বাংলাদেশ কেন একটি ব্যর্থ ও অপরাধী রাষ্ট্র?

ফিরোজ মাহবুব কামাল

বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রই  শুধু নয়, একটি ভয়ানক রকমের অপরাধী রাষ্ট্রও। বস্তুত দেশবাসীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধগুলি সংঘটিত হচ্ছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। রাষ্ট্রই হলো এই পৃথিবী পৃষ্ঠে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে দায়িত্ববান প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রই হলো জনগণের প্রকৃত অভিভাবক। প্রতিটি রাষ্ট্রেরই জনগণের প্রতি কিছু মৌলিক দায়িত্ব থাকে। সে কাজগুলি জনগণ অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে আশা করেনা। সে দায়িত্বগুলি রাষ্ট্র যথাযথ পালন কররে -এমন একটি প্রত্যাশা নিয়েই জনগণ রাষ্ট্রকে নিয়মিত রাজস্ব দেয়। কিন্তু সে মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সে রাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এবং সে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যখন জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয় বা অপরাধ কর্ম ঘটতে থাকলে -সে রাষ্ট্রকে সভ্য রাষ্ট্র না বলে বরং একটি অসভ্য ও অপরাধী রাষ্ট্র বলা হয়। কোন রাষ্ট্রই তার ভূমি বা জলবায়ুর কারণে ব্যর্থ ও অপরাধী হয় হয় না, সেটি হয় ব্যর্থ ও অপরাধী সরকারের কারণে। তাই বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ ও অপরাধী রাষ্ট্রে পরিণত করার দায়ভারটি দীর্ঘকালের ক্ষমতাসীন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের। 

বাংলাদেশ যে কীরূপ একটি ব্যর্থ ও‌ ভয়ানক চরিত্রের অপরাধী রাষ্ট্র –তা নিয়েই আলোচনা এ নিবন্ধ।রাষ্ট্রের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি হলো জনগণের জান-মাল ও ইজ্জত-আবরুর নিরাপত্তা দেয়া। রাষ্ট্রের উদ্ভদ হয়েছে মূলত এ প্রয়োজন মেটাতেই। অথচ রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ এ দায়িত্ব পালনে পুরাপুরি ব্যর্থ। তার প্রমাণ, এ দেশে মানুষ অহরহ গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে এবং অপহরণের শিকার হচ্ছে। এবং শত শত মহিলা হচ্ছে ধর্ষিতা ও খুন। কিন্তু এসবের প্রতিকারে রাষ্ট্র লাগাতর ব্যর্থ হচ্ছে। এবং ব্যর্থ হচ্ছে ঘুষ, চুরিডাকাতি, চাঁদাবাজী, পণবন্দী, সম্পদের জবর দখল ও সন্ত্রাসের ন্যায় অপরাধ থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতেও। রাষ্ট্রের এরূপ ব্যর্থতার কারণেই জনগণ পরিণত হয়েছে অপরাধীদের হাতে জিম্মি।

রাষ্ট্রের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি হলো স্বাধীনতার সুরক্ষা দেয়া। স্বাধীনতার সুরক্ষার অর্থ শুধু বিদেশী শত্রুর হামলা থেকে দেশের সীমান্ত পাহারা দেয়া নয়। বরং জনগণের ব্যক্তি-স্বাধীনতার পাহারা দেয়া। অর্থাৎ তাদেরকে  মৌলিক মানবাধিকার নিয়ে বাঁচার গ্যারান্টি দেয়া। জনগণ যাতে সংগঠিত হতে পারে, স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারে, লেখালেখী করতে পারে, মিটিং-মিছিল করতে পারে -সে অধিকারগুলিকে সর্বদা সুনিশ্চিত করা। কিন্তু বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রেও দারুন ভাবে ব্যর্থ। বরং রাষ্ট্র আবির্ভুত হয়েছে জনগণের শত্রু রূপে। উপরুক্ত অধিকারগুলি নিয়ে বাঁচাকে সুনিশ্চিত না করে বরং সেগুলি ছিনিয়ে নিচ্ছে। তারই প্রমাণ, সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সত্য কথা বলাও গণ্য হয় অপরাধ করে। স্বাধীন ভাবে লেখা বা কথা বলায় নির্যাতিত হতে হয়, জেল-জুলুম হয় এবং গুম ও লাশ হতে হয়। ‌

দেশের স্বাধীনতা বলতে বুঝায় জনগণের স্বাধীনতা। কিন্তু সে স্বাধীনতা বাংলাদেশে বেঁচে নাই।  এমনকি মসজিদের ইমামদের থেকে স্বাধীনভাবে খুতবা দেয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জু্ম্মার খুতবায় কি বলতে হবে -সরকার সেটিও লিখিত ভাবে ইমামদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তার বাইরে যাওয়ার স্বাধীনতা নাই। পত্রিকার কলামিস্টদের হাত থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে স্বাধীন ভাবে লেখালেখীর স্বাধীনতা। এমনকি পত্র শেষে কি লিখতে সে বিষয়েও সরকার হুকুম জারী করেছে। স্বাধীনতা ভোগ করছে কেবল শাসক দলের সদস্যগণ। এমন কি “জয় বাংলা”র আওয়ামী-বাকশালী স্লোগানকে সবার উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জনগণ আজ দারুন ভাবে পরাধীন। প্রশ্ন হলো, যে দেশের জনগণ নিজেরাই পরাধীন, সে দেশকে কি কখনো স্বাধীন বলা যায়? দেশবাসীর পরাধীনতাই রাষ্ট্রের ব্যর্থতার বড় দলিল।

রাষ্ট্রের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো আইনের শাসন ও সুবিচারকে নিশ্চিত করা। একটি রাষ্ট্র কতটা সভ্য ও সফল –সে বিচারটি হয় আইনের শাসন ও সুশাসন দেখে। এদিক দিয়ে বাংলাদেশের ব্যর্থতা বিশাল। রাজনৈতিক প্রয়োজনে এদেশে আদালত গঠন করা হয়, রাজনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা খাড়া কর এবং শীর্ষ বিরোধীনেতাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। সরকারী দলের নেতাকর্মীগণ স্লোগান দেয়, “বিচার নয়, ফাঁসি চাই।” দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও লাথি খেয়ে দেশ ছাড়তে হয়। বাংলাদেশের আদালতগুলোতে লক্ষাধিক মামলা বিচারাধীন। যদি কোন নতুন মামলা দায়ের নাও করা হয় তবুও যে মামলাগুলো ঝুলে আছে সেগুলো শেষ হতেই ১০০ বছরের বেশি সময় লাগবে। সুবিচার দিতে রাষ্ট্র যে কতটা ব্যর্থ এ হলো তার দলিল।

এছাড়া মামলার বিচার হলেই যে সুবিচার হবে -সে নিশ্চয়তা কোথায়? দেশে আইনের শাসন বলতে কিছুই নাই। বিচারকগণ পরিণত হয়েছে সরকারের চাকর-বাকরে। সরকারি দলের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করলেও তার বিচার হয় না। তারা চুরি-ডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি, শেয়ার মার্কেট লুট ও খুন করলেও শাস্তি হয় না। খুনের শাস্তিতে সরকারি দলের লোকেরা জেলবন্দী হলে প্রেসিডেন্টকে দিয়ে তাদেরকে ক্ষমা করিয়ে জেল থেকে মুক্ত করা হয়। ব্যর্থ বিচার ব্যবস্থাই ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রধান আলামত। সভ্য ও সফল রাষ্ট্র কখনোই অপরাধীদের পক্ষ নেয় না, বরং তাদের শাস্তি দেয়।

রাষ্ট্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুশিক্ষা নিশ্চিত করা। সবাইকে সুযোগ করে দেয় সামনে এগুনোর। সেদিক দিয়েও বাংলাদেশ অতি ব্যর্থ। রাষ্ট্র চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে সুশিক্ষা দিতে। দেশে শতাধিক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু এশিয়ার ৪০০টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও নাই। অথচ সে তালিকায় নেপালের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যতটা সার্টিফিকেট বিতরণ করে, সে তূলনায় জ্ঞান বিতরণ করে সামান্যই। যে জ্ঞান নিয়ে তারা বেরুচ্ছে তা দিয়ে কোন কিছু আবিস্কার দূরে থাক, নিজ দেশের গার্মন্টস শিল্প চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা দেখাতে পারছে না। ফলে দক্ষ ও শিক্ষিত জনশক্তির শূণ্যতাটি পূরণ করতে হচ্ছে ভারতীয় গ্রাজুয়েটদের আমদানী করে।

রাষ্ট্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো নিয়মিত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছামত ভোট দেয়ার অধিকারকে সুনিশ্চিত করা। রাষ্ট্রের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটে। জনগণ এই ভোটের মাধ্যমেই সরকারের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। এ ভোটের মাধ্যমেই জনগণ অযোগ্য ও অপরাধী সরকারকে শাস্তি দেয়। এ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। রাষ্ট্রের সরকার যখন জনগণকে নিজেদের শত্রু মনে করে একমাত্র তখন জনগণ থেকে সে অধিকারটি কেড়ে নেয়। একটি দেশ কতটা সফল ও সভ্য এবং সে দেশের জনগণ কতটা অধিকার ভোগ করে সেটি বুঝা যায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের মাত্রা দেখে। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্র জনগণকে সে অধিকার দিতে চুড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের অঙ্গণে সরকারি প্রশাসন নেমেছে ডাকাত রূপে। তারা ডাকাতি করেছে জনগণের ভোটের উপর। এভাবে ছিনতাই করে নিয়েছে জনগণের ভোট। সেটি যেমন ২০১৪ সালের নির্বাচনে হয়েছে, তেমনি হয়েছে ২০১৮ সালের নির্বাচনে। তাই বাংলাদেশে রাষ্ট্রটি পুরাপুরি হাইজ্যাক হয়ে গেছে ভোটডাকাতদের হাতে। প্রশ্ন হলো, যে রাষ্ট্র নিজেকে ভোটডাকাতদের থেকে হাইজ্যাক হতে বাঁচাতে পারে না, সে রাষ্ট্র দেশবাসীকে কি সুরক্ষা দিবে? এভাবেই তো একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

অথচ একটি মুসলিম দেশের সরকারের মূল দায়িত্বটি হলো, “আ’মিরু বিল মারুফ ওয়া নেহী আনিল মুনকার” অর্থ: ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়-দুর্বৃত্তির নির্মূল। প্রতি মুসলিমের উপর এটি নামাজ-রোজার ন্যায় ফরজ। এ কাজ নিয়ে বাঁচাই মুসলিম জীবনে জিহাদ। রাষ্ট্র এ কাজে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। কিন্তু বাংলাদেশে হচ্ছে উল্টোটি। রাষ্ট্রের এজেন্ডা হয়েছে অন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়ের নির্মূল। এ এজেন্ডা নিয়েই রাষ্ট্র ভোট ডাকাতিকে বিজয়ী করেছে এবং নির্মূল করেছে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন। অথচ একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা কোন জটিল বিজ্ঞান নয়। এমনকি নেপালও সেটি পারে। কিন্তু বাংলাদেশ সেটি পারে না। কারণ, বাংলাদেশের ন্যায় একটি রাষ্ট্র সেটি পারে না বলেই তো সেটি ব্যর্থ রাষ্ট্র।

একটি ব্যর্থ ও অপরাধী রাষ্ট্রের আলামত হলো ভোটডাকাতি। এখানে ডাকাত রূপে জনগণের সামনে হাজির হয় খোদ রাষ্ট্র ও তার কর্মচারি। ২০১৮ সালের ভোটডাকাতির নির্বাচেনর পর বাংলাদেশ ছিনতাই হয়ে গেছে ডাকাতদের হাতে। এই রাষ্ট্রে জনগণ পরিণত হয়েছে অধিকারহীন প্রজায়। ডাকাতি থামাতে যে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয় সে রাষ্ট্রই যে নিদারুন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হবে -সেটিই তো স্বাভাবিক। ডাকাত পাড়ায় বড় বড় প্রাসাদ উঠতে পারে। ডাকাতদের আয় বা জিডিপিও বাড়তে পারে। কিন্তু সে জন্য কি ডাকাত পাড়াকে সভ্য জনপদ বলা হয় না।  তেমনি ডাকাতি হয়ে যাওয়া একটি রাষ্ট্রকে কি সভ্য রাষ্ট্র বলা যায়?

রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো দেশের উন্নয়ন ও প্রশাসনে প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার দেয়া। কারণ, রাষ্ট্র সবার, এবং রাষ্ট্রের উপর অধিকারও সবার সমান। জনগণের সে ন্যায্য অধিকারটি হলো সরকারি প্রশাসনের চাকুরী-বাকুরীতে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়ার। কিন্তু সরকার সে অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখানে চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয় দলীয় কর্মীদের। ফলে যোগ্য ব্যক্তিরা দেশের উন্নয়নে অংশ নিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটিও একটি ব্যর্থ ও অপরাধী রাষ্ট্রের আলামত।

রাষ্ট্রের আরো দায়িত্ব হলো দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিুষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অবাধ সুযোগ দিয়ে নিজ নিজ যোগ্যতার বিনিয়োগের অবাধ সুযোগ করে দেয়া। রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ এক্ষেত্রেও ব্যর্থ। ব্যবসা-বাণিজ্য কুক্ষিগত হয়ে গেছে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হাতে। অন্যরা ব্যবসায় নামলে সরকার দলীয় ক্যাডারদের চাঁদাবাজীর প্রকোপে তারা ব্যবসা ছাড়তে হচ্ছে। এমন কি সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দের বেশীর ভাগ চলে যাচ্ছে শাসক দলের নেতাদের পকেটে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিণত হয়েছে অপরাধের হাতিয়ারে। 

বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ ও ভয়ানক চরিত্রের অপরাধী রাষ্ট্র তার আরো দলিল হলো, দেশবাসীর যত সম্পদ বেসরকারি চোরডাকাতদের হাতে লুণ্ঠিত হয় -তার চেয়েও বহুশত গুণ বেশী চুরি-ডাকাতি হয়ে যায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বসে থাকা চোরডাকাতদের হাতে। এবং যত মানুষ বেসরকারি খুনিদের হাতে খুন হয় তার চেয়ে বেশী খুন হয় পুলিশ, RAB, বিজিবী, সেনাবাহিনীর ন্যায় সরকারি বাহিনীর সশস্ত্র ব্যক্তিদের হাতে। শাপলা চত্বরের গণহত্যা, পিলখানার অফিসার হত্যার ন্যায় নৃশংস হত্যাকান্ডগুলো তো তাদের হাতেই সংঘটিত হয়েছে। সরকারি বাহিনীর হাতে শত শত নিরীহ মানুষ খুন হয়েছে ক্রস ফ্যায়ারের নামে। অতীতে বেসরকারি খুনিদের হাতে এতো খুনের কান্ড কখনোই হয়নি। অথচ কি বিস্ময়, এরূপ একটি ব্যর্থ ও অপরাধী রাষ্ট্রের প্রতিপালনে দেশবাসীকে রাজস্ব দিতে হয়!

সভ্য ও ভদ্র মানুষদের দেশ অপরাধীদের দখলে গেলে সেখানে যুদ্ধ শুরু হয়। তারা নির্মূল করে অপরাধীদের। কারণ, সভ্য ও ভদ্র মানুষেরা যেমন গৃহ থেকে আবর্জনা সরায়, তেমনি রাষ্ট্রের বুক থেকেও আবর্জনা সরায়। অপর দিকে প্রকৃত মুসলিমদের দেশে জিহাদ শুরু হয়ে যায়। কারণ, ইসলামে “দুর্বৃত্তির নির্মূল ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা”র যুদ্ধটি পবিত্র জিহাদ তথা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতে। এ ইবাদতে অর্ধেকের বেশী সাহাবী শহীদ হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যাগিরষ্ঠ মুসলিমের একটি দেশ হলে কি হবে, এ দেশে জিহাদ নাই। বরং জনগণ বাঁচছে আবর্জনার মাঝে হাবুডাবু খেয়ে। এবং ভোটডাকাত অপরাধীকে শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে। তাই ব্যর্থতা ও অপরাধ শুধু রাষ্ট্রের নয়, জনগণেরও। এবং জনগণ নিজেরাই যখন অপরাধী হয়, করুণাময় মহান আল্লাহতায়ালা কি কখনো তাদের সহায় হন? বিদ্রোহী ও অপরাধীদের শাস্তি দেয়া মহান আল্লাহতায়ালার সূন্নত, তাদেরকে সাহায্য করা নয়। পবিত্র কুর’আনের ঘোষণা: “যারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে না, তাদের অবস্থা আল্লাহও পরিবরর্তন করেন না।” ১৬/০৩/২০২২।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *