রাজনীতিতে মুসলিম এজেন্ডা এবং হিন্দু এজেন্ডা

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 

বাংলাদেশের রাজনীতি সঠিক ভারে বুঝতে হলে অবশ্যই বুঝতে হবে দেশটি নিয়ে মুসলিম এজেন্ডা ও হিন্দু এজেন্ডা – এ দুটি এজেন্ডাকে। মুসলিমের এজেন্ডা শুধু প্রাণে বাঁচা নয়, বরং মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট একটি ভিশন, মিশন ও তাড়না (passion) নিয়ে বাঁচা। তাই মুসলিমগণ শুধু গৃহ, কৃষিক্ষেত, বাগ-বাগিচা, শিল্প ও মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে না, বরং ইসলামী রাষ্ট্র এবং সভ্যতাও গড়ে তোলে -যেমনটি গড়েছিলেন নবীজী (সা:) ও তার সাহাবাগণ। মুসলিমগণ রাষ্ট্র গড়ে ভাষা, বর্ণ, ফেরকা, মজহাব ও অঞ্চল ভিত্তিক পরিচয়ের উর্দ্ধে উঠে। ভারতীয় মুসলিমগণ তাই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গড়েছিল। তাই মুসলিমের বাঁচাটি শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত নিয়ে বাঁচা নয়, জিহাদ নিয়ে বাঁচাও। তার ইবাদতের শ্রেষ্ঠত্ব তো এই জিহাদের মধ্যে। যার বাঁচার মধ্যে সে ইসলামী মিশন, ভিশন ও তাড়না নাই -সে ব্যক্তি নামাজী,রোজাদার ও হাজী হতে পারে, কিন্তু প্রৃকত ঈমানদার নয়।      

সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে বাঁচে হিন্দুগণও। ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসকদের মূল এজেন্ডা হলো দক্ষিন এশিয়ার বুকে মুসলিম শক্তির বিনাশ এবং অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রের নির্মাণ। এ লক্ষেই তারা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করেছিল। পাকিস্তান যখন প্রতিষ্ঠা পায় তখন ভারত সে দেশটিকে মন থেকে মেনে নেয়নি, ফলে দেশটি বেঁচে থাকুক -সেটি ভারত কখনোই চায়নি। কারণ পাকিস্তানের অস্তিত্বকে মেনে নেয়াটি ছিল তাদের অখণ্ড ভারত নির্মাণের এজেন্ডার পুরোপুরি বিরোধী। তাই ১৯৪৭’য়ে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা থেকেই ভারতের লক্ষ্য ছিল দেশটিকে ভেঙ্গে ফেলা; এবং এবং ১৯৭১ সালে তারা সে লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়।  

তবে পাকিস্তান ভাঙ্গার সে কাজে ভারত একা ছিল না; সহযোগী রূপে পায় ইসলাম বিরোধী বাঙালি জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্ট, সেক্যুলারিস্ট ও বামধারার রাজনৈতিক দলগুলিকে। এরা আজও বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের অনুগত শক্তি। ১৯৭১’য়ের যুদ্ধে পাকিস্তান ভাঙ্গতে সফল হলেও মুসলিম শক্তির বিনাশের কাজটি ভারত শেষ করতে পারিনি। অপর দিকে অখণ্ড ভারত নির্মাণের কাজও সেদিন সফল হয়নি। তাই হিন্দু এজেন্ডা নিয়ে রাজনীতিও শেষ হয়নি। হিন্দু এজেন্ডাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ভারতের এজেন্ডা হলো উপমহাদেশে মুসলিম শক্তির বিনাশ। সে লক্ষ্য অর্জনে ভারত যেমন তার নিজ দেশের প্রায় ২৫ কোটি মুসলিমের কোমর ভাঙ্গছে, তেমনি জরুরি ভাবছে, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকেও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। ভারত তাই বসে নাই।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের  নাশকতার শুরু ১৯৭১’য়ে দেশটির প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকেই। সে নাশকতার অংশ রূপেই ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের ফেলে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার যুদ্ধাস্ত্র, সামরিক যান, সমুদ্রগামী জাহাজ, রেলওয়ের বগি নিজ দেশে নিয়ে যায়। কারণ সে যুদ্ধাস্ত্রগুলি বাংলাদেশে থাকলে দেশটি সামরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হতো। ভারত সেটি চায়নি। পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে ৬০টির বেশী বস্ত্রকল, ৬০টির বেশী পাটকল, চট্টগ্রামে স্টীল মিল, কাগজের কল এবং গাজীপুরে একটি অস্ত্র কারখানা নির্মিত হয়েছিল। ভারত ব্যাপক লুটপাট করেছে পাকিস্তান আমলে গড়া সবগুলি শিল্প কারখানাতেই। সে লুণ্ঠনের কারণ, ভারতের কাছে অসহ্য ছিল শক্তিশালী বাংলাদেশ। তাই শুরু থেকেই ভারতের লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ভাবে যেমন পঙ্গু করা, তেমনি সামরিক ভাবে । ভারত চাইতো বাংলাদেশে বড় জোর মুজিবের ন্যায় ভারতসেবী সরকারকে প্রহরা দেয়ার জন্য একটি রক্ষিবাহিনী থাকতে পারে, কিন্তু কখনোই শক্তিশালী কোন সেনাবাহিনী নয়।     

ভারতীয় হিন্দুদের চেতনায় রয়েছে প্রচণ্ড মুসলিম ভীতি। ইন্দোনেশিয়ার পর সবচেয়ে বেশী মুসলিমের বাস ভারতে। হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণের পথে মুসলিমদেরকেই তারা সবচেয়ে বড় বাধা মনে করে। সে প্রচণ্ড মুসলিম ভীতির কারণে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীগণ প্রতিটি মুসলিমকে শত্রু মনে করে এবং তাদের সার্বক্ষণিক যুদ্ধটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। কোথাও কোন হিন্দু বোমা হামলাতে নিহত হলে ভারতীয় নেতাগণ হিস্টিরিয়া রোগীর ন্যায় উদ্ভট আচরণ শুরু করে। ০৭/০৫/২০২৫ তারিখে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৯টি স্থানে ড্রোন দিয়ে হামলা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারত সে হামলা করেছে দুই সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের পাহালগামে এক বোমা হামলায় ২৬জন হিন্দু হত্যার প্রতিশোধ নিতে। ভারত দাবী করেছে ২৬ জন হিন্দু হত্যার সাথে পাকিস্তান জড়িত। পাকিস্তান তার প্রমাণ চেয়েছে। কিন্তু ভারত প্রমাণ দেয়নি। উল্লেখ্য যে, কাশ্মীরে চলছে স্বাধীনতা যুদ্ধ; শুধু   ভারতীয় সৈন্যদের উপর নয়, হামলা হচ্ছে ভারতের অন্য প্রদেশ থেকে কাশ্মীরে আগত ভারতীয় হিন্দুদের উপরও। সীমান্ত থেকে কয়েক শত মাইল গভীরে সংঘটিত হত্যার সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে জড়িত করা থেকে ভারতের পাকিস্তান ভীতি বুঝা যায়। একই ভাবে ভারতের পূর্বাংশে বিশেষ করে পশ্চিম বাংলার কোথাও বোমা হামলা হলে বাংলাদেশীদের অভিযুক্ত করা হয়।   

ভারতীয় হিন্দুদের দুশ্চিন্তার কারণ, মুসলিম জনসংখ্যা বিশাল হওয়ায় তাদের হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণের আশাটি সহজে পূরণ হচ্ছে না। কারণ, তারা চাইলেও দেশটির প্রায় ২৫ কোটি মুসলিমকে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। সেটি অসম্ভব জেনে হিন্দুত্ববাদী বিজিপি সরকার স্ট্রাটেজি নিয়েছে শিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতির অঙ্গণে মুসলিমদের পঙ্গু করে রাখা। এবং মসজিদ-মাদ্রাসা ভেঙ্গে ও মুসলিম বস্তিতে বুলডোজার চালিয়ে তাদেরকে সব সময় ভয়ের মধ্যে রাখা। একাজটি বিজিপি শাসিত উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ ও রাজধানী দিল্লিতে চলছে। পরিকল্পিত ভাবে ভারতীয় মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। শাসক দলে একজন মুসলিম এমপি নাই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় একজন  মুসলিম মন্ত্রীও নাই। জনসংখ্যার শতকরা ১৫ ভাগ মুসলিম হলে কি হবে সরকারি চাকুরীতে শতকরা ৩ ভাগও মুসলিম নাই। সরকারি চাকুরিতে মুসলিমদের বঞ্চিত রাখাই হলো ভারতের সরকারি নীতি।

ভারতের বাংলাদেশ নীতি বুঝতে হলে তাদের অভ্যন্তরীণ হিন্দু এজেন্ডার রাজনীতিকে অবশ্যই বুঝতে হবে।   ভারত শুধু নিজ দেশের মুসলিমদেরই নয়, প্রতিবেশী পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দেশের মুসলিমদেরও হিন্দুত্ববাদীরা শত্রু মনে করে। সে মুসলিম ভীতি নিয়েই শুধু পাকিস্তানের নয়, বাংলাদেশের মুসলিমদেরও কোমর ভাঙ্গতে চায়। ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যুদ্ধটি এখন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ -এ উভয় মুসলিম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই। একাজে ভারতকে সহায়তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের রাজনীতি, মিডিয়া এবং সামরিক ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে অসংখ্য ভারতীয় এজেন্ট। ১৯৭১’য়ে বাংলাদেশের জন্ম থেকেই ভারতের এজন্ডা পূরণে পূর্ণ সাহায্য দিয়ে আসছে শেখ মুজিব; এবং মুজিবের পর শেখ হাসিনা। মুজিব ও হাসিনা -উভয়েই তাদের অনুসারীদের গড়ে তোলে ভারতীয় স্বার্থের পাহারাদার রূপে। ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলাটাই তাদের কাছে ছিল অপরাধ। বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের ন্যায় দেশপ্রেমিক ছাত্রকে হত্যা করেছিল তো তারাই। কারণ, ইসলামপ্রেম ও দেশপ্রেম -এরূপ চেতনা ধারণ করাই এসব ভারতসেবীদের কাছে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি ও সামর্থ্য জুগায় দেশবাসীর সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বল। তাই স্বাধীনতা বাঁচাতে হলে অবশ্যই জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটাতে হয়। অপর দিকে কোন দেশকে দখলে রাখতে হলে শত্রুর স্ট্রাটেজী হয় উল্টোটি। সেটি হলো জনগণের ক্ষমতায়নের সকল পথকে বন্ধ করে দেয়া। জনগণের ক্ষমতায়ান ঘটায় তো উচ্চতর শিক্ষা, জীবন দর্শন, অর্থনীতি ও মৌলিক মানবাধিকার।  তাই শত্রুশক্তির কৌশল হলো, জনগণকে অশিক্ষিত রাখা। তাদের ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করা ও তাদের মৌলিক মানবিক অধিকার কেড়ে নেয়া এবং সে সাথে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে সংগঠিত হওয়ার সকল পথ বন্ধ করা। এবং প্রয়োজনে জেল-জুলুম ও গুম-খুনের পথ বেছে নেয়া। জনগণ তখন জ্ঞানশূণ্য, ভাবনাশূণ্য ও প্রতিরোধশূণ্য হয়। ক্ষমতাহীন জনগণ তখন শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। স্বৈরশাসনের এটিই তো সবচেয়ে বড় নাশকতা। এজন্যই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো ভারত। তাই ভারতের নীতি ছিল মুজিব, এরশাদ ও হাসিনার ন্যায় স্বৈরশাসকদের শাসনকে সমর্থন করা ও দীর্ঘজীবী করা।

ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকগণ বাঙালি মুসলিমদের পরিকল্পিত ভাবে অশিক্ষিত রেখেছিল। ধ্বংস করেছিল তাদের অর্থনীতি। মুসলিম শাসনামলে বাংলাদেশের প্রায় সিকি ভাগ জমি মসজিদ-মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ ছিল। মাদ্রাসাগুলি ধ্বংস করার লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার সে জমি কেড়ে নিয়ে হিন্দু জমিদারদের হাতে তুলে দেয়। অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করার লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার মুসলিমদের প্রশিদ্ধ মসলিন,মখমল ও রেশম শিল্পকে ধ্বংস করে। তারা তাঁতীদের আঙ্গুলও কেটেছে। এভাবে দেশী পণ্য ধ্বংস করে প্রতিষ্ঠা দেয় ব্রিটিশ পণ্যের বাজার। ১৯৭১’য়ের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সামরিক অধিকৃতির পর একই রূপ ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ  নীতি ছিল দখলদার ভারতের। তারা ধ্বংস করে পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পকে। পাকিস্তান আমলে পাটজাত দ্রব্যে পূর্ব পাকিস্তান বিশ্বে প্রথম ছিল। কিন্তু মুজিবের আমলে সে স্থানটি ভারত দখলে নেয়। সে পাট শিল্পকে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে। ব্রিটিশ আমলে বাংলা ছিল ব্রিটিশ পণ্যের বাজার; আর ১৯৭১’য়ের পর পরিণত হয় ভারতীয় পণ্যের একচ্ছত্র বাজারে।  মুজিবের আমলে তাই অর্থনৈতিক ধ্বস নেমে আসে এবং ধেয়ে আসে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ -যাতে প্রাণ হারায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ।  

মুজিব আমলের ন্যায় হাসিনার আমলেও বাংলাদেশ আর স্বাধীন থাকেনি; পরিণত হয়েছিল ভারতের অধিকৃত উপনিবেশে। ভারত যা চেয়েছে বাংলাদেশ থেকে তাই আদায় করে নিয়েছে। দখলে নিয়েছে ভারতীয় পণ্যের জন্য ১৪ বিলিয়ন ডলারের বাজার, নিয়েছে তিস্তার পানি, নিয়েছে করিডোর ও বন্দরের সুবিধা। কারা বাংলাদেশ শাসন করবে -সে সিদ্ধান্তটিও দিল্লির শাসনগোষ্ঠি নিজ হাতে নিয়ে নেয়। কবরে পাঠানো হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে। প্রতিষ্ঠা দেয়া হাসিনার একদলীয় ফ্যাসিবাদকে। কারণ ভারত জানে, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে জীবিত রাখলে বিলুপ্ত হবে ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্য, বাংলাদেশ তখন ভারতের চ্যালেঞ্জ রূপে খাড়া হবে। ২০২৪’য়ের আগস্ট বিপ্লবে হাসিনার পলায়নের পর ভারতের বাংলাদেশ ভীতি  বহুগুণ বেড়েছে। কারণ ভারত জানে পারশ্য সাম্রাজ্য ও রোমান সাম্রাজ্যের ন্যায় দুটি বিশ্ব শক্তিকে পরাজিত করেছিল মদিনায় গড়ে উঠা ক্ষুদ্র ইসলামী রাষ্ট্র। ভারত  পারশ্য সাম্রাজ্য ও রোমান সাম্রাজ্যের চেয়ে বিশাল নয়, বাংলাদেশও মদিনার ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের চেয়ে ক্ষুদ্রতর নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *