দেশ নিয়ে ভাবনা -৪
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on November 8, 2019
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
১.
মেহনতি মানুষ বিদেশে গিয়ে কষ্ট করে দেশে টাকা পাঠায়। তাদের অর্জিত সে বিদেশী মুদ্রা ক্ষমতাসীন ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করে বিদেশে নিয়ে যায়। বিদেশে তারা বাড়ি কেনে, ব্যবসা করে, জুয়া খেলে। এবং হাসিনার ছেলে জয় ফুর্তি করে আমেরিকাতে।
২.
ঘরে আবর্জনা জমলে সে আবর্জনা সরানোর কাজটি ঘরের সবার। সেটিই সভ্য পরিবারের রীতি।তেমনি দেশ চোর-ডাকাতের দখলে গেলে সে চোর-ডাকাত খেদানোর কাজও সবার।সে কাজে যার ইচ্ছা নেই সে অসভ্য। অথচ বাংলাদেশে সে কাজটি হয়নি। দেশে কি স্রেফ মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে কি এ অসভ্যতা থেকে বাঁচা যায়? নবীজী (সাঃ) শুধু মসজিদ বানাননি, ইসলামি রাষ্ট্রও গড়েছেন। সে কাজে শতকরা ৭০ ভাগের বেশী শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশের মুসলিমদের সে কাজে আগ্রহ কই?
৩.
বাংলাদেশ কি গণতান্ত্রিক দেশ? গণতান্ত্রিক দেশে তো ভোটে সরকার নির্বাচিত হয়। নিশীথ রাতের ভোট ডাকাতগণ ক্ষমতায় আসে কি করে? প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশে কথা বলা, মিটিং-মিছিল করার স্বাধীনতা থাকে। পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব শত শত মিছিল-মিটিং করেছে। বাংলাদেশে সে অধীকার ছিনিয়ে নেয়ার পরও সরকার বলে তারা নাকি গণতান্ত্রিক! এ সরকারের মুখে পাকিস্তানের বদনাম করা সাজে কি?
৪.
যিকির মানে প্রতি পদে মহান আল্লাহতায়ালার প্রতিটি হুকুম মেনে চলার ফিকির। যিকিরে থাকে শরিয়ত মেনে চলার ফিকির। যেদেশে শরিয়তের আইন ছাড়াই বিচার হয়, বুঝতে হবে আল্লাহতায়ালার আনুগত্য নিয়ে তাদের কোন ফিকির নাই। এদের যিকির যে নিতান্তই ভূয়া –তা নিয়ে কি সামান্যতম সন্দেহ থাকে?
৫.
ঈমানদার হওয়া মানেই হলো মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীনকে বিজয়ে করার জিহাদে মুজাহিদ হওয়া। নবীজী (সাঃ)র সাহাবাদের শতকরা শতভাগ সাহাবাই মুজাহিদ ছিলেন। যারা জিহাদের নামেননি তাদেরকে মুনাফিক বলা হয়েছে। যারা জিহাদ বিমুখ ইসলামে তাদের কোন স্থান নেই। বাংলাদেশে ১০০ জনের মাঝে যদি একজনও যদি নবীজী (সাঃ)র ইসলাম বুঝতো তবে ১৭ কোটির মাঝে ১৭ লাখ মুজাহিদ তৈরী হতো । তখন কি দেশ হাসিনার ন্যায় নিশীথ রাতের ভোট ডাকাতের হাতে অধিকৃত হতো? তখন বরং শরিয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ শুরু হয়ে যেত।
৬.
ঈমান ছাড়া আল্লাহতায়ালার দরবারে ভাল কাজের কোন মূল্য নাই। শত কোটি টাকা দান করলেও নয়। ভাল কাজ ছাড়া ঈমানও মূল্যহীন। কারণ উত্তাপ ছা্ড়া যেমন আগুণ হয় না, ভাল কাজ ছাড়া তেমনি ঈমান হয় না। মহান আল্লাহতায়ালা এ দুটিকে এক সাথে দেখতে চান। আল্লাহতায়ালার কাছে সবচেয়ে বড় ভাল কাজ হলো ইসলামের শত্রু নির্মূলের জিহাদ –যা সুরা সাফ’য়ের ৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। ইসলামের শত্রুগণ জিহাদকে সন্ত্রাস বলে স্রেফ মুসলিমদের জিহাদ বিমুখ করার স্বার্থে। ব্রিটিশেরা সে প্রচার নিয়েই বাংলার মুসলিমদের জিহাদ থেকে দূরে রেখেছে এবং ১৯০ বছর শাসন করেছে। আজকের শত্রুগণও সেটিই চায়।
৭.
অসভ্যদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সামর্থ্য না থাকলে অসম্ভব হয় সভ্য ভাবে বাঁচা।তাই সভ্য সমাজ গড়তে দেশ থেকে শুধু হিংস্র পশু তাড়ালে চলে না, মানবরূপী পশুদেরও তাড়াতে হয়।এটিই ইসলামের পবিত্র জিহাদ। নইলে আবরার ফাহাদের ন্যায় মানবরূপী পশুদের হাতে লাশ হতে হয়।অথচ বাংলাদেশে সে কাজটি হয়নি।
৮.
দেশে জ্ঞানদান ও জ্ঞানলাভের আয়োজন কতটা পবিত্র, নিবিড় এবং ব্যাপক -তা দেখেই বুঝা যায় দেশ ভবিষ্যতে কতটা সভ্য ভাবে বেড়ে উঠবে। এখাতটি দুর্বত্তদের দখলে গেলে দেশও অসভ্য ডাকাতদের দখলে যায়। বাংলাদেশ হলো তারই উদাহরণ।
৯.
চোর-ডাকাতকে কি কোন সভ্য ও ভদ্র মানুষ সন্মান করে? তাদের সন্মান করা তো অসভ্য চোর-ডাকাতদের কাজ। অথচ বাংলাদেশে ডাকাতদলের ভোট-ডাকাত সর্দারনীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে সন্মান করা হয়। দেশের কওমী হুজুররা তাকে কওমী জননী বলে। অথচ ইসলামের হুকুম হলো, এরূপ দুর্বৃত্তদের শুধু ঘৃনা নয়, নির্মূল করা। হুকুম হলো তাদের শাস্তি দেয়ার। সে অদম্য চেষ্টাটুকু না থাকলে বুঝতে হবে ঈমানদার হওয়াতে অনেক বাঁকি রয়ে গেছে।
১০.
সুরা ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে বিশ্বমাঝে মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি বলা হয়েছে। তবে এজন্য নয় যে, তারা বেশী বেশী নামায-রোযা করে। উক্ত আয়াতে যে কারণে তাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে তা হলো, তারা দুর্বৃত্তিকে নির্মূল করে এবং ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা দেয়। ফলে চোর-ডাকাত ও ভোট-ডাকাতদের পক্ষ নিলে কি সে মর্যাদা কখনো অর্জিত হয়?
১১.
যারা কোর’আন থেকে শিক্ষা নেয় এবং অন্যদের শিক্ষা নিতে সাহায্য করে -তাঁরাই হলো শ্রেষ্ঠ মানব।–নবীজী (সাঃ)র হাদীস। কথা হলো, বাংলাদেশে এমন মানুষের সংখ্যা শতকরা ক’জন? কোর’আন ঠিক মত বুঝলে তো দেশে শরিয়তের প্রতিষ্ঠা ও ডাকাত নির্মূলের লক্ষ্যে লাগাতর জিহাদ শুরু হতো।
১২.
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না”-(সুরা মুমতেহানা আয়াত ১)। অথচ বাংলাদেশে মহান আল্লাহতায়ালার এ কোর’আনী হুকুমের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিদ্রোহ হচ্ছে। ভারতীয় সরকার আল্লাহ ও মুসলিমদের দুষমন। কাশ্মিরে তারা ধর্ষণ ও গণহত্যায় লিপ্ত। ভারতের বিভিন্ন স্থানে তারা যেমন মুসলিমদের হত্যা করছে, তেমনি মসজিদ ধ্বংস করছে। মসজিদের জমিতে তারা মন্দির বানাচ্ছে। এরপরও তাদের সাথে কি বন্ধুত্ব করা যায়? সেটি তো হারাম। আল্লাহতায়ালার হুকুমের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী একমাত্র তারাই এমনটি করতে পারে? তাই শুধু ভারত নয়, ভারতের সেবাদাস হাসিনাও মুসলিমদের শত্রু।
১৩.
শেখ হাসিনা ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিয়ে গর্বিতা। কিন্তু বন্ধুত্ব তো তখনই সম্ভব যখন বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনাগুলি ভারত দিয়ে দেয়। অথচ ভারত শুধু নেয়াতে আগ্রহী, দেয়াতে নয়। এমন কি ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশী বলে বাংলাদেশে পাঠাতে চায়। ফলে হাসিনা যা প্রতিষ্ঠা দিয়েছে তা বন্ধুত্ব নয়, তা বরং নিরেট গোলামী।
১৪.
আদম (আ:)কে সিজদা করার একটি মাত্র হুকুম অমান্য করায় ইবলিস অভিশপ্ত শয়তানে পরিণত হয়।যারা শরিয়তের অসংখ্য হুকুম অমান্য করে দেশ ও দেশের আদালত চালায় -তারা যে ইবলিসের চেয়েও অধীক অভিশপ্ত তা নিয়ে কি সন্দেহ করা চলে। অথচ বাংলাদেশ সে অভিশপ্ত শয়তানের দলের হাতেই অধিকৃত। বাংলাদেশে গুম, খুন, চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষনের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে মানবরূপী এ শয়তানেরাই।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- কাশ্মীরের জিহাদ এবং ভারতের আসন্ন পরাজয়
- বিবিধ ভাবনা (১৬)
- ইরানে প্রথম দিনের স্মৃতি
- বাংলাদেশে অপরাধীদের শাসন এবং ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
- হিযবুল্লাহ ও হিযবুশ শায়তান
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
MOST READ ARTICLES
- বিবিধ প্রসঙ্গ-৫
- Political, religious & demographic dynamics in South Asia & threatened co-existence of people with pluralities
- My COVID Experience
- The Hindutva Fascists & the Road towards Disintegration of India
- দিল্লিতে সরকারি উদ্যোগে মুসলিম গণহত্যা