ইসলামী রাষ্ট্র: সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমলের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 সর্বশ্রেষ্ঠ নেক-আমল ও সর্বনিকৃষ্ট গুনাহ

প্রশ্ন হলো, এ জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমল কোনটি? এবং সর্বশ্রেষ্ঠ সে নেক আমলের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ারই বা কোনটি?‍ এ দুটি প্রশ্ন মানব জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এ প্রশ্ন দুটির সঠিক উত্তর জানা থাকলে এ জীবনে সফল হওয়ার কাজটি সহজ হয়ে যায়। তখন বাঁচা যায় ভয়ানক ব্যর্থতা ও বিপর্যয় থেকে। বস্তুত মানব জীবনে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার শুরুটি এ বিষয়ে অজ্ঞতা থেকে।  তখন ভয়ানক গুনাহও নেক কর্ম মনে হয় এবং বহু মানুষ সে গুনাহর কাজে অর্থ, শ্রম, মেধা -এমনকি প্রাণও বিলিয়ে দেয়। সে গুনাহর কাজটি হতে পারে যুদ্ধ, গণহত্যা, বর্ণগত ও জাতিগত নির্মূল। মানব ইতিহাসে কোটি কোটি মানুষের প্রাণনাশ এবং লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকার সম্পদনাশ হয়েছে সেসব গুনাহর কাজে। এভাবেই মানুষের খরচের অংক বেড়েছে এবং এ পার্থিব জীবনে ও আখেরাতের জন্য আযাব ডেকে এনেছে। সে ভয়ানক বিপদ থেকে বাঁচাতে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি পবিত্র কুর’আনে বার বার আলোচিত হয়েছে -যাতে মানুষ এ নিয়ে কোনরূপ ভূল না করে।

জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচায় এবং জান্নাতে নেয় ব্যক্তির ঈমান ও নেক আমল। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুর’আনে মহান আল্লাহতায়ালা পক্ষ থেকে যে ঘোষণাটি বার বার এসেছে তা হলো, যারা ঈমান আনলো এবং নেক আমল করলো তাদের সকল গুনাহকে তিনি মাফ করে দিবেন এবং তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন জান্নাত দিয়ে। যেমন সুরা আনকাবুতের ৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:

 وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَنُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَحْسَنَ ٱلَّذِى كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ  

অর্থ: “এবং যারা ঈমান আনলো এবং নেক আমল করলো, তাদের মন্দ কর্মগুলিকে বিলুপ্ত করে দিব এবং অবশ্যই তাদের উত্তম কর্মের প্রতিদান দিব‍।”  সুরা তাগাবুনের ৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:

وَمَن يُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعْمَلْ صَـٰلِحًۭا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّـَٔاتِهِۦ وَيُدْخِلْهُ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ خَـٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًۭا ۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ

অর্থ: “এবং যারা ঈমান আনে আল্লাহর উপর এবং নেক আমল করে, তাদের মন্দ কর্মগুলিকে মিটিয়ে দেয়া হবে এবং প্রবেশ করানো হবে জান্নাতে -যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদী; সেখানে তারা চিরকাল থাকবে,এটিই হলো বিশাল বিজয়।”

প্রশ্ন হলো, নেক আমল বলতে আমরা কি বুঝি? সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমলই বা কোনটি? এবং সবচেয়ে বড় গুনাহই বা কোনটি? প্রতিটি মানব সন্তানকে কি ভাবে পানাহারে বাঁচতে হয় – শুধু সেটুকু জানলে চলে না। তাকে অবশ্যই জানতে হয়, কোন এজেন্ডা বা লক্ষ্য নিয়ে সে বাঁচবে? আরো জানতে হয়, কিরূপে সে বেশী বেশী নেক আমল করবে এবং বাঁচবে গুনাহ থেকে। এগুলিই হলো মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ। সে পাঠগুলি দিতেই যুগে যুগে নবী-রাসূলদের আগমণ ঘটেছিল। নেক আমল মূলত তাই যার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের আনুগত্য হয়, বিজয়ী হয় তাঁর এজেন্ডা এবং নির্মূল হয় মিথ্যা, দুর্বৃত্তি ও অবিচার। এবং গুনাহ বা পাপকর্ম বলতে বুঝায় সেসব কর্ম যা মিথ্যা, দুর্বৃত্তি, অবিচার ও অপরাধের প্রতিষ্ঠা দেয়। সর্বনিকৃষ্ট গুনাহ হলো, ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণে বাধা দেয়া এবং এমন এক রাষ্ট্রের নির্মাণ যা মিথ্যা ধর্ম, মিথ্যা মতবাদ, জুলুম, স্বৈরাচার ও অবিচারকে প্রতিষ্ঠা দেয়।   

সব নেক আমলের কল্যাণকারীতা এক নয়। সে বিচারে নেক আমলেরও শ্রেণীভেদ আছে। কাউকে দেখে সালাম দেয়া, মুচকি হাসি দেয়া এবং রাস্তা থেকে কাঁটাকে সরিয়ে ফেলাও নেক আমল। কিন্তু সে নেক আমলগুলি কখনোই কোন দুর্বৃত্ত জালেম শাসকে সরিয়ে ফেলার সমকক্ষ হতে পারে না। কারণ, পথের কাঁটা কতটুকুই বা ক্ষতি করতে পার? কিন্তু দুর্বৃত্ত জালেম শাসক সমগ্র রাষ্ট্রীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি মানুষকে দুর্বৃত্ত করে, তাদের জীবনে দুর্বৃত্তির প্লাবন আনে এবং তাদেরকে জাহান্নামে নেয়। এভাবেই শয়তানের খলিফাগণ রাষ্ট্রকে জাহান্নামের বাহনে পরিণত করে। তাই কোন দুর্বৃত্ত জালেম শাসকদের নির্মূলের অর্থ শয়তানের বিশাল প্রজেক্টকে ব্যর্থ করে দেয়া। তখন সে রাষ্ট্রের কোটি কোটি নাগরিককে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর কাজটি সহজ হয়ে যায়।  ফলে এমন নেক আমলের কল্যাণটি যেমন বিশাল, প্রতিদানও তেমনি বিশাল।

ক্ষুধা, অর্থাভাব ও গৃহহীন অবস্থা থেকে মানুষকে বাঁচানো অতি উত্তম নেক আমল। কিন্তু সে নেক আমল কখনোই কাউকে জান্নামের আগুন থেকে বাঁচনোর সমকক্ষ হতে পারে না। ক্ষুধা, অর্থাভাব ও গৃহহীনতা থেকে বাঁচাতে অর্থ, শ্রম ও মেধার খরচ আছে। কিন্তু সে কাজে রক্তব্যয় হয়না -অর্থাৎ জিহাদে নেমে শহীদ হতে হয়না। কিন্তু শয়তানের খলিফাগণ জনগণকে জাহান্নামে নিতে যেরূপ বিশাল বিশাল রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো নির্মূল করে -সেগুলির নির্মূলে জিহাদ তো অনিবার্য। এমন জিহাদে অর্থ, শ্রম ও মেধার কুর’বানীর সাথে রক্তেরও কুর’বানীও আছে। এমন জিহাদই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমল। এ নেক আমলের শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণিত হয়েছে সুরা তাওবাব নম্বর ১৯ ও ২০ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে:

ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَهَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ ٱللَّهِ ۚ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَآئِزُونَ ٢٠

অর্থ: “যারা ঈমান আনে, হিজরত করে, এবং নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে আল্লাহর রাস্তায়, আল্লাহর কাছে তারাই হলো উচ্চ মর্যাদার অধিকারী। তারাই হলো সফলকাম।”

জিহাদের লক্ষ্য, রাষ্ট্রের নামে নির্মিত শয়তানী প্রজেক্টের নির্মূল এবং সেস্থলে ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ। এমন একটি রাষ্ট্র নির্মিত হলেই মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডাকে বিজয়ী করা সম্ভব। এরূপ নেক আমলে আত্মনিয়োগ করেছিলেন নবীজী (সা:) এবং তাঁর সাহাবায়ে কেরাম। তাদের সে জিহাদ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিশাল এলাকার ভূ-রাজনীতি পাল্টে দিয়েছিল এবং বিশ্বশক্তি রূপে উত্থানে মুসলিমদের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। তাতে বিজয় পেয়েছিল মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব, তাঁর শরিয়তী আইন এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণে পবিত্র কুর’আনে বর্ণিত রোডম্যাপ।  মুসলিমদের দ্বারা অর্থদান, বস্ত্রদান, গৃহদান বা মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের কাজগুলি যত বিশালই হোক -তা দিয়ে মহান মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার বিজয় কখনো আসে না। কখনোই প্রতিষ্ঠা পায়না তাঁর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর আইনের শাসন। তাই ইসলামী রাষ্ট্রের বিকল্প নাই; এমন একটি রাষ্ট্রের নির্মাণই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ নেককর্ম।

 

 ব্যর্থতা ইবাদতের প্রায়োরিটি নির্ধারণে

মুসলিমদের বর্তমান ব্যর্থতার মূল কারণ, তাদের মাঝে বিলুপ্ত হয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমলে আগ্রহ, এবং আত্মতৃপ্তি বেড়েছে ছোট ছোট নেক আমলে। ফলে মুসলিম সমাজে অর্থদান, বস্ত্রদান,খাদ্যদান ও গৃহনির্মাণের ন্যায় নেক-কর্মগুলি গুরুত্ব পেলেও গুরুত্ব পায়নি জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর ন্যায় সর্বশ্রেষ্ঠ নেক-কর্মটি। অথচ লক্ষাধিক নবী-রাসূলদের সবার কাছে সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছিল মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানো। অধিকংশ নবী-রাসূলই ছিলেন দরিদ্র। অর্থদান, বস্ত্রদান ও খাদ্যদানের সামর্থ্য তাদের খুব একটা ছিল না। তাছাড়া সে কাজের জন্যও তারা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে প্রেরিত হননি।

আজকের মুসলিমগণ ভয়ানক ভাবে ব্যর্থ হয়েছে ইবাদতের প্রায়োরিটি নির্ধারণে। মানব জীবনে বড় বড় ক্ষতিগুলি হয়  -এমন কি প্রাণনাশ হয় প্রায়োরিটি নির্ধারণে ভূলের কারণে। যে রোগী অক্সিজেনের অভাবে মৃতপ্রায়, তাকে অক্সিজেন না দিয়ে পানাহার দিলে সে দ্রুত মারা যায়। তেমনি যে রোগী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত -তাকে আ্যন্টিবায়োটিক না দিয়ে স্রেফ ব্যাথার বড়ি দিলে তারাও মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অধিক। ইবাদত মোটা দাগে দুই রকমের। এক প্রকারের ইবাদত ব্যক্তির জীবনে চারিত্রিক, নৈতিক ও আধ্যত্মীক পরিশুদ্ধি আনে।  এমন ইবাদতের মধ্য দিয়ে ঈমানদার ব্যক্তি মুত্তাকীতে পরিণত হয়। এ শ্রেণীর ইবাদত হলো: নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত, কুর’আনের জ্ঞানার্জন এবং তাসবিহ-তাহলিল। এরূপ ইবাদতের তাগিদ দিয়ে পবিত্র কুর’আনে হুকুম এসেছে:

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعْبُدُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

অর্থ: “হে মানবগণ! ইবাদত করো সেই প্রতিপালকের যিনি তোমাদের এবং তোমারদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন -যাতে তোমরা মু্ত্তাকী তথা তাকওয়া সম্পন্ন হতে পারো।” –(সুরা বাকারা, আয়াত ২১)। মুত্তাকী তো সেই যে বাঁচে মহান আল্লাহতায়ালার প্রতি ভয় ও তাঁর কাছে জবাবদেহীতার ভাবনা নিয়ে।

অপর ইবাদতটি হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ তথা আল্লাহর পথে জিহাদ। এ ইবাদত পরিশুদ্ধি আনে সমাজ ও রাষ্ট্রে।  এবং প্রতিরক্ষা দেয় ইসলামের এবং নিরাপত্তা দেয় মুসলিমদের জান-মাল, ইজ্জত-আবরু ও স্বাধীনতার। নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত দিয়ে শত্রু শক্তির নির্মূল করা যায় না।  ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ও প্রতিরক্ষাও দেয়া যায়না।  সে কাজে ইসলামের হাতিয়ার হলো জিহাদ। তাই যে ভূমিতে জিহাদ নাই, সেখানে ইসলামী রাষ্ট্র নাই। সেখানে মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব ও আইনের প্রতিষ্ঠাও নাই।  এবং সেখানে নিরাপত্তা নাই মুসলিমদের জান-মাল, ইজ্জত-আবরু ও স্বাধীনতার। এমন দেশে পূর্ণ ইসলাম পালন অসম্ভব। গোলামী ও আত্মসমর্পণ সেখানে শত্রুশক্তির প্রতি।

পাখীর দুটি ডানার একটি ভেঙ্গে গেলে সে পাখী কখনোই উড়তে পারে না। তেমনটি দেখা যায় মুসলিম জীবনেও। উপরিউক্ত দুই প্রকার ইবাদতের একটি না হলে অসম্ভব হয় পূর্ণ মুসলিম রূপে বাঁচা ও বেড়ে উঠা। বিষয়টি ভাল ভাবে বুঝা যায়, মুসলিমদের জীবন থেকে জিহাদ বিলুপ্ত হলে। তখন বিলুপ্ত হয় মুসলিমের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা। তখন অসম্ভব হয় পরিপূর্ণ ইসলাম-পালন। শরিয়তী আইন, হুদুদ, ইসলামের সোসাল ও পলিটিকাল পলিসির ন্যায় ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলি তখন শুধু কিতাবেই থেকে যায়। রাষ্ট্রই হলো নাগরিকদের জাহান্নামের আগুনে নেয়ার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার; এবং সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোরও । রাষ্ট্র ইসলামী না হলে সেটি তখন শয়তানের হাতিয়ারে পরিণত হয়। তখন সংকটে পড়ে কুর’আন থেকে জ্ঞানার্জন। অথচ পরিতাপের বিষয় হলো, মুসলিম জীবনে জিহাদ না থাকায় তারা ব্যর্থ হয়েছে ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণে।

প্রায়োরিটি নির্ধারণে মানুষ ভূল করেছে এমন কি নবীজী (সা:)’র আমলেও। অনেকের কাছে জিহাদের বদলে গুরুত্ব পেয়েছে ক্বাবার খেদমত ও হাজীদের পানি পান করানোর ন্যায় কাজগুলি। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালার প্রায়োরিটিতে গুরুত্ব পেয়েছে জিহাদ। তাই বলা হয়েছে:

أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ ٱلْحَآجِّ وَعِمَارَةَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ كَمَنْ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ وَجَـٰهَدَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۚ لَا يَسْتَوُۥنَ عِندَ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ

অর্থ: “তোমরা কি হাজীদের পানি পান করানো, মসজিদে হারামের (ক্বাবার) রক্ষণাবেক্ষণকে সে ব্যক্তির সমকক্ষ মনে করো -যে আল্লাহর উপর ঈমান আনলো এবং জিহাদ করলো আল্লাহর রাস্তায়? আল্লাহর কাছে তারা কখনোই সমান নয়; এবং আল্লাহ জালেমদের হিদায়েত দেননা।”-(সুরা তাওবা, আয়াত ১৯)। উপরিউক্ত আয়াতের লক্ষণীয় বিষয়টি হলো, জিহাদকে বাদ দিয়ে যারা হাজীদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের (ক্বাবার) রক্ষণাবেক্ষণের ন্যায় কাজকে গুরুত্ব দেয় -তাদের সে কর্ম মহান আল্লাহতায়ালার কাছে প্রশংসিত হয়নি। যারা এরূপ করে তাদেরকে জালেম বলা হয়েছে। এবং এরূপ জালেমদের তিনি যে হিদায়েত দেন না -সে ঘোষণাটিও দিয়েছেন। তাদের জুলুম ও গাদ্দারি মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার সাথে। মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডা তো তাঁর সার্বভৌমত্ব ও শরিয়তী আইনের প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা ও দুর্বৃত্তির নির্মূল। শুধু মসজিদ-মাদ্রসা নির্মাণ করলে কি মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডাকে বিজয়ী হয়? সে জন্য ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা চাই। তাই যেখানেই ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণে অনাগ্রহ ও অবহেলা সেখানেই গাদ্দারিটি মহান আল্লাহতায়ালার সাথে। এবং যারা সেরূপ গাদ্দারি করে তারা ব্যর্থ হয় হিদায়েত পেতে। ফলে নামাজ-রোজা পালন করেও তারা পথভ্রষ্ট হয়।  অথচ মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার সাথে সেরূপ গাদ্দারিটাই বেশী বেশী হচ্ছে বাংলাদেশের ন্যায় অধিকাংশ মুসলিম দেশে। এর প্রমাণ, মসজিদ-মাদ্রাসা, ওরশ ও পীরের মাজারের জন্য লাখ-লাখ টাকার বিনিয়োগ দেখা গেলেও সেরূপ বিনিয়োগ নাই আল্লাহতায়ালার দ্বীনকে বিজয়ী করার জিহাদে। এসব নামাজী ও রোজাদারগণ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ দূরে থাক, ভোট দিতেও রাজী নয়।   

 

ইসলামী রাষ্ট্র: সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমলের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার

মুসলিম হওয়ার অর্থই হলো, রাজনৈতিক এজেন্ডা, ভিশন ও মিশন নিয়ে বাঁচা। আর সেগুলি নিয়ে বাঁচলে জীবনে যুদ্ধও এসে যায়। এবং সে যুদ্ধটি মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের; অনৈসলামের বিরুদ্ধে ইসলামের। প্রতিটি যুদ্ধেই চুড়ান্ত লক্ষ্য হলো, শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়া। সে যুদ্ধজয় সৈনিকদের সংখ্যাবল ও অস্ত্রবলে ঘটেনা। মুসলিমদের লোকবল কি কম? কিন্তু ১৫০ কোটির বেশী মুসলিমও কোন বিজয় পাচ্ছে না। যুদ্ধজয়ের জন্য জরুরি হলো সঠিক স্ট্রাটেজী। লক্ষ লক্ষ মসজিদ, হাজার হাজার মাদ্রাসা নির্মাণ করে বা বিপুল অর্থদান, বস্ত্রদান ও খাদ্যদান করে জনগণকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার কাজটি সফল হয়না। সেকাজে চাই ইসলামী রাষ্ট্র। এমন একটির নির্মাণই হলো নবীজী (সা:)’র সূন্নত। রাষ্ট্রের সামর্থ্য বিশাল। রাষ্ট্রের হাতে থাকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, পুলিশ, সেনাবাহিনী, আদালত, মিডিয়াসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পেলে রাষ্ট্রের বিবিধ প্রতিষ্ঠান এবং সেগুলির বিশাল অবকাঠামো তখন সকল সামর্থ্য নিয়ে জনগণকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে ময়দানে নামে।  এজন্যই সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমল যেমন জনগণকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানো, তেমনি সে নেক আমলের সর্বশ্রেষ্ঠ হলো হাতিয়ার ইসলামী রাষ্ট্র।  মুসলিমদের আজকের ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের মূল কারণ, তাদর হাতে লক্ষ লক্ষ মসজিদ-মাদ্রাসা আছে বটে, কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ নেক আমেলের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ারটি নাই। বরং সে রাষ্ট্রগুলি শয়তানী শক্তির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ফলে বিশাল বিশাল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির লোকবল ও আর্থিক বল ব্যবহৃত হচ্ছে ইসলামকে পরাজিত রাখার কাজে।

প্রশ্ন হলো, নবীজী (সা:)‌’র জীবন থেকে আমার কি শিক্ষা পাই? তাঁর নবুয়তী জীবনের ১৩টি বছর কেটেছে মক্কায়। এই ১৩ বছর সেখানে তিনি কাউকে গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন বা এক খানি মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন -সে প্রমাণ নাই। তিনি তাঁর সমগ্র সামর্থ্য ও সময় ব্যয় করেছেন মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে। সেটি কুর’আনের জ্ঞান ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে। এবং যোগ্য মানুষ তৈরী করেছেন আগামী দিনে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ও প্রতিরক্ষা দেয়ার জন্য। তিনি ছিলেন একজন ভ্রাম্যমান সার্বক্ষণিক শিক্ষক। তিনি গৃহে গৃহে, গলিতে গলিতে ও মহল্লায় মহল্লায় ঘুরেছেন। সে তের বছরে তিনি মানব জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবগুলিকে নিজ হাতে তৈরি করেছেন। অথচ তখন তাঁর হাতে কোন স্কুল বা কলেজ ছিলনা। কিন্তু আজকের মুসলিমদের কাছে নেক আমল রূপে অর্থদান, বস্ত্রদান ও মসজিদ নির্মাণ গুরুত্ব পেলেও জাহান্নামের আগুন থেকে মানব-বাঁচানোর কাজটি গুরুত্ব পায়নি।  ফলে গুরুত্ব পায় সে নেক আমলের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণও।

 

 মহান আল্লাহতায়ালার সূন্নত এবং মুসলিমদের বদ আমল

মসজিদের ইমারত কাউকে জান্নাতে নেয় না। জান্নাতে নেয় পবিত্র কুর’আনের জ্ঞান। অথচ পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশে বহু লক্ষ মসজিদ নির্মিত হলেও সে বিশাল বিশাল মসজিদগুলি কুর‌’আনের জ্ঞান বিতরণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না। ব্যবহৃত হয় স্রেফ নামাজের ঘর রূপে।  বড় জোর সেখানে কুর’আনের তেলাওয়াত শেখানো হয়। অথচ মহান আল্লাহতায়ালা কুর’আন বুঝা ফরজ করেছেন, না বুঝে তেলাওয়াত নয়। কুর’আনের জ্ঞান বিতরণের কাজে মসজিদগুলি নিষ্ক্রিয় থাকার পরিণতি হলো, বাংলাদেশে পবিত্র কুর’আন বুঝে এমন মানুষ প্রতি হাজারে একজনও পাওয়া যায়না। অথচ এই মসজিদগুলিই মাদ্রাসা হতে পারতো। বহুশত যাবত মুসলিমদের কোন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। সে আমলের মসজিদগুলোই ছিল জ্ঞানচর্চার একমাত্র কেন্দ্র। মসজিদগুলির কারণেই Qur’anic literacy বেড়েছে বেড়েছে অতি ব্যাপক ভাবে। কুর’আন বুঝতে গিয়ে তাদের আরবী ভাষাজ্ঞানও বেড়েছে। তাতে মিশর, সূদান, ইরাক, সিরিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়া, আলজিরিয়া, লিবিয়া, মৌরতানিয়াসহ বহু দেশে মাতৃভাষার বদল আরবী ভাষা স্থান পেয়েছে। তখন মসজিদগুলির মেঝেতে নানা কোণে কুর’আন শিক্ষার ক্লাস বসতো। জায়নামাজে বসে শিক্ষাদান ও শিক্ষালাভে তখন পবিত্রতা ছিল। অথচ বাংলাদেশে সে কাজ আজ হয়না। দেশের বহু লক্ষ মসজিদ এদিক দিয়ে nonfunctional। ফলে হাজার হাজার কোটি টাকায় নির্মিত লক্ষ লক্ষ মসজিদের প্রসস্ত মেঝেগুলি অব্যবহৃতই থেকে যাচ্ছে। অথচ মুসলিম উম্মাহ তো তখনই বিজয় পেয়েছে যখন নামাজ ও কুর’আনী জ্ঞানার্জন -এদুটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এক অভিন্ন অঙ্গণে হয়েছে।   

কুর‌’আনী জ্ঞানের অজ্ঞতাই হলো সবচেয়ে ভয়ানক অজ্ঞতা। এ অজ্ঞতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি বা ডক্টরেট লাভে দূর হয়না। এ অজ্ঞতা মানুষকে জাহেলে পরিণত করে; তখন অসম্ভব হয় মুসলিম হওয়া। মহান আল্লাহতায়ালা কখনোই তাঁর নিয়ামত-ভরা জান্নাতে কোন জাহলকে স্থান দিবেন না; জান্নাত তো ওহীর জ্ঞানের নূরপ্রাপ্ত মু’মিনদের জন্য। জাহেল ব্যক্তি নামাজী হতে পারে -যেমন বহু ঘুষখোর, সূদখোর, টাউট-বাটপারও নামাজী হয়।  কিন্তু তারা কখনোই ঈমানদার হয়না। ঈমানদার হতে হলে মন থেকে সর্বপ্রথম জাহিলিয়াতের অন্ধকার দূর করতে হয়। এজন্যই মহান আল্লাহতায়ালা নামাজ-রোজা প্রথমে ফরজ করেননি। প্রথমে ফরজ করেছেন ওহীর জ্ঞানার্জনকে। জান্নাতের যোগ্য হওয়ার পথে ঈমানদার হওয়াটাই হলো প্রথম ধাপ। সে জন্য জরুরি হলো, পবিত্র কুর’আনে জ্ঞান। অজ্ঞতার তথা জাহিলিয়াতের ভূমিতে ঈমানের বীজ গজায় না। গজালেও বেড়ে উঠেনা। এজন্যই ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও মাসব্যাপী রোজা ফরজ করার ১১ বছর পূর্বে কুর‌’আন শিক্ষাকে ফরজ করা হয়েছে। ঈমানদার হলেই সে ব্যক্তি নামাজী হয়, রোজাদার হয়, যাকাত দেয়, হজ্জ করে এবং জিহাদে জান ও মালের বিনিয়োগ করে।

ইবাদতের ক্ষেত্রে ফরজ হলো নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত।  এ ফরজ ইবাদতগুলি পালন না করে কেউ যদি দিন-রাত দোয়া-দরুদ, যিকির ও তাসবিহ পাঠে কাটায় -তাতে ইবাদতের ফরজ আদায় হয়না। সে ব্যক্তি কাফিরে পরিণত হয়। তেমনি জ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে ফরজ হলো কুর’আন শিক্ষা করা। সেটি না করে করে কেউ যদি অন্য কোন বিষয়ে মাস্টার্স বা ডক্টরেট করে তাতে জ্ঞানার্জনের ফরজ আদায় হবে না। সে জাহিলই থেকে যাবে। অথচ জাহিল বা কুর’আনী জ্ঞানে অজ্ঞ থাকাটি কবিরা গুনাহ তথা মহাপাপ। এ পাপের কোন কাফফারা নাই। বাংলাদেশের শতকরা ৯১ ভাগ জনগণ মুসলিম। এদেশে জনগণের রাজস্বের অর্থ থেকে হাজার হাজার কোটি ব্যয় হচ্ছে শিক্ষা খাতে। এটিই হলো সরকারি ব্যয়ের সবচেয়ে বড় খাত। অথচ সে শিক্ষায় জ্ঞানার্জনের ফরজ পালিত হচ্ছেনা। অথচ শিক্ষাদানই হলো রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কিন্তু বাংলাদেশে সে দায়িত্ব পালিত না হয়ে মুসলিম জনগণের সাথে হচ্ছে বিশাল গাদ্দারি। এ গাদ্দারির নমুনা হলো, দেশটির স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নাচগান, ছবি আঁকা, মুর্তি নির্মাণ, ইতিহাস,ভূগোল,রবীন্দ্র সাহিত্য, চিকিৎসা বিদ্যা, কারিগরি বিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান বিতরণের বিশাল আয়োজন থাকলেও আয়োজন নাই কুর’আনী জ্ঞান বিতরণের। ফলে এ সব প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে বিপুল সংখ্যায় ডিগ্রিধারী জাহেল উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে পরাজয় বাড়ছে ইসলামের।   

জাহান্নামের আগুন থেকে মানুষকে বাঁচাতে হলে দুটি কাজ অতি অপরিহার্য। এক). মানসলোকে প্রবল ভাবে জ্বালাতে হয় কুর’আনী জ্ঞানের আলো। এ ভাবেই দূর করতে হয় জাহলিয়াতের অন্ধকার। তখন আলোকিত মন দেখতে পায় কুর’আনী পথ তথা সিরাতাল মুস্তাকীম। দুই). নির্মূল করতে হয় সেসব দুর্বৃত্ত অপশক্তিকে -যাদের কাজ ধর্মের নামে, দর্শনের নামে ও নানারূপ মতবাদের নামে মিথ্যা ছড়ানো এবং জান্নাতের পথকে চেনা এবং সে পথে চলায় বাধা সৃষ্টি করা। জমিনে আগাছার জঞ্জাল রেখে সেখানে যেমন বীজ রোপন করা যায়না, তেমনি দুর্বৃত্ত শক্তিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রেখে কখনোই সত্য ও সুবিচারে প্রতিষ্ঠা দেয়া যায়না। এবং বিজয়ী করা যায়না মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডাকে।  এ দুটি কাজের জন্যই চাই সহায়ক রাষ্ট্রীয় শক্তি। রাষ্ট্রীয় শক্তি বিপক্ষে খাড়া হলে এ দুটি কাজের কোনটাই করা সম্ভব নয়।

নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাগণ বিশাল আয়তনের একটি ইসলামী রাষ্ট্র গড়তে পেরেছিলেন। ফলে সে রাষ্ট্র পরিণত হয়েছিল তাদের মিশনকে বিজয়ী করার কাজে শক্তিশালী হাতিয়ারে । ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের মানসলোক থেকে জাহিলিয়াতের অন্ধকার দূর করা তাদের জন্য সহজ হয়ে যায়। এবং সে রাষ্ট্রীয় শক্তির বলেই পৃথিবীর বিশাল ভূ-ভাগ থেকে তারা দুর্বৃত্ত শয়তানী শক্তির দখলদারীকে নির্মূল করতে পেরেছিলন। এবং মুসলিমগণ পরিণত হয়েছিল বিশ্বশক্তিতে। কিন্তু আজ মুসলিমদের হাতে ৫০টির বেশীর রাষ্ট্র থাকলেও কোন ইসলামী রাষ্ট্র নাই। ফলে ইসলামের পক্ষে কোন রাষ্ট্রীয় শক্তি নাই। ফলে ইসলামপন্থীগণ তাদের দুটি লক্ষ্যের একটিও তারা অর্জন করতে পারিনি। ফলে বাঁচছে পরাজয়, পরাধীনতা ও অপমান নিয়ে। বিশ্বের তাবত শয়তানী শক্তিবর্গ ইসলামী রাষ্ট্রের সে ক্ষমতা জানে। ফলে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণে তেমন বাধা না দিলেও ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাকে সহ্য করতে রাজী নয়।  ০৩/০১২০২৪  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *