোটডাকাতিকে সুষ্ঠ নির্বাচন বলে।

কবরে গেছে মানবতা, লোকজ রীতি ও ভদ্রতার সকল ভূষণ।

 

এদেশে কেউ নাই ডাকাত তাড়ানোর,

বরং বড় বড় সভা হয়, উৎসব ভরে জলসাও হয়,

সবই হয় নৃশংস ডাকাতদের শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় বলায়।

এ যেন জানাজা সভ্য রীতি-নীতি ও শিষ্ট ভদ্রতার।

 

জনগণের ভোট নিয়ে ডাকাতেরা যায়নি ক্ষমতায়,

তাই দায় নেই জনগণের এজলাসে জবাব দেয়ার।

চুরি-ডাকাতি, গুম, খুন, ভোট ডাকাতি ও সন্ত্রাস,

সবই যেন ডাকাতদের বৈধ অধিকার।

 

জনগণের দায় শুধু মৌন মুখে রাজস্ব দেওয়ায়,

এবং নতশিরে ভক্তি ভরে ডাকাতদের শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় বলায়।

 

যে দেশে গুম, খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও ভোটডাকাতির হয় না বিচার,

সে দেশে কিসের ভয় বার বার গুম-খুন-ধর্ষণ ও ভোট ডাকাতির?

সে দেশে কিসের দায়, সভ্য ও ভদ্র হওয়ায়?

আছে কি প্রয়োজন আইন মানার?

 

মাঠে আজ পুলিশ, সেনা, আদালত ও সরকারি ডাকাত দল,

চারিদিকে আয়োজন শুধু

দেশকে আরো অসভ্য ও নৃশংস করার।

                                                          

যাদের গর্ব পুলিশ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, চাকরিজীবী, পেশাজীবী, আইনবিদ ও লেখক হওয়ায়,

তারাও নীরব, নেয় না দায় ডাকাত তাড়ানোর।

দায় যেন শুধু নতশিরে শ্রদ্ধাভরে অসভ্য ডাকাতদের প্রণাম দেয়ায়?

তাই বঙ্গীয় এ বদ্বীপে ডাকাতেরা বেঁচে আছে বনবাসী হায়েনার পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে।

ডাকাতের এ গ্রামে জনগণ বাঁচে গোলামীর দুঃসহ দিন গুণে গুণে।

২১/১২/২০২১

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *