মিডিয়ার শক্তি ও গুরুত্ব
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on December 28, 2020
- Bangla Articles, শিক্ষা ও সংস্কৃতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
মিডিয়ার শক্তি
মানব জাতির ইতিহাসে বিস্ময়কর বিপ্লব এসেছে জ্ঞানের ভূবনে। বিগত মাত্র এক শত বছরে বিশ্বে যত বিজ্ঞানী জন্ম নিয়েছেন -তা মানব জাতির সমগ্র ইতিহাসেও জন্মেনি। শুরু থেকে এ অবধি জন্ম নেয়া সকল বিজ্ঞানীদের অর্ধেকেরও বেশী সম্ভবতঃ এখনো জীবিত। হাভার্ড, ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ড, লন্ডন, শিকাগো প্রভৃতি নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটিতে যতজন বিজ্ঞানী আজ কাজ করেন বা শিক্ষকতা করেন মানব ইতিহাসের বহুশতাব্দী কেটে গেছে ততজন বিজ্ঞানীর জন্ম না দিয়েই। তবে এ শতাব্দীর সর্বশেষ বিপ্লব হলো মিডিয়া বিপ্লব। মানব জাতির ইতিহাসে এটি এক অতি বিস্ময়কর বিপ্লব। জ্ঞানচর্চার সামর্থ্যের বলেই মানুষ মহান স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ট সৃষ্টি। মিডিয়া বিপ্লব সে জ্ঞানচর্চাকে শুধু বেগবানই করেনি, জ্ঞানের ভুবনকে বাড়িয়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের বদৌলতে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসে যে কেউ অতি নগন্য মূল্যে নানা দেশের নানা ভাষার হাজার হাজার পত্রিকা পড়ার সুযোগ পাচেছ। বিশ্বের যে কোন প্রান্তর থেকে একজন ছাত্র সহজে ঢুকে পড়তে পারে আমেরিকান কংগ্রেস লাইব্রেরীতে। তন্ন তন্ন করে খুঁজতে পারে সেখানে রাখা তার পছন্দের বই বা জার্নালের পৃষ্টা।
ব্যক্তি ও সমষ্টির জীবনে পরিবর্তনে জ্ঞান ইঞ্জিনের কাজ করে। জ্ঞানই মানব জীবনে মূল্য ও মর্যাদা বাড়ায়। দেয় শক্তি। অথচ অতীতে জ্ঞান কখনই এতটা সহজলভ্য ছিল না। জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যে মানুষকে একসময় পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র-মহাসমুদ্র পাড়ি দিতে হয়েছে। অথচ এখন জ্ঞানের সে অবিশ্বাস্য বিশাল ভুবন কম্পিউটারের কি বোর্ডে। যাদুকেও এটি হার মানায়। এ শক্তির বদৌলতে মিডিয়া পাল্টে দিচ্ছে জ্ঞানের ভূবন, চেতনার জগত, পাল্টে দিচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা, রুচিবোধ ও মূল্যবোধ। কারণ, সকল পরিবর্তনের শুরু হয় চেতনা থেকে। ব্যক্তি তার জীবনের যাত্রা পথে নির্দেশনা পায় এখান থেকেই। আর সে চেতনা রাজ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য অজ আর কোন রাজার নয়, কোন প্রেসিডেন্ট বা প্রধান-মন্ত্রীরও নয়। বরং মিডিয়ার। ফলে মিডিয়া পাল্টে দিচ্ছে বিশ্বকে। মিডিয়ার শক্তি তাই অপরিসীম।
মিডিয়া হলো জাতীয় জীবনের আয়না। মানবের চেতনা অদৃশ্য; কিন্তু দৃশ্যময় হয় কথা, কর্ম, চিন্তা ও লেখনীর মাধ্যমে। মিডিয়া সেগুলোকেই জনসম্মুখে হাজির করে। মিডিয়ার কৃতিত্ব এখানেই। পত্রিকার পাতায়, রেডিওর আওয়াজে ও টিভির শব্দ ও ছবিতে ধরা পড়ে জীবন ও জগত নিয়ে একটি জাতির উপলব্ধি, ধ্যান-ধারনা ও রুচিবোধ। জাতির নীরব উপলব্ধিগুলো মিডিয়ার মধ্য দিয়ে সরব হয়। এখানে পরিচয় মেলে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সংস্কারে কার কি ভাবনা। ফলে ধরা পড়ে চিন্তার সুস্থ্যতার সাথে অসুস্থ্যতাও। অপর দিকে এটি জ্ঞান বিতরণের শক্তিশালী মাধ্যম। নবীজীর (সা) নির্দেশ হলো, দোলনা থেকে কবর পর্যন্তু জ্ঞান-লাভ করো। কিন্তু কোন বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ই জ্ঞান-বিজ্ঞান আজীবন শেখায় না। কিন্তু মিডিয়া সে সুযোগ দেয় জীবনের শেষ দিন অবধি। এ গুলো হলো পত্র-পত্রিকা, রেডিও, টিভি ও জার্নাল। পত্র-পত্রিকা ও জার্নালে লেখেন এবং রেডিও-টিভিতে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু জাঁদরেল অধ্যাপকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত লেকচারের চেয়ে তাদের সে লেখনি ও বক্তব্য অধিক সমৃদ্ধ। ফলে ছাত্র না হয়েও তাদের সে জ্ঞানদান প্রক্রিয়া থেকে লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেয় মিডিয়া। উন্নত দেশগুলি আজীবন শিক্ষার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম তাই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সেটি হলো মিডিয়া।
বাণিজ্যিক পণ্যের লেনদেন বা বেচাবিক্রি হয় যেমন হাটবাজারে, জ্ঞানের ফেরি হয় তেমনি মিডিয়ায়। হাটবাজার ছাড়া অর্থনীতি চলে না, তেমনি মিডিয়া ছাড়া একটি আধুনিক জাতির বুদ্ধিবৃত্তিও চলে না। তাই কোন জাতি কতটা চিন্তাশীল ও বিবেকবান -সে পরিচয় মেলে তাদের মিডিয়ার অঙ্গণ দেখে। মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, এমনকি বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত অবধি এটি সংযোগ বাড়ায়। এ সংযোগ যেমন খবরা-খবর ও ব্যক্তির জানাজানিতে, তেমনি চেতনার লেনদেনেও। আত্মীয়তার প্রতিষ্ঠায় পরস্পরে জানাজানিটা হলো প্রধানতম শর্ত। পরস্পরের মাঝে সম্পর্ক গড়ায় এটি সিমেন্টের কাজ করে। ভিন দেশের নেতা, আলেম বা আবিস্কারক প্রাচীন কালে অপর দেশে অপরিচিতই থেকে যেত। কিন্তু আজ মিডিয়ার বদৌলতে অন্য গোলার্ধেও কোটি কোটি মানুষের কাছে আত্মার আত্মীয়তে পরিণত হয়েছে। জাতীয় জীবনে উন্নয়ন, সংহতি ও সম্পৃতির সৃষ্টিতে এর চেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম নেই। মুসলিম বিশ্ব জুড়ে আজ যে বিভেদ ও বিচ্ছেদ -তার কারণ অনেক। তবে অন্যতম কারণ হলো দুর্বল মিডিয়া। দুর্বল মিডিয়ার কারণে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে সিমেন্ট লাগানোর কাজটিই যথার্থভাবে হয়নি। সৃষ্টি হয়নি চিন্তার সংযোগ, সমতা ও একতা। এবং বাড়ছে না সৌহার্দ ও সংহতি। ফলে যে প্যান-ইসলামিক চেতনা ইসলামের অতি মৌলিক বিষয় -সেটিই গড়ে উঠেনি।
কেন মিডিয়া
পশুর জীবনে খাদ্য ও পানীয়ের সংগ্রহ ছাড়া বাঁচবার মহত্তর লক্ষ নেই। পশুরা সমাজ গড়ে না, সভ্যতাও গড়ে না। তাদের মাঝে সিমেন্ট লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না। তারা বাঁচে অন্য পশুর বা মানুষের পেট পূর্ণ করার প্রয়োজনে। ফলে পশুর জীবনে প্রচার বা মিডিয়ার প্রয়োজন নাই। অথচ মানুষ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে। শুধু নিজেকে নিয়ে নয়, অপরকে নিয়েও ভাবে। এবং যেটি ভাবে, সেটির প্রচার ও প্রতিষ্ঠাও চায়। মিডিয়ার জন্ম এ প্রেরনা থেকেই। বিভিন্ন প্রজাতির হয়েও পশুরা একই জগতের বাসিন্দা। কিন্তু মানুষের জগত ভিন্ন ভিন্ন। এ ভিন্নতা গড়ে উঠে ভিন্ন ভিন্ন চেতনা, রুচিবোধ, সংস্কৃতি ও বাঁচবার বিবিধ প্রেরণার ভিত্তিতে। তাই ভূগোলের পৃথিবী সবার এক হলেও মনের পৃথিবী সবার এক নয়। তবে সবাই চায় অন্যকে আপন চেতনা-রাজ্যের অধিবাসী করতে। আর এ থেকেই বাড়ে প্রচার। কারণ প্রচার ছাড়া কোন কিছুর প্রসার বাড়ে না। ফলে ভৌগলিক সীমানা বাড়াতে আজ যতটা যুদ্ধের উত্তাপ, তার চেয়ে অধিক উত্তাপ নিয়ে প্রচন্ডতর যুদ্ধ চলছে প্রচার জগতে। কারণ, সবাই চায় অন্যদেরকে নিজ নিজ চেতনা, দর্শন ও সাংস্কৃতিক রাজ্যের প্রজা বানাতে। ফলে শুরু হয়েছে আদর্শিক বা সাংস্কৃতিক যুদ্ধ। আজ বিশ্ব জুড়ে এ যুদ্ধেরই প্রচন্ড আয়োজন। এ যুদ্ধে পরাজিতদের চেতনার রাজ্যই শুধু বিধ্বস্ত হচ্ছে না, ধ্বসে পড়ছে তাদের রাজনৈতিক ভূগোলও। চেতনার রাজ্যে এ পরাজয়ের কারণেই সোভিয়েত রাশিয়ার রাজনৈতিক ভূগোলকে খন্ডিত করতে শত্রুদেরকে একটি তীরও ছুঁড়তে হয়নি।
রাষ্ট্রের ভুগোলে ফাটল ধরে বস্তুত চেতনার ভূগোলে ফাটল ধরার কারণে। এজন্যই অতীতে বহু সাম্রাজ্য টিকেনি। অথচ মনের রাজ্যে অটুট ঐক্য সৃষ্টি হলে খন্ডিত ভুগোলও তখন একতাবদ্ধ হয়। উত্তর অ্যামিরকায় যে যুক্তরাষ্ট্র গড়ে উঠেছে সেটি যতটা সামরিক শক্তিবলে, তার চেয়ে অধিক অভিন্ন মনজগতের কারণে। অভিন্ন মন ও মননের কারণেই সেখানে ইংরেজ, ফরাসী, স্পানীশ, ডাচ, জার্মান সবাই একই সংস্কৃতিতে একাকার হয়ে গেছে। এজন্যই দেশটিকে বলা হয় “মেল্টিং পট”। একই লক্ষপথে এগুচ্ছে ইউরোপ। তারা যে একতাবদ্ধ ইউরোপ তথা ইউনাইটেড স্টেটস অব ইউরোপের জন্ম দিবে সে সম্ভাবনা অনেক। একাজে মিডিয়ার ভূমিকা বিশাল। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুসলিমগণ এমনই একই “মেল্টিং পট”এর জন্ম দিয়েছিল। মিশরীয়. সিরীয়, লেবাননী, ইরাকী, বারবার, সূদানী, মুর, তুর্কী, কুর্দি ও অন্যান্য বহু জনগোষ্ঠী ভিন্ ষাভাভাষী ও ভিন্ সংস্কৃতির হওয়া সত্ত্বেও সবাই একাকার হয়ে এক উম্মতে ওয়াহেদার জন্ম দিয়েছিল। সেটি সম্ভব হয়েছিল পবিত্র কোর’আনের প্যান-ইসলামী দর্শনের কারণে। সে লক্ষ্যে কাজ দিয়েছিল অভিন্ন ধর্মরাষ্ট্র ও ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা। মানুষ তখন কোর’আনী দর্শন ও শিক্ষা নিয়ে একই চেতনা, একই রুচি, একই মূল্যবোধ ও একই জীবনবোধ নিয়ে গড়ে উঠতো। ফলে গড়ে ঊঠতো রাজনৈতিক একতাও। শক্তিশালী মিডিয়ার কারণে সেরূপ একতা গড়ার কাজটিই এখন অভাবনীয় শক্তি পেয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি শিক্ষাকে ঘরে ঘরে নেয় না, অথচ সেটি নেয় প্রচার মাধ্যম। পৌঁছে দেয় শয়নকক্ষে। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু শিক্ষিত-অশিক্ষিত -সবার সাথে গড়ে তোলে সরাসরি সংযোগ।
তবে সৃষ্টিশীল কাজের ন্যায় অনাসৃষ্টি ও ধ্বংসাত্মক কাজেও মিডিয়ার সামর্থ্য বিশাল। মানুষকে যারা বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করতে চায় তাদের হাতেও মিডিয়া যাদুকরী শক্তি তুলে দিয়েছে। অতীতে মিডিয়া হাতিয়ার রূপে ব্যবহৃত হয়েছে জাতীয়তাবাদী, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারি ও বর্ণবাদী শক্তির হাতেও। এটি এতই শক্তিশালী যে এমন কি রাষ্ট্রীয় শক্তিকেও পরাজিত করতে পারে। শুধু একটি দেশকে নয়, সমগ্র বিশ্বকে মিডিয়া “মেল্টিং পট”য়ে পরিণত করার সামর্থ্য রাখে। পাশ্চাত্য শক্তিবর্গ এ শক্তির বলেই সমগ্র বিশ্বকে একটি গ্লোবাল ভিলেজ এবং নিজেদের কালচারকে গ্লোবাল কালচারে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছে।
মিডিয়ার সামর্থ্য ও মুসলিমদের ব্যর্থতা
মিডিয়া এখন আর শুধু জ্ঞান-বিতরণের মাধ্যম নয়, যুদ্ধের হাতিয়ারও। এবং সেটি স্নায়ু যুদ্ধের। নিজেদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক এজেন্ডা পূরণে পাশ্চাত্যের শক্তিবর্গের হাতে এটি এক শক্তিশালী হাতিয়ার। তারা বহু দেশের সরকার ও মানচিত্র পরিবর্তন করছে মিডিয়ার সাহায্যে। তাই শুধু অস্ত্রের জোরে দেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক প্রতিরক্ষা দেয়া সম্ভব নয়, সে কাজে অপরিহার্য হলো শক্তিশালী মিডিয়া। এক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলির অবস্থা অতি বেহাল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মুসলিমদের নিজে ঘরের খবর, এমন কি যুদ্ধের খবর শুনতে হয় প্রতিপক্ষের মুখ থেকে। অথচ মুসলিমগণ মিডিয়া থেকে বিস্তর লাভবান হতে পারতো। বিশেষ করে ইসলামের প্রসারে। ইসলামের লক্ষ্য, সত্যের আলোয় বিশ্বকে আলোকিত করা। ইসলামকে কবুল করা বা না করার দায়ভার অমুসলিমদের। কিন্তু বিশ্বের কোনে কোনে পবিত্র কোর’আনের বাণী পৌঁছানোর দায়িত্ব তো প্রতিটি মুসলিমের। অন্যদের কাছে কোর’আনের বাণীকে পৌঁছে দেয়া ভিন্ন অধিক দায়িত্ব এমনকি নবীদেরও দেয়া হয়নি। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে সবচেয়ে উত্তম কাজ হলো তাঁর বাণীকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং মানুষকে তাঁর দিকে ডাকা। সে পবিত্র বয়নাটি এসেছে সুরা ফুস্সিলাতের ৩৩ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে, “তাঁর চেয়ে কথায় আর কে উত্তম যে মানুষকে ডাকে আল্লাহর দিকে ও নেক আমল করে এবং বলে নিশ্চয়ই আমি মুসলিম।” নবীজী (সা:) বলেছেন, “সম্ভব হলে আমার একটি বাণীকে অন্যদের কাছে দাও।” নবীজী (সা:)’র উপর যার সামান্যতম ভালবাসা আছে সে কি তাঁর নির্দেশ অমান্য করতে পারে?
মুসলিম হওয়ার অর্থ তাই একটি মিশন নিয়ে বাঁচা, সেটি কোর’আনী জ্ঞান ও নবীজী (সা:)’র শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেয়ার মিশন। এক কালে মুসলিমগণ সে মিশন পূরণে পাহাড়-পর্বত ও বিজন মরুভূমি পাড়ি দিয়েছেন। মিডিয়া সে পবিত্র কাজটিকে সহজ করে দিয়েছে; সে মিশন নিয়ে বাঁচায় ঈমানদারের কাছে শক্তিশালী হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। বয়সের ভারে বা শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে অনেকেই সসস্ত্র জিহাদে অংশ নিতে পারেন না। অথচ ইসলামকে বিজয়ী করার বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদটি চলতে পারে কবরে যাওয়ার পূর্বপর্যন্ত। এবং সেটি মিডিয়াকে হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে। তখন মুসলিম পরিণত হয় আমৃত্যু মুজাহিদে এবং মৃত্যু ঘটে মুজাহিদ রূপে।
পয়গম্বরদের কাজ
প্রতিটি মুসলিমই মহান আল্লাহপাকের খলিফা বা প্রতিনিধি। খেলাফতের দায়িত্ব হলো ইসলামকে সকল ধর্ম ও মতবাদের উপর বিজয়ী করা। কিন্তু প্রচার না দিয়ে কি প্রতিষ্ঠা সম্ভব? প্রচারের লক্ষ্যেই মহান আল্লাহতায়ালা ১ লাখ ২৪ হাজার মতান্তরে ২ লাখ ২৪ হাজার রাসূল পাঠিয়েছেন। রাসূল শব্দের অর্থ হলো প্রচারক। সে যুগে পত্র-পত্রিকা ছিল না। অন্য কোন প্রচার মাধ্যমও ছিল না। রাসূলগণ নিজেরাই ছিলেন বার্তাবাহী। লোকালয়ে ঘুরে ঘুরে একাজ নিজেরা করেছেন। হযরত ইব্রাহীম (আ:) সত্যের বাণী নিয়ে তাঁর জন্মস্থান ইরাক থেকে ফিলিস্তিন গেছেন, সেখান থেকে মিশর গেছেন। গেছেন মক্কায়; সেখান থেকে আবার ফিরে গেছেন ফিলিস্তিন। এভাবে সত্যের বাণী ফেরী করতে নানা জনপদে ঘুরেছেন। যারা জান্নাতের বিনিময়ে নিজেদের জানমাল বিক্রয় করে তাঁরা তাঁর এ মহান সূন্নত নিয়ে বাঁচবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? সে মহান সূন্নত নিয়ে কিছু মুজাহিদ বাংলায় এসেছিলেন বলেই তো বাংলার মানুষ মুসলিম হওয়ার সুযোগ পেয়েছ। নইলে মুর্তিপূজারী হয়ে নিশ্চিত জাহান্নামে পৌঁছতে হতে।
আরবী ভাষায় পত্রিকাকে বলা হয় রেসালাহ। রেসালাহর সে কাজই করতেন রাসূলগণ। তাই মেডিয়া কর্মীর কাজটি পয়গম্বরদের কাজ। সে কাজটি কোর’আনের সত্য বাণীকে মানুষের ঘরে সুন্দর ভাবে পৌঁছে দেয়ার। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা মুসলিমের সে কাজের পরিচয় দিয়েছেন এ ভাবে, “ইউছাদ্দেকু বিল হুসনা” অর্থ: তারা সত্যের পক্ষে সুন্দর রূপে সাক্ষ্য দেয়। মুসলিমদের কাজ তাই শুধু নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত আদায় নয়, বরং সত্যের বীজকে সর্বত্র ছিটিয়ে দেয়াটিও। পাথর, ঝোপঝাড় ও মরুভূমিতে বীজ পড়লে তা গজায় না। গজালেও বেড়ে উঠে না। তবে এটিও সত্য, বিশাল এ পৃথিবীর সবটুকু পাথর, ঝোপঝাড় বা মরুভূমি নয়। বহু উর্বর ভূমিও রয়েছে। নবীপাক (সা) মক্কা, মদিনা ও তায়েফসহ বহুস্থানে দ্বীনের বীজ ছিটিয়েছিলেন। সে বীজ সব চেয়ে বেশী ফলেছে মদিনাতে। তবে মক্কাতেও সে বীজ বৃথা যায়নি। বরং হযরত আবু বকর (রা), হযরত হামযা (রা), হযরত ওমর (রা), হযরত উসমান ও হযরত আলী(রা)’র ন্যায় নবীজী (সা:)’র মহান সাহবাগণ বেড়ে উঠেছিলেন তো মক্কাতেই।
বিশ্বে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি। বিশ্বে আজ যত আলেম, হাফেজ. মোফাচ্ছেরে কোরআন আছেন -তাদের সংখ্যাই নবীজী (সা:)’র সাহাবাদের সংখ্যার চেয়ে হাজার গুণ অধিক। অথচ তারাই বা দ্বীনের বীজ অমুসলিমদের মাঝে কতটা রোপন করেছেন? কোর’আনের জ্ঞানকে ছড়িয়ে কাজে কত জন মিডিয়াকে ব্যবহার করছে? বরং তাদের সকল ব্যস্ততা নিঃশেষ হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রসার চার দেয়ালের মাঝে। তাদের চিন্তা-ভাবনায় গুরুত্ব পাচ্ছে শুধু মুসলিমদের মাঝে ইসলাম চর্চা নিয়ে। যেন অমুসলিমদের কাছে কোর’আনের বার্তা পৌঁছাটি তাদের কোন দায়িত্বই নয়। অথচ এটি নবীজী (সা:)’র সূন্নত বিরোধী। রোম, ইথিওপিয়া, পারস্যসহ বহু অমুসলিম দেশের রাজাদের কাছে নবীকরীম (সাঃ) যখন ইসলামের দাওয়াত পৌঁছিয়েছেন তখন আরবের অধিকাংশ জনগণই ছিল অমুসলিম। এমন কি অমুসলিম ছিল তাঁর নিজ পরিবারের অনেকেই। কিন্তু নিজ জন্মভূমিতে তিনি যে বাঁধা পেয়েছেন -তা তাঁকে অন্যদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
অধিকৃত মিডিয়া: হাতিয়ার অসভ্যতার
ইসলামের পক্ষের শক্তিবর্গ আজ যেমন রাষ্ট্র পরিচালনার মূল আসন থেকে অপসারিত, তেমনি দূরে সরেছে আছে মিডিয়া থেকেও। শক্তিশালী এ মাধ্যমটি আজ বস্তুবাদী, ভোগবাদী, পুঁজিবাদী ও যৌনবাদীদের হাতে অধিকৃত। ফলে বিভ্যান্তি, ব্যর্থতা ও দুর্বৃত্তায়ন বেড়েছে শুধু রাজনৈতিক ময়দানেই নয়, বরং বুদ্ধবৃত্তিক ময়দানেও। মিডিয়া পরিণত হয়েছে অসভ্যতার হাতিয়ারে। ইসলামের বিপক্ষ শক্তি ইসলামের সত্য ও সুন্দর রূপটিকে অসুন্দর, মিথ্যা ও সেকেলে বলে। ইসলামপন্থিদের গায়ে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের লেবেলে লাগিয়ে শুধু গালিগালাজই করে করে না, তাদের নির্মুলেও লাগে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা এদের সম্মন্ধেই বলেছেন, ”ইউকাজ্জেবু বিল হুসনা।” অর্থ: “সুন্দরকে এরা মিথ্যা বলে।” অথচ এরাই আকর্ষণীয় করে পেশ করে অসত্য, অসুন্দর ও অসভ্যতাকে। ফলে যে নগ্নতা ও অশ্লিলতা এক সময় নিষিদ্ধপল্লীর সামগ্রী ছিল, মিডিয়ার বদলে সেগুলো আজ ঘরে ঘরে ফেরী হচ্ছে। শয়তানের যে মুখগুলো নোংরা গলিতে দাঁড়িয়ে অসুন্দর ও পাপাচারে হাতছানি দিত তা এখন টিভির পর্দায় সাধারণ মানুষের শয়ন কক্ষেও সোচ্চার। মহান আল্লাহতায়ালার প্রেরিত পয়গম্বরদের বিরুদ্ধে আবু জেহেল-আবু লাহাবেরা বা ফেরাউন-নমরুদেরা যে কথা গুলো বলতো, আজকের পত্র-পত্রিকা বা রেডিও-টিভিতে সে কথা গুলোই প্রচার রংচং লাগিয়ে প্রচার করছে। সেকালের আদিম অসত্য ও অসভ্য কথাগুলো তাদের হাতে আধুনিকতা পেয়েছে। নগ্নতা ও যৌনতার ন্যায় অশ্লিল বিষয়গুলোও শিল্পরূপে প্রশংসিত হচ্ছে।
মিডিয়া জগতে আজ যেরূপ মিথ্যার একচ্ছত্র আধিপত্য তার জন্য ইসলামের পক্ষের শক্তিও কম দায়ী নয়। তারা শক্তিশালী এ মাধ্যমটির গুরুত্বই অনুধাবন করেনি। এর গুরত্বটি তো তারাই বুঝবে -যারা অন্যকে কিছু শোনাতে বা বোঝাতে চান। ভাবটা এমন, যে পথে চলার ইচ্ছাই যার নাই -সে পথের খোঁজ নেয়া কেন? মুসলিমদের কাছে দাওয়াতের মত ফরজ কাজটি গুরুত্ব না পাওয়াতেই গুরুত্ব হারিয়েছে মিডিয়াও। দ্বীনের প্রচার গুরত্ব পেলে মিডিয়াও গুরুত্ব পেত। কারণ, মিডিয়াতো প্রচারেরই হাতিয়ার। ইতিহাসে বহু জাতির ভাষা পাল্টে গেছে, ছাপাখানা আবিস্কৃত হয়েছে, নানারূপ প্রচারযন্ত্র গড়ে উঠেছে এবং কোটি কোটি বই ছাপা হয়েছে খৃষ্টান ধর্ম-প্রচারকদের উদ্যোগে। অথচ মুসলিমগণ সে কাজে তেমন নামেনি। মিডিয়া ক্ষেত্রে এরূপ ব্যর্থতার কারণেই মুসলিমগণ অন্যদের কাছে দূরে থাক, নিজ সন্তানদের কাছেও ইসলামের সত্য ও সুন্দর কথাগুলো পৌঁছাতে পারছে না। এ ব্যর্থতার কারণেই তারা ভাসছে অন্যদের সৃষ্ট বুদ্ধিবৃত্তিক প্লাবনে।
অথচ বহু লক্ষ মানুষের পক্ষে বহু বছরে যা সম্ভব নয়, তার চেয়েও অধিক প্রচার সম্ভব অতি অল্প সময়ে মিডিয়ার বদৌলতে। ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আদালতের বিচারক, সেনাবাহিনীর অফিসার, সরকারি আমলাসহ সকল প্রকারের মানুষের কাছে তখন পৌঁছে যেত দ্বীনের দাওয়াত। এভাবে পৌঁছে যেত রাষ্ট্রের উন্নয়নে ইসলামি চেতনাসমৃদ্ধ গঠনমূলক চিন্তাগুলিও। মিডিয়ার সৃষ্টিশীল ও শক্তিশালী ভূমিকা তো এ কারণেই। মানুষের কানে কানে ও চেতনা রাজ্যে মিডিয়া যত সহজে কোন দর্শন বা ধ্যান-ধারনাকে পৌঁছাতে পারে তা অন্যভাবে সম্ভব নয়। নবীজীর (সা) যুগে মিডিয়া না থাকাতে নবীপাক তার বাণীকে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে প্রচার করতে পারেননি। তিনি ও তাঁর মহান সাহাবাগণ মিডিয়ার অভাব পালন করেছেন পায়ে হেঁটে হেঁটে।
মহান আল্লাহতায়ালার বাণীকে অন্যদের কাছে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজটিকে সেকালে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হত যে সাহাবায়ে কেরাম সেগুলোকে যেমন মুখস্থ্য করতেন, তেমনি কাষ্টফলক, হাড্ডি খন্ড, পাথরের ফালি ইত্যাদির উপর লিখেও রাখতেন। পরিতাপের বিষয়, সে সাথে বিস্ময়ের বিষয় হলো, নবীজী (সা:) তাঁর নবুয়তের জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি প্রচারের যে কাজটি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে করে গেলেন -মুসলিমদের কাছে সেটি আজ গুরুত্ব পাচ্ছে না। মসজিদের মাঝে তাসবিহ-তাহলিল নফল ইবাদত যতটা গুরত্ব পেয়েছে, দাওয়াতের ন্যায় ফরজ কাজ ততটা পায়নি। ফলে গুরুত্ব পাায়নি নিজেদের এবং সে সাথে অন্যদের ইসলামের আলোকে আলোকিত করার কাজও। অথচ পবিত্র কোর’আনের বাণীকে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছানোর কাজে একমাত্র তারাই হলো মহান আল্লাহতায়ালার খলিফা ও আনসার। সে দায়িত্বটি প্রতিটি মুসলিমের। বিচার দিনে এ কাজের জবাবদেহীতা প্রতিটি মুসলিমকে আলাদা ভাবে দিতে হবে। কিন্তু তাঁরা যদি সে দায়িত্ব পালন না করে -তবে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের বিপথগামী হওয়ার দায়ভাব কারা বইবে?
সামনে মহাসুযোগ
বিজ্ঞানের অগ্রগতি মুসলিমদের সামনে বিশাল এক সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছে। অন্যান্য ধর্ম ও মতবাদগুলোর ব্যর্থতা আজ আর গোপন কিছু নয়। তাদের ব্যর্থতার পাশাপাশি বিরাজ করছে ইসলাম প্রচারের স্বাধীনতা। নবীজী (সা:) তাঁর জীবদ্দশাতে এতো সুয়োগ পাননি। দ্বীনের ঝান্ডা নিয়ে তাঁকে প্রতি কদম যুদ্ধ করে সামনে এগোতে হয়েছে। অন্ততঃ প্রচার ক্ষেত্রে এখন সে বাধা এখন নেই। ইসলামের শক্তির উৎস হলো পবিত্র কোর’আন। মুসলিমগণ আজ নানা কদর্যতায় আছন্ন হলেও মহান আল্লাহতায়ালার এ পবিত্র গ্রন্থ্যটি এখনও অবিকৃত। মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য তাদের বিশাল তেল বা গ্যাস ভান্ডার বা জনশক্তি নয়, সেটি এই কোর’আন। সমগ্র মানব জাতির জন্যও এটিই সবচেয়ে বড় নেয়ামত। কিন্তু বিশ্ববাসীর বড়ই দুর্ভাগ্য, মহান আল্লাহতায়ালার এ পবিত্র গ্রন্থ্যটির সাথেই তাদের পরিচয় ঘটেনি। শুধু তাই নয়, এমন কি যথার্থ ভাবে পরিচয় ঘটেনি অধিকাংশ মুসলিমের সাথেও। পরিচয় করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব যাদের ছিল তারা নিজেরাই আজ অজ্ঞতার শিকার।
বিজ্ঞানের বদৌলতে বিশ্ববাসীর সামনে সুযোগ এসেছে মহান আল্লাহতায়ালার এ পবিত্র গ্রন্থ্যটি নিয়ে গভীর অধ্যয়ণ ও গবেষনার। তবে মুসলিমদের দায়িত্ব শুধু কোর’অআন থেকে শিক্ষা নেয়া নয়, বরং সবার জন্য কোর’আনকে সহজলভ্য করা। এবং সে সাথে বিশ্ব-অবলোকন ও ঘটনার বিশ্লেষণে ইসলামের নিজস্ব মানদন্ড ও মূল্যবোধকে খাড়া করা। শয়তানি শক্তির মিথ্যাচার ও মূল্যবোধ একমাত্র এভাবেই দূর হতে পারে। আর এ কাজটি অতি সহজে ও কম মেহনতে সম্ভব পত্র-পত্রিকা, টিভি-রেডিও ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তখন বিশ্ববাসীর সংযোগ বাড়বে মহান আল্লাহতায়ালার নাযিলকৃত কোরআনী জ্ঞানের সাথে। আর অজ্ঞতার আঁধার অপসারণে কোরআনী জ্ঞানের ক্ষমতা তো বিস্ময়কর। সূর্যের আলো যেমন মুহুর্তের মধ্যে আঁধারমূক্ত করে, কোরআনের আলোও তেমনি আঁধার সরাতে পারে কোটি কোটি মানুষের জীবন থেকে। আলোকিত সে ব্যক্তির জীবনে তখন পরিবর্তন আসে তাঁর চেতনায়, চরিত্রে ও কর্মে। তখন নির্মিত হয় উচ্চতর মূল্যবোধের সংস্কৃতি ও সভ্যতা। ইসলামের প্রচার, প্রতিষ্ঠা ও প্রসারে এভাবেই এক অভাবনীয় বিপ্লব আসতে পারে। আজও পাশ্চাত্যে প্রতিদিন যারা মুসলিম হচ্ছে তারা হচ্ছে ইসলামের সে অবিকৃত সত্য রূপকে দেখে। মুসলিমদের দায়িত্ব, সত্যের সে আলোকে আরো ব্যাপকতর ও বলিষ্ঠতর করা। মিডিয়া এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ বাহন হতে পারে। ফলে অন্যদের কাছে মিডিয়ার গুরুত্ব যেখানে রাজনৈতিক, সামরিক, সাংস্কৃতিক বা অর্থনৈতিক, মুসলমানের কাছে সেটি পবিত্র ইবাদত। ২৮/১২/২০২০।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- সেক্যুলারিস্টদের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ এবং যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে
- বাংলাদেশে হিফাজতে ইসলাম ও ইসলামের হিফাজতে ভয়ানক ব্যর্থতা
- তাবলীগ জামায়াত কতটা দূরে সরেছে ইসলাম থেকে?
- Bangladesh: A Tale of Success of a Robber and the Failure for the Opposition
- বাংলাদেশে সেক্যুলারিজমের তাণ্ডব এবং সংকটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Mohammad Arifur Rahman on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- সিরাজুল ইসলাম on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- Abdul Aziz on বিবিধ ভাবনা ৮২
- Fazlul Aziz on বাঙালি ও অবাঙালি মুসলিমের বৈষম্য এবং ফ্যাসিবাদী মিথ্যচার
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের তান্ডব: মুক্তি কীরূপে?
ARCHIVES
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018