বিবিধ ভাবনা (৩৭)
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on March 19, 2021
- Bangla Articles, সমাজ ও রাজনীতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
১. পরাধীনতা নিয়ে উৎসব
বাংলাদেশের সরকার বিরাট ধুমধামে স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উৎসব করতে যাচ্ছে। খবরে প্রকাশ ১২ কোটি টাকা ব্যয় করবে দুবাইয়ের বিশ্ববিখ্যাত টাউয়ার বুর্জে খলিফায় আলোক সজ্জা দিতে। কিন্তু এ উৎসব কার স্বাধীনতা নিয়ে? কোন একটি দেশ স্বাধীনতা পেলে স্বাধীনতা পায় সে দেশের জনগণ। কিন্তু বাংলাদেশে কোথায় সে স্বাধীনতা? দেশের জনগণ স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারে না, লিখতে পারে না এবং মিছিল-মিটিং করতে পারে না। দেশ জুড়ে ভোট ডাকাতি করলে সামান্যতম শাস্তিও হয়না। কিন্তু স্বাধীন ভাবে কথা বললে গুম হতে হয়, জেলে যেতে হয়, নির্যাতিত হতে হয় এবং নির্মম ভাবে লাশ হতে হয়। লাশ হয়েছে বুয়েটের ছা্ত্র আবরার ফাহাদ। সম্প্রতি লাশ হলো মুশতাক আহম্মদ। ভোটের অধিকার ছিনতাই হয়েছ বহু আগেই। এতো নিরেট পরাধীনতা! জনগণ কেন এ পরাধীনতা উদযাপনে রাজস্ব দিয়ে অর্থ জোগাবে?
যারা স্বাধীনতা পেয়েছে তারা বাংলাদেশের জনগণ নয়, তারা হলো চোরডাকাত, ভোটডাকাত ও গুম-খুন-সন্ত্রাসের নায়কগণ। পূর্ণ স্বাধীনতা ডাকাত সর্দারনী হাসিনা। জনগণ এ ডাকাত সর্দারনীর হাতে জিম্মি। ডাকাতদের সাথে অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছে ভারত। ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে বাংলাদেশের পদ্মা ও তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানি তুলে নিতে। তারা স্বাধীনতা পেয়েছে বাংলাদেশে মধ্য দিয়ে বাস ও ট্রাক নিয়ে এপার-ওপার করিডোরের সুবিধা ভোগের। স্বাধীনতা পেয়েছে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দগুলি ব্যবহারের।
৩. কেন পতনের পথে মুসলিমগণ?
মুসলিম উম্মাহর অবস্থা এমন এক বিশাল বাগানের ন্যায় যেখানে রয়েছে ১৫০ কোটি গাছ। কিন্তু সে বাগানের সব গাছ ফল দেয় না; ফল দেয় গুটি কয়েক মাত্র। কিন্তু বাগানের মালিক মহান আল্লাহতায়ালা চান ফল দিবে বাগানের প্রতিটি গাছ, কারণ পানাহার ও আলোবাতাস নিচ্ছে তো সব গাছগুলোই।
নিছক পানাহারে বাঁচার মধ্যে কোন কল্যাণ নাই। সংখ্যায় বৃদ্ধিতেও কোন মর্যদা নাই। মর্যাদা তো কর্মের কারণে। কোর’আনে তাই বলা হয়েছে, “ওয়া লি কুল্লি দারাজাতিন মিম্মা আমিলু।” অর্থ: সকল মর্যাদা আমলের মধ্যে। সে মর্যাদা যেমন জুটে এ দুনিয়ায়, তেমনি আখেরাতে। আর নবীজী (সা:)’র হাদীস: সবচেয়ে মর্যাদাকর আমল হলো জ্ঞানার্জন করা ও জ্ঞানদান করা। তাই যারা জ্ঞানের রাজ্যে্ এগোয় তারাই মহান আল্লাহতায়ালার কাছে মর্যাদা পায়। সে জ্ঞানীরা মর্যাদা পায় বিশ্বমাঝেও। অপর দিকে জ্ঞানহীনতা নেয় পতনের পথে। মুসলিমদের আজকের পতন, পরাজয় ও মর্যদাহীনতার মূল কারণ, জ্ঞানের রাজ্যে পশ্চাদপদতা। প্রশ্ন হলো, এ জ্ঞানহীনেরা কি আখেরাতে কোন মর্যাদা পাবে?
৩. বাংলাদেশের রেকর্ড
পশু তাড়ানোর লোক না থাকলে জনপদ জুড়ে পশুরা রাজত্ব পায়। তেমনি দেশে চোরডাকাত তাড়ানো ও তাদের শাস্তি দেয়ার লোক না থাকলে রাজত্ব পায় চোরডাকাতেরা। তারই পারফেক্ট উদাহরণ হলো আজকের বাংলাদেশ। দেশের পুলিশ, আদালত ও সেনাবাহিনীর কাজ হয়েছে ডাকাতদের সুরক্ষা দেয়া। ফলে বাংলাদেশে জনগণের ভোট নির্বাচনের আগের রাতে ডাকাতি হয়ে গেলেও কেউ গ্রেফতার হয়না। সে অপরাধে কারো কোন শাস্তিও হলো না। জনগণের কাজ হয়েছে এ চোরডাকাতকে না তাড়িয়ে ডাকাত সরদারনীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলা। কোন সভ্য ব্যক্তি কি এমনটি করে? এটি তো ডাকাতপাড়ার সংস্কৃতি। অথচ এ অসভ্য সংস্কৃতিই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
৪. ডাকাত দলের রীতি
ডাকাত দলের সরদার কখনোই তার ডাকাত দলে ভাল লোককে নেয় না। কারণ, তাতে ডাকাতিতে সাহায্য মেলে না। তাই সে খোঁজে জঘন্য চরিত্রের অতিশয় ঝানু ডাকাতকে। তখন কদর পায় ডাকাতগণ। এবং অসম্ভব করা হয় ভাল মানুষের রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি ও ইজ্জত নিয়ে বাঁচা। তখন ভাল লোকের পক্ষে রাজনীতি ও সরকারে থাকা অসম্ভব হয়। দেশ তখন একটি জঙ্গলে পরিণত হয়। চোরডাকাত ও ভোটডাকাতদের হাতে দেশ অধিকৃত হওয়ার এটিই হলো সবচেয়ে বড় নাশকতা। এজন্যই হাসিনার কাছে জেনারেল আজিজের এতো কদর। কারণ, আজিজ উঠে এসেছে ডাকাত পরিবার থেকে; তার ৪ ভাই খুনি। এবং সে সাথে সে তার ডাকাতি কাজে বিপুল সামর্থ্য দেখিয়েছে ২০১৮ সালে ভোট ডাকাতিতে।
৫. জান্নাতের পথ ও জাহান্নামের পথ
জান্নাতে নানা বর্ণ, নানা অঞ্চল ও নানা ভাষার মানুষ পরস্পরে ভাইয়ের মত সৌহার্দ ও সম্পৃতি নিয়ে বসবাস করবে। সেখানে কোন বিবাদ ও বিভক্তি থাকবে না। ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলের উর্দ্ধে উঠে তাদের একটিই পরিচয় হবে যে তারা মুসলিম। ঈমানদারদের জন্য এটিই হলো মহান আল্লাহতায়ালার দেয়া একমাত্র পরিচয়। তাই যারা জান্নাতের যোগ্য হতে চায় তাদেরকে দুনিয়ার বুকে্ও সে ভাবে ভাতৃসুলভ মুসলিম পরিচয় নিয়ে বাঁচার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
সাহাবাগণ সে কাঙ্খিত সামর্থ্যটি অর্জন করেছিলেন। তারা বর্ণ, ভাষা, গোত্র ও আঞ্চলিক পরিচয়ের উর্দ্ধে উঠতে পেরেছিলেন। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালার দেয়া সে পরিচয় আজকের মুসলিমদের কাছে গুরুত্ব পায়নি। তারা বেছে নিয়েছে বর্ণ, ভাষা, গোত্র ও আঞ্চলিক পরিচয়ে বিভক্তির দেয়াল গড়ার পথ। মুসলিম উম্মাহ তাই ৫৭টি জাতীয় ও গোত্রী রাষ্ট্রে বিভক্ত। বাঙালী, আরব, কুর্দি, ইরানী, মালয়ী ইত্যাদি পরিচয় নিয়ে বেড়ে উঠাটাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিভক্তির পথ মাত্রই আযাবের পথ –সে কথা পবিত্র কোর’আনে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে। যারা পরকালে জান্নাত পেতে চায় তারা কি সে পথ বেছে নিতে পারে?
৬. বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেলখানা
যখন কোন ভূমির চারপাশে দেয়াল বা কাঁটা তারের বেড়া দেয়া হয় তখন সে জায়গাটা গরুছাগলের খোয়ার অথবা জেলখানায় পরিণত হয়। জেলের চার পাশে উঁচু দেয়াল বা কাঁটাতারের বেড়া থাকে। বাংলাদেশের চারপাশে সে বেড়া দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানী আমলে ভারত এরূপ বেড়া দেয়নি। এ দেয়াল একাত্তরের অর্জন। ফলে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেলখানায়।
জেলখানার বাসিন্দাদের কথাবলা, লেখালেখি ও মিটিং-মিছিলের স্বাধীনতা থাকে না। নির্বাচনে অংশ নেয়া ও ভোটদানের স্বাধীনতা থাকে না। বাংলাদেশীদেরও সে স্বাধীনতা নাই। এদেশে স্বাধীন ভাবে কথা বললে, লেখালেখি করলে বা মিটিং-মিছিল করলে নির্যাতিত হতে হয় এবং লাশ হতে হয়। এ হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা –যা নিয়ে আবার উৎসবও হচ্ছে!
৭. দশের ও দেশের ভাবনা নিয়ে বাঁচা
নিজের স্বার্থে ও নিজ পরিবারের স্বার্থে সবাই কিছু না কিছু করে। সেরূপ কাজটি পশু-পাখীও করে। কিন্তু দেশের কল্যাণে কে কতটুকু করে -সে হিসাব বা সে ভাবনা ক’জনে? সে ভাবনা নাই বলেই বাংলাদেশ আজ চোরডাকাতদের দখলে। অথচ কে কতটা কাজ দশের জন্য ও দেশের জন্য করলো -পরকালে সে হিসাবই গুরুত্ব পাবে। সে কাজের ভিত্তিতে জান্নাত জুটবে।
৮. পরাজয়ের পথ
মহান আল্লাহতায়ালা ঈমানদারদের একতা পছন্দ করেন। এবং তিনি ঘৃনা করেন তাদের অনৈক্যকে। যারা একতাবদ্ধ হয়, তাদেরকে তিনি বিজয় দেন। যারা বিভক্ত হয় তাদের পরাজয় দেন। মুসলিমগণ বিভক্তির পথ ধরেছে। ফলে তারা সর্বত্র পরাজিত। ১৯/০৩/২০২১।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- সেক্যুলারিস্টদের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ এবং যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে
- বাংলাদেশে হিফাজতে ইসলাম ও ইসলামের হিফাজতে ভয়ানক ব্যর্থতা
- তাবলীগ জামায়াত কতটা দূরে সরেছে ইসলাম থেকে?
- Bangladesh: A Tale of Success of a Robber and the Failure for the Opposition
- বাংলাদেশে সেক্যুলারিজমের তাণ্ডব এবং সংকটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Mohammad Arifur Rahman on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- সিরাজুল ইসলাম on জিন্নাহ’র সাদকায়ে জারিয়া ও মুজিবের গুনাহে জারিয়া
- Abdul Aziz on বিবিধ ভাবনা ৮২
- Fazlul Aziz on বাঙালি ও অবাঙালি মুসলিমের বৈষম্য এবং ফ্যাসিবাদী মিথ্যচার
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের তান্ডব: মুক্তি কীরূপে?
ARCHIVES
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018