বিচিত্র প্রসঙ্গ-১
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on February 25, 2020
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, সমাজ ও রাজনীতি
- No Comments.
১.
গুজরাতে মুসলিম গণহত্যার সাথে নরেন্দ্র মোদি জড়িত। জড়িত অযোধ্যায় বাবরি মসজিদর ধ্বংসের সাথেও। মোদি এখন চায় ভারতীয় মুসলিমদের নাগরিকতা কেড়ে নিতে। তৈরী করেছে নাগরিকত্য আইন। বিজেপি ও আরএসএসের ন্যায় হিন্দু সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে বড়ই গর্ব হলো হিন্দু অতীত নিয়ে। ভারতের বুকে ৬ শত বছরের মুসলিম শাসন অতি লজ্জার কারণ। তার দাবী, প্রাচীন যুগে হিন্দু ধর্মগুরুগণ শকওটে চড়ে আকাশ ভ্রমন করতো। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প ভারত সফরে আসায় তাকে দেখানোর জন্য হিন্দুদের গড়া কোন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া গেল না। ট্রাম্পকে নেয়ে হলো আগ্রার তাজমহল দেখাতে। প্রশ্ন হলো, হিন্দুত্ব ও হিন্দু ঐতিহ্য নিয়ে এত যে বড়াই তা গেল কোথায়?
২.
মুসলিমদের মাঝে একতা গড়া ফরজ এবং বিভক্তি গড়া হারাম। হারামের পথ জাহান্নামে নেয়। তাই ভাষা, গোত্র, এলাকা, ফেরকা ও দলের নামে যারা মুসলিমদের বিভক্তি গড়ে তারা জনগণকে জাহান্নামে নেয়ার রাস্তা গড়ে। শয়তান ও ইসলামের শত্রুপক্ষ সেটাই চায়।
সুরা আল ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিভক্ত না হতে। এবং উক্ত সুরার ১০৫ নম্বর আয়াতে বিভক্তির শাস্তি রূপে ঘোষিত হয়েছে ভয়ানক আযাবের প্রতিশ্রুতি। অথচ মুসলিমদের মাঝে সে নির্দেশের প্রতি আনুগত্য কই? মহান আল্লাহর সে হুকুমের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বিদ্রোহ এতটাই প্রবল যে, তারা দল গড়ে এবং দেশ গড়ে ভাষা, এলাকা ও গোত্রের নামে বিভক্তির দেয়াল গড়ার লক্ষ্যে। ফলে তাদের ৫৭টি দেশ।
অথচ গৌরব যুগে মুসলিমদের একটি মাত্র দেশ ছিল। নবীজী ও তারা সাহাবাগণ দেশ গড়েছেন নানা ভাষা, নানা গোত্র ও নানা এলাকার মানুষের এক অখণ্ড ভূগোলে বসবাসের সুযোগ দিতে। ফলে আরব, ইরানী, তুর্কী, কুর্দি, মিশরীয়, মুর এক দেশে বসবাস করেছে। এক এলাকা বা শহর থেকে অন্য শহরে গিয়ে ঘর বাঁধতে আজকের ন্যায় কোন ভিসা লাগতো না। তাতে আল্লাহর রহমত এসেছে এবং মুসলিমগণ বিশ্বশক্তির মর্যাদা পেয়েছে। মুসলিমগণ আজ বিভক্ত। বিভক্ত বাঁচাতে সেনাবাহিনী গড়েছে। তাই প্রতিশ্রুত আযাবও তাই তাদের ঘিরে ধরেছে। নামায়-রোযা বা লক্ষ লক্ষ মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে কি এ শাস্তি থেকে মুক্তি মিলবে?ঐক্যের বিকল্প ঐক্যই। বিভক্তির জন্য কোর’আনে ঘোষিত যে প্রতিশ্রুত আযাব -তা থেকে মুক্তি একমাত্র একতা গড়েই সম্ভব।তাই প্রতিটি ঈমানদারের মেধা ও সামর্থ্যের বিপুল বিনিয়োগ হওয়া উচিত মুসলিম উম্মাহর একতার প্রতিষ্ঠায়।
৩.
পরকালের ভাবনা থেকেই রাজনীতি, সংস্কৃতি, যুদ্ধনীতি ও শিক্ষানীতি নির্ণীত হওয়া উচিত। একমাত্র তখনই গুম,খুন, ধর্ষণ ও ভোট ডাকাতির বদলে সভ্যতর রাজনীতির জন্ম হতে পারে। মানব জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক শূণ্যতাটি শিক্ষা বা সম্পদের নয়। বরং সেটি আখেরাতের ভয় না থাকাটি। আখেরাতের ভয় থাকলে প্রতি মুহুর্তের ব্যস্ততাটি হয় নেক আমলে। চুরি, ডাকাতি ও ব্যভিচারের ন্যায় নানারূপ পাপের পথে নামার মূল কারণটি হলো পরকালের ভয় না থাকা।মহান আল্লাহতায়ালা সেটিরই ঘোষণা দিয়েছেন সুরা আল মুদাচ্ছেরে।
৪.
মুসলিমদের রাজনীতি বা যুদ্ধে যখন কাফেরগণ খুশি হয়, বুঝতে হবে তাতে মুসলিমদের মহা ক্ষতি।আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে তাবৎ কাফেরগণ খুশি। তাই তাতে বিপদ বাড়ছে মুসলিমদের। কোন মুসলিম দেশ ভেঁঙ্গে যাওয়ায় খুশি হওয়াটি বেঈমানীর লংক্ষণ। মনে কষ্ট পাওয়াটি ঈমানের লক্ষণ। বেঈমানীর কারণেই মুসলিম বিশ্ব আজ বিভক্ত।এবং সে বিভক্তি নিয়ে বিজয় উৎসব হয়।
৫.
কারো বেঈমানীই কখনোই গোপন থাকেনা। সেটি ধরা পড়ে যেমন তার নিজের দুর্বৃত্তির মাঝে তেমনি চোর-ডাকাত-দুর্বৃত্তদের সরকারের প্রতি সমর্থণ করা থেকে। এরূ বেঈমানেরাই মুসলিমদেশগুলোতে ইসলামের পরাজয় বাড়িয়েছে। এরা ইসলামের বিজয় রুখতে অস্ত্র হাতে রাস্তায় নামে।
৬.
কে কতটা দৈহিক বল নিয়ে বাঁচলো মহান আল্লাহর দরবারে সে হিসাব হয় না। কারণ, সে বলটি দেন মহান মহান আল্লাহতায়ালা। তিনি অন্ধ বা পঙ্গু করেও জন্ম দিতে পারতেন। হিসাব হয় কে কতটা নৈতীক বল নিয়ে বাঁচলো সেটি। নৈতীক বলের মাঝেই ঈমানদারি। এর মাঝেই ধরা পড়ে ব্যক্তির নিজের অর্জন। এবং সেটি না থাকার মাঝ বেঈমানী।
৭.
চোর-ডাকাতেরা ক্ষমতায় গেলে তাদের মূল লক্ষ্য হয়, চুরি-ডাকাতিকে সহজ করা। যাতে মাঠ-ঘাট পাড়ি দিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের চুরি ডাকাতি করতে না হয়। বাংলাদেশে সে চুরি-ডাকাতিকে সহজ করার পদ্ধতিটি হলো লোনের নামে চোর-ডাকাতদের হাতে ব্যাংকের টাকা তুলে দেয়া। ডাকাতদের মাঝে অর্থ বিতরণ হয় সরকারি প্রকল্পের নামে বাংলাদেশে তাই হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতদের হাতে লুণ্ঠিত হয়ে গেছে।
৮.
শারিরীক বলে মানুষ নিজ পায়ে দাঁড়ানোর বল পায়। নৈতীক বলে শক্তি আসে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে খাড়া হওয়ার।চোর-ডাকাতেরা ক্ষমতায় গেলে তাই হত্যা করে জনগণের নৈতীক বলকে।ফলে দেশে জোয়ার আসে দুর্বৃত্তদের। তাদের উন্নয়নকে তারা দেশের উন্নয়ন বলে।
৯.
বাঁচা এবং মরাটি একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে খুশি করার লক্ষ্যে হলেই পরকালে জান্নাত জুটে। শয়তান সেটি হতে দিতে রাজি নয়। সে পথটি রুখে দেয়ায় শয়তানের মূল এজেন্ডা। এক্ষেত্রে শয়তানের বিজয়টি বিশাল। শয়তান প্ররোচিত করে দল, গোত্র, ভাষা, বর্ণ ও জাতীয়তার নামে প্রাণ দানে। সে লক্ষ্যে নানারূপ যুদ্ধের আয়োজনও বাড়ায়। ফলে এরূপ নানা যুদ্ধে লাখ লাখ মুসলিম মরলেও তাদের মাঝে আল্লাহর রাস্তায় জান দেয়ার আয়োজনটি বিরল। ফলে বাড়ছে ইসলামের পরাজয়।
১০.
স্বৈরশাসকের কাছে গুরুত্ব পায় নিজের ও নিজদলের শাসন এবং গুরুত্ব হারায় জনগণের মতামত। ভোটচুরি এবং ভোট ডাকাতিও তখন জনগণকে ধোঁকা দেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়।বাংলাদেশ তারই নমুনা।
১১.
সফল ডাকাতির পর ডাকাতের মুখে থাকে অট্টহাসি এবং লুন্ঠিত গৃহস্থের মুখে থাকে আহাজারি।ভোটডাকাতির পর ভোটডাকাতও তেমনি লুন্ঠিত জনগণের সামনে প্রতিদিন অট্টহাসি দেয় এবং আয়োজন করে আনন্দ উৎসবের।
১২.
দেহ বাঁচাতে নিয়মিত পানাহার জরুরী। তেমনি ঈমান বাঁচাতে জরুরী কোরআনের জ্ঞান।এজন্যই নামায-রোযার আগে কোরআনের জ্ঞান ফরজ করেছেন। কোর’আন না বুঝে পডলে জ্ঞানার্জনের সে কাজটি হয়না।
১৩.
যে বাগানের গাছগুলো শুধু আলো-বাতাস ও সার নেয়, ফল দেয় না -সে বাগান উৎপাদনশূণ্য। সে অবস্থাটি মুসলিমদেরও। মুসলিমদের শুধু সংখ্যাই বেড়ে চলেছে কিন্তু বিজয় বাড়ছে না।
১৪.
মানবসৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য তারা প্রতি মুহুর্ত ইবাদত করবে আল্লাহর, বিনিময়ে পাবে জান্নাত। ইবাদতের অর্থ, মহান আল্লাহর প্রতি হুকুমের গোলামী। সে গোলামী হতে হবে এ জীবনের প্রতি অঙ্গণে এবং বাঁচার প্রতি পদে। রাজনীতি, বিচার, শি্ক্ষা-সংস্কৃতি এবং প্রশাসনও সে ইবাদতের অঙ্গণ।যাদের কাছে ইবাদতের অর্থ শুধু নামায়-রোযা, হজ্ব-যাকাত -তাদের জীবনের বাঁকি সময়টুকু ইবাদত-মুক্ত। তাদের অজ্ঞতাটি মূলতঃ ইবাদতের অর্থ বুঝা নিয়ে। ফলে তাদের কাছে সেক্যুলার রাজনীতি, সূদ, ঘুষ, মিথ্যাচার, চুরি, ভোটডাকাতি এবং বেপর্দাগীও অপরাধ গণ্য হয় না।
১৫.
কোন ডাকাত যদি বলে সে সমাজ থেকে অপরাধ দুর করবে -এর চেয়ে বড় মশকরা বা কৌতুক আর কি হতে পারে? বাংলাদেশের ইতিহাসে তাই বড় কৌতুক হলো, ভোট ডাকাত হাসিনার সরকারও নাকি দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করবে।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- মুসলিম দেশগুলিতে সেক্যুলারিস্টদের দখলদারি ও নাশকতা
- আবারো ডাকাতি হয়ে যাবে জনগণের ভোট
- সেক্যুলারিস্টদের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ এবং যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে
- বাংলাদেশে হিফাজতে ইসলাম ও ইসলামের হিফাজতে ভয়ানক ব্যর্থতা
- তাবলীগ জামায়াত কতটা দূরে সরেছে ইসলাম থেকে?
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Mohammad Arifur Rahman on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- সিরাজুল ইসলাম on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- Abdul Aziz on বিবিধ ভাবনা ৮২
- Fazlul Aziz on বাঙালি ও অবাঙালি মুসলিমের বৈষম্য এবং ফ্যাসিবাদী মিথ্যচার
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের তান্ডব: মুক্তি কীরূপে?
ARCHIVES
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018