বিবিধ ভাবনা-৩

                                       ফিরোজ মাহবুব কামাল                      

১.

ঈমানদার হ্‌ওয়ার পুরস্কার যেমন বিশাল, তেমনি বিশাল হলো দায়বদ্ধতাটিও।  তাকে বাঁচতে হয় মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পবিত্র মিশন নিয়ে। সে মিশনের মূল কথাঃ প্রতিটি মানুষ আমৃত্যু সচেষ্ট হবে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং সকল প্রকার অন্যায়ের নির্মূলে। এভাবেই বিজয় আসে ইসলামের এবং নির্মিত হয় সভ্যতর ব্যক্তি,সমাজ ও রাষ্ট্র। ঈমানদার ব্যক্তি তখন বেড়ে উঠে জান্নাতের যোগ্য রূপে। মুসলিম রাষ্ট্রে  তখন প্রতিষ্ঠা পায় অনাবিল শান্তি, শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধি। ইসলাম যে শান্তির ধর্ম একমাত্র তখনই সেটি ধরা পড়ে। তখন মুসলিম জনপদে সৃষ্টি হয় জান্নাতের পথ চেনা এবং সে পথে চলার সামর্থ্য। মানব জীবনে এটিই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ মিশন। নামায-রোযা বস্তুতঃ সে পবিত্র মিশনের জন্যই ব্যক্তিকে প্রস্তুত করে। যেমন পবিত্র কোর’আনে ঘোষিত হয়েছে, “ইন্নাস সালাতা তানহা আনিল ফাহশা ওয়াল মুনকার।” অর্থঃ নামায অশ্লিলতা ও অন্যায় কাজ থেকে দূরে রাখে।কিন্তু যে দেশে লক্ষ লক্ষ মসজিদ এবং কোটি কোটি নামাযী সে দেশ যদি গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারের প্লাবন সৃষ্টি করে সে দেশবাসীর নামায কতটুকু সত্যিকারের নামায?    

মহান আল্লাহতায়ালা স্রেফ নামায-রোযার সংখ্যা দেখেন না, বরং দেখেন সে নামায-রোযা ব্যক্তির জীবনে কতটা সৎ কর্মের জোয়ার আনলো সেটি। দুর্বৃত্তদের নির্মূলে এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় কে কতটা জান, মাল, শ্রম ও মেধার বিনিয়োগ করলো রোজ হাশরের বিচার দিনে সেটিই সবচেয়ে অধীক গুরুত্ব পাবে। এভাবে বাঁচাতে ব্যক্তির মাঝে তখন গড়ে উঠে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে মাগফিরাত লাভ ও জান্নাতের জন্য যোগ্য রূপে গড়ে উঠার সামর্থ্য। মুসলিমগণ যেহেতু এমন একটি মিশন নিয়ে বাঁচে -তাই মহান আল্লাহতায়ালা সুরা আল-ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে তাদেরকে সর্বশ্রষ্ঠ উম্মত বা জনগোষ্ঠি রূপে আখ্যায়ীত করেছেন। এ পবিত্র মিশন নিয়ে বাঁচার ফজিলত যে কতটা বিশাল সেটি প্রমাণ করেছেন নবীজী (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবাগণ। তাদের হাতে গড়ে  উঠেছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা। এভাবে পরবর্তীদের জন্য পথ দেখিয়েছেন কীরূপে সে মিশন নিয়ে বাঁচতে হয়। তবে এ পবিত্র মিশন নিয়ে বাঁচার সবচেয়ে বড় নিয়ামতটি হলো, তখন ব্যক্তির মাঝে গড়ে উঠে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে মাগফিরাত লাভ ও জান্নাত লাভের যোগ্যতা  নিয়ে বেড়ে উঠার সামর্থ্য। এবং সামর্থ্যটুকুই হলো মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে সামর্থ্য অর্জিত না হলে যা অনিবার্য হয় তা হলো জাহান্নামের আগুন।

২.

আজকের মুসলিমগণ ইতিহাস গড়েছে সীমাহীন ব্যর্থতা ও কদর্যতায়। এর কারণ, যে ইসলাম নিয়ে তারা বাঁচছে সেটি আদৌ নবীজী (সাঃ)র ইসলাম নয়। মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পথ ছেড়ে  তারা বাঁচছে শয়তানের এজেন্ডা নিয়ে। শয়তানের এজেন্ডা হলো ভাষা, বর্ণ, আঞ্চলিকাতার নামে মুসলিমদের বিভক্ত করা ও সে বিভক্তি নিয়ে কলহে লিপ্ত রাখা। মুসলিমদের  দুর্বল রাখার এ হলো শয়তানী কৌশল। মুসলিমগণ শয়তানের সে কৌশলকেই নিজেদের রাজনীতি ও সংস্কৃতি বানিয়ে নিয়েছে। মুসলিমদের  উদ্দেশ্যে শয়তানের পাঠটি হলো, অখন্ড মুসলিম ভূমিতে ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলের ভিন্নতা থাকলে সে ভিন্নতার পরিচয় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রও হতে হবে। শয়তান গুরুত্ব দেয় ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলের পরিচয়ে ভৌগলিক বিভক্তিকে। তাই ১৯৭১’য়ে বাঙালী মুসলিমদের কাছে গুরুত্ব পায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর বাংলাদেশ নির্মাণ। শয়তানের এরূপ প্ররোচনায় তারা কাফেরদের থেকেও নিচে নেমেছে। মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি চাইলেও শয়তান চায় তার নিজ দলীয় কাফেরদের মাঝে দৃড় একতা। তাই অখন্ড এক ভারতীয় ভূখন্ডে একত্রে বসবাস করছে বাঙালী, বিহারী, পাঞ্জাবী, গুজরাতী,মারাঠি, তামিল এরূপ নানা ভাষা ও নানা বর্ণের কাফেরগণ। এবং এভাবে জন্ম দিয়েছে শক্তিশালী এক হিন্দু রাষ্ট্রের। অথচ এরূপ একতাবদ্ধ হওয়াটি হিন্দু ধর্মের বিধান নয়। অপর দিকে মুসলিমগণ আজ ৫৭টি রাষ্ট্রে বিভক্ত। অথচ মুসলিমদের উপর একতাবদ্ধ হওয়াটি ফরজ। এবং বিভক্ত হওয়া হারাম। মহান আল্লাহতায়ালা বিভক্ত হওয়ার বিরুদ্ধে তীব্র হুশিয়ারিটি জানিয়েছেন সুরা আল-ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে। বলেছেন, “তোমরা  আল্লাহর রশি তথা কোর’আনকে আঁকড়ে ধরো এবং  পরস্পরে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” মুসলিমদের মাঝে বিবাদ থাকতেই পারে, কিন্তু ভৌগলিক বিভক্তি তার সমাধান নয়। বরং এরূপ বিভক্তি যে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে ভয়ানক আযাব ডেকে আনবে সে হুশিয়ারিটি শোনানো হয়েছে সুরা আল-ইমরানের ১০৫ নম্বর আয়াতে। ক্ষুদ্রতা শুধু পরাজয় ও গোলামীই বাড়াতে পারে। বিজয় ও গৌরব নয়। তাই একাত্তরে যে ভারতের গোলামী বাঙালী মুসলিমদের উপর চেপে বসেছে তা থেকে কি বেরুনোর উপায়। মুসলিমগণ অতীতে তখনই বিজয় ও গৌরব পেয়েছে যখন তারা আরব, তুর্কী, কুর্দি, ইরানী, মুর এসব ভিন্নতা ভূলে এক উম্মতে ওয়াহেদা সৃষ্টি করেছে। তখন এসেছ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যও।

৩.

শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে কাফেরদের জীবন থেকেও। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরগণ কীরূপ একতাবদ্ধ সে দিকে নজর দিতে এবং তা থেকে ছবক নিতে বলা হয়েছে সুরা আনফালের ৭৩ নম্বর আয়াতে।আরবের কাফেরগণ নানা বিবাদ নিয়ে বছরের পর যুদ্ধ করতো। কিন্তু ইসলাম ও মুসলিমদের নির্মূলে তারা ছিল একতাবদ্ধ। খন্দকের যুদ্ধে ১০ হাজার সৈন্যের এক সংঘবদ্ধ বাহিনী নিয়ে তারা মদিনার উপর হামলা করেছিল। সে চিত্রটি আজও অভিন্ন। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ৪০টি কাফের দেশের সেনাবাহিনীকে দেখা গেছে আফগানিস্তান এবং ইরাকের উপর দখলদারি জমাতে। তাই একাত্তরে পাকিস্তান ভাঙ্গতে ভারত একা ছিল না, পাশে ছিল রাশিয়াসহ আরো বহু কাফের দেশ।

ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলের নামে যে ব্যক্তি মুসলিম দেশের মানচিত্র খন্ডিত করে সে ব্যক্তি নামাযী বা রোযাদার হতে পারে, সে যে  প্রকৃত ঈমানদার নয় তা নিয়ে কি সামান্যতম সন্দেহ থাকে? বরং ঈমানদার তো তারাই যারা নিজেদের মাঝের ভাষা, বর্ণ ও আঞ্চলিক ভিন্নতা ভূলে সীসা ঢালা দেয়ালের ন্যায় একতার দুর্ভেদ্য দেয়ালের ন্যায় দাঁড়িয়ে জিহাদ করে। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে তারাই যে সর্বাধিক প্রিয় -সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা সাফ’য়ের ৪ নম্বর আয়াতে। অপর দিকে বিভক্তি যে মহান অআল্লাহর পক্ষ থেকে অভিসম্পাত ও ভয়ানক আযাব ডেকে আনে -সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা আল-ইমরানের ১০৫নম্বর আয়াতে। তাই একাত্তরে পাকিস্তান ভাঙ্গার কাজে কোন ইসলামী দল, কোন পীর-মাশায়েখ, মাদ্রাসার কোন ছাত্র-শিক্ষক বা মসজিদের কোন ইমাম-মোয়াজ্জিন জড়িত ছিল না। এটি ছিল ইসলামচ্যুৎ সেক্যুলারিষ্টদের কাজ। ইসলামচ্যুৎ এ ইতর ব্যক্তিদের কুকর্ম যেমন একাত্তরে দেখা গেছে তেমনি দেখা যাচ্ছে আজও। শুধু অবাঙালী হওয়ার কারণেই এরা হাজার বিহারীকে হত্যা করেছ এবং তাদের মহিলাদের উপর ধর্ষণ চালিয়েছে। এরাই আজ বাংলাদেশে গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। 

৪.

বাংলাদেশের বুকে শয়তানের বিজয়টি বিশাল। কারণ, এ মুসলিম ভূমিতে শয়তানের অনুসারিদের সংখ্যাটি বিশাল। শয়তানের এজেন্ডা হলো, জনগণকে জান্নাতের পথ থেকে দূরে রাখা চলা। সে লক্ষ্য অর্জনে শয়তানের কৌশলটি হলো, ইসলামের কোর’আনি বিধানকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিক্ষা-সংস্কৃতির অঙ্গণে পরাজিত রাাখা। এবং আদালতে শরিয়তের আইনকে স্থান না দেয়া। এভাবে বিপুল সাফল্য পেয়েছে মানুষকে জাহান্নামে নেয়ার শয়তানী প্রকল্প। বাংলাদেশে আজ যেরূপ গুম,  খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও সীমাহীন স্বৈরাচারের বিজয় তা তো এ শয়তানী প্রকল্প বিজয়ী হওয়ার কারণেই।

অপরদিকে বাংলাদেশে যারা নিজেদের মুসলিম রূপে পরিচয় দেয় তাদের ব্যর্থতাটি বিশাল। বিপুল সংখ্যক মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়লেও তারা চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে সভ্যতর সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণে। তারা ইতিহাস গড়েছে গুম, খুন, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি, স্বৈরাচার, সন্ত্রাসের ন্যায় নানারূপ দুর্বৃত্তিতে। যে পবিত্র মিশন নিয়ে মুসলিমদের বাঁচতে হয় সে মিশন থেকে তারা বহু দূরে সরেছে। ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের নির্মূলকে প্রতিহত করার কাজে সবচেয়ে জঘন্য কাজটি করছে দেশের প্রশাসনিক রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো। এটি পরিণত হয়েছে শয়তানের হাতিয়ারে এবং অসম্ভব করে রেখেছে শরিয়তের প্রতিষ্ঠাকে।   

৫.

কে কি বললো বা লিখলো তা প্রতিটি ব্যক্তির জীবনেই অতি গুরুত্বপূর্ণ। কে কতটা ঈমানদার বা বেঈমান -তা ধরে পড়ে তার কথা,কর্ম ও লেখনীতে। বস্তুতঃ কথা, কর্ম ও লেখনীর মাধ্যমেই প্রকাশ পায় ব্যক্তির ঈমান। এবং তখন ধরা পড়ে কে সত্যের পক্ষে বা বিপক্ষে। অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামের আগুনে পড়বে খুন, ব্যাভিচার বা চুরি-ডাকাতির কারণে নয়, বরং নমরুদ, ফিরাউনের ন্যায় মিথ্যাচারীর­ পক্ষ নেয়াতে। ইতিহাসের নমরুদ ও ফিরাউন মারা গেলেও প্রতি সমাজে অসংখ্য নমরুদ-ফিরাউন আজ বেঁচে আছে তাদের আদর্শ ও মিথ্যাচার নিয়ে। প্রতি সমাজে এরাই হলো ইসলামের প্রতিপক্ষ।এদের ষড়যন্ত্রের কারণেই দেশে দেশে ইসলামের পক্ষের শক্তি আজ পরাজিত। এবং আদালত থেকে বিলুপ্ত হয়েছে শরিয়তি বিধান। দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে তাদের  সৃষ্ট মিথ্যাচারের প্রবল জোয়ারের কারণে অতিশয় কঠিন হয়েছে সিরাতুল মোস্তাকীমের পথে চলা।তাই জাহান্নামে আগুন থেকে বাঁচার জন্য শুধু নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাতই যথেষ্ট নয়, বরং অতিশয় জরুরী হলো ইসলামের শত্রুপক্ষকে চেনা এবং তাদের মিথ্যাচার থেকে নিজেকে দূরে রাখা। এবং আরো জরুরী হলো, তাদের নির্মূলে নিজের জান-মাল ও প্রতিভার বিনিয়োগ করা।

৬.

প্রশ্ন হলো, ইসলামের শত্রুপক্ষকে চেনা এবং তাদের মিথ্যাচার থেকে নিজেকে দূরে থাকার ক্ষেত্রে বাঙালী মুসলিমদের সাফল্য কতটুকু? বাংলাদেশে যারা ইসলামের শত্রুপক্ষ তাদের কথা ও কাজকর্ম গোপন কিছু নয়। তারা ঘোষনা দিয়েই ইসলামের বিরোধীতা করে। ইসলামপন্থিদের উপর অত্যাচার করে এবং তাদেরকে  হত্যাও করে। নবীজী (সাঃ)’র যে ইসলামে জিহাদ ছিল, ইসলামী রাষ্ট্র ছিল, শরিয়তের প্রতিষ্ঠা ছিল এবং মুসলিম উম্মাহর মাঝে রাষ্ট্রীয় সীমারেখাহীন ঐক্য ছিল -সে ইসলামে ফিরে যাওয়াকে তারা মৌলবাদী সন্ত্রাস বলে। তাদের নির্মূলে তারা কাফেরদের সাথে কোয়ালিশনও গড়ে।

বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তীব্রতর হয় শেখ মুজিবের হাতে। ভারতীয় কাফের শাসকচক্রের অতি বিশ্বাসভাজন লোক ছিল মুজিব।  ক্ষমতায় এসেই সে নিষিদ্ধ করে সকল ইসলামী দলকে। নাস্তিক কম্যুনিষ্টদের রাজনৈতিক অধিকার দিলেও সে অধিকার দেয়নি দেশের ইসলামপন্থিদের। ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল মুজিবের কাছে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই তার আমলে ইসলামী ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের স্থান হয় কারাগারে।মুজিব ছিল ভারতের কাফের শক্তির একনিষ্ঠ দালাল, ভারতের সাথে স্বাক্ষর করে ২৫ সালা দাসচুক্তি। ভারতীয়দেরকে খুশি করতে দেন পদ্মার পানি তুলে নেয়ার অবাধ অধিকার। গণতন্ত্র হত্যা করে চালু করে একদলীয় বাকশালী শাসন।চালু করে বিচার বহির্ভূত হত্যা যাতে প্রাণ নাশ করা হয় প্রায় ৩০ হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীর। কথা হলো, এমন একজন অপরাধী ব্যক্তিকে কি দেশের নেতা, বন্ধু বা জাতির পিতা বলা যায়? একজন ডাকাত তার ডাকাত দলের সর্দারকে নেতা, পিতা বা বন্ধু বলতে পারে, কারণ এটি তার দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়। কিন্তু  একজন ভদ্রলোক কেন অপরাধীকে নেতা, পিতা বা বন্ধু বলবে? একাজ তো মুজিবভক্ত দুর্বৃত্তদের। অন্যায় করাটাই শুধু নয়, গুরুতর অপরাধ হলো একজন প্রমাণিত অপরাধীকে সম্মান দেখানো। একই রূপ আচরণ হচ্ছে মুজিব কন্যা শেখ হাসিনার সাথে। হাসিনা যে ভোট চোর ও খুনি -সেটি তো বহুবার প্রমানিত হয়েছে। চোরকে চোর এবং খুনিকে খুনি বলার মধ্যেই তো সততা। তাকে পিতা, বন্ধু, নেতা বা প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসালে কি গুণী ও সভ্য মানুষের সন্মান থাকে? এ কাজ তো দুর্বৃত্তদের। তাতে মৃত্যু ঘটে বিবেকের। তাতে বিলুপ্ত হয় ঈমান। বাংলাদেশীদের জন্য ভয়ানক বিপদের কারণ হলো, বাংলাদেশের রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, প্রশাসন, আইন-আদালত পরিণত  হয়েছে বিবেক হত্যার জঘন্য হাতিয়ারে। ফলে মুজিব ও হাসিনার ন্যায় দুর্বৃত্তগণও জনগণের মাথায় উঠতে পেরেছে। ১০/১০/২০২০     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *