বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা: আত্মঘাতের হাতিয়ার

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 ইন্ডাস্ট্রি দুর্বৃত্ত উৎপাদনের

পানাহার দেহকে বাঁচায়। শিক্ষা বাঁচায় রুহ, বিবেক ও মানবিক গুণকে। সুশিক্ষার গুণে মানুষ যেমন ফেরেশতা হতে পারে, তেমনি কুশিক্ষার কারণে ভয়ানক দুর্বৃত্তও হতে পারে। তাই পানাহারের পর মানব জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সুশিক্ষা। পশু-পাখিও পানাহার জোগার করতে পারে। কিন্তু মানব জীবন ব্যর্থ হয় সুশিক্ষা না পাওয়াতে। শিক্ষাঙ্গণ শুধু জ্ঞানের বিকাশই ঘটায় না; মিথ্যাচার, ঘৃণা-বিদ্বেষ এবং মানবতাধ্বংসী মতবাদের প্লাবনও আনে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিণত হতে পারে দুর্বৃত্ত উৎপাদনের ইন্ডাস্ট্রিতে। স্বৈরাচার, ফ্যসিবাদ, বর্ণবাদ, জাতীয়তাবাদ, উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং কম্যুনিজমের ন্যায় মানব-নাশী মতবাদগুলির জন্ম বনজঙ্গলে হয়নি, বরং হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে। এ মতবাদগুলির নাশকতা বিষাক্ত রোগ-জীবাণু ও সুনামী-ভূমিকম্পের চেয়েও অধিক। মানব জাতির সমগ্র ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী লোকক্ষয় মহামারী বা সুনামী-ভূমিকম্পের কারণে হয়নি। হয়েছে শিক্ষাঙ্গণে বেড়ে উঠা মানবরূপী ভয়ানক দানবদের হাতে। বিগত দুটি বিশ্বযুদ্ধেই তারা সাড়ে সাত কোটি মানুষকে হত্যা করেছে এবং মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে বহু হাজার নগর-বন্দর। ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে প্রতিষ্ঠা দিতে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে যারা গতহত্যা ও গণনির্মূলে নেতৃত্ব দিয়েছে তারাও কোন গুহাবাসী ছিল না। বরং তারা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছে অক্সফোর্ড, কেম্ব্রিজ ও হার্ভাডের ন্যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। জার্মানীতে যারা বহু লক্ষ ইহুদীকে গ্যাস চেম্বারে পুড়িয়ে মারলো তারও নিরক্ষর ছিল। তারা গড়ে উঠেছে জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যারা হিরোশিমা ও নাগাসাকরির উপর পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করেছে, তারাও বনের পশু ছিল না। ভারতের বুকে যে কোটি কোটি মানুষ গরু-ছাগল, সাপ-পেঁচা, পাহাড়-পর্বত ও মুর্তিকে দেবতা মনে করে এবং মুসলিমদের নির্মূলে গণহত্যায় নামে -তারা কি কোন বন-জঙ্গলের বাসিন্দা? তাদেরও অনেকেই কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। ডিগ্রি নেয়া এবং জ্ঞানী ও বিবেকমান হওয়া যে এক নয় –তার প্রমাণ তো ডিগ্রিধারীদের নৃশংসতার ইতিহাস।        

বা্ংলাদেশের ইতিহাসেও এরূপ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাশকতা কি কম? যারা ২০১৪ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে মুসল্লিদের উপর গণহত্যা ঘটালো -এরা কি বনে জঙ্গলে বেড়ে উঠেছে? এরাও বেড়ে উঠেছে দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সামরিক ও পুলিশ এ্যাকাডেমিগুলিতে। ক’মাস আগে এদেরই দলবদ্ধ ভাবে দেখা গেছে নিরাপদ সড়কের দাবীতে রাস্তায় নামা যায় কিশোরীদের উপর যৌন সন্ত্রাসে। এরাই থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাস্তায় নারীদের বিবস্ত্র করে নিজেদের যৌন লালসা পূরণ করে। বুয়েট নিরপরাধ ছাত্র আবরার ফাহাদকে এরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বাংলাদেশে যেরূপ গুম, খুন, চুরিডাকাতি, ভোটডাকাতি, সন্ত্রাস ও ধর্ষণে প্লাবন -তার কারণ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা। এ শতাব্দীর শুরুতে পর পর ৫ বছর বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে প্রথম হয়েছে। এরূপ বিশ্বজুড়া অপমানটিও দেশের নিরক্ষর কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি ও জেলেদের কারণে অর্জিত হয়েছে। হয়েছে তাদের হাতে যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তাদের চরম ব্যর্থতাটি মানুষ হওয়ায়। এবং ব্যর্থতার জন্য দায়ী পানাহার নয়, বরং শিক্ষা।

ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের বিনাশে সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার নাশকতাটি ভয়ানক। মুসলিমগণ আজ যেরূপ বিভক্ত, শক্তিহীন এবং দূরে সরেছে ইসলাম থেকে -তার মূল কারণ মুসলিম দেশগুলির শিক্ষা ব্যবস্থা। এ শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু ঈমানদার হওয়াই অসম্ভব করেনি, অসম্ভব করেছে মানবিক গুণে বেড়ে উঠা। শিক্ষাই চেতনা, দর্শন ও বিবেক নির্মাণ করে। বাংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশগুলিতে শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলিমদের চেতনালোকে যে জীবন-দর্শন, মূল্যবোধ ও ধ্যান-ধারণার জন্ম দিয়েছে সেটি আদৌ ইসলামের নয়। ইসলামের শিক্ষা স্রেফ মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা নয়; বরং ভাষা, বর্ণ, ভূগোল বা অঞ্চলের উর্দ্ধে উঠে মুসলিমদের মাঝে ভাতৃত্বের বন্ধন গড়া। এরূপ কসমোপলিটানিজমকেই বলা হয় প্যান-ইসলামিজম। এতে ব্যক্তির ঈমান গুরুত্ব পায়, তার ভাষা, গায়ের রং, গোত্র ও ভৌগলিক পরিচয় নয়। নবীজী (সা:)’র হাদীস: “সে আমাদের নয় (অর্থাৎ আমার উম্মত নয়) যে গোত্রের জন্য যুদ্ধ করে, সে আমাদের নয় যে গোত্রের জন্য মারা যায়।” -(আবু দাউদ শরীফ, হাদীস নম্বর ৫১২১)। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা সুয়ুতীর মতে হাদীসটি সহিহ। এখানে গোত্রের নামে যুদ্ধ করা ও প্রাণ দেয়াকে উম্মতে তালিকা থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার ন্যায় ঘৃণ্য অপরাধ রূপে চিত্রিত হয়েছে। তবে এ অভিন্ন অপরাধটি তাদেরও যারা জাতি ও বর্ণের নামে যুদ্ধ করে ও প্রাণ দেয়। কারণ, গোত্রবাদ, বর্ণবাদ ও জাতীয়তাবাদ এগুলি হলো একই পরিবারভুক্ত হারাম মতবাদ। এবং এগুলির যুদ্ধ ইসলামের প্যান-ইসলামিক মুসলিম ভাতৃত্বের বিরুদ্ধে। এরা মুসলিম উম্মাহর মাঝে গড়েছে ভাষা, ভূগোল ও অঞ্চলের নামে বিভক্তির দেয়াল গড়েছে এবং একে অপরকে ঘৃণা করতে শিখেছে। ফলে মুসলিম উম্মাহ খণ্ডিত, দুর্বল ও পরাজিত হয়েছে। বাংলাদেশে পতিতাপল্লী, অশ্লীল নাচগান, সূদী ব্যাংক, জুয়ার আখড়া ও মদের ব্যবসা যেমন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তেমনি রাজনীতিতে বিজয় পেয়েছে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ন্যায় হারাম মতবাদ। মুজিব এ হারাম মতবাদটিকে জনগণের রায় না নিয়েই বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত করে। প্রশ্ন হলো, এরূপ হারাম মতবাদের অনুসারীগণ কি বনজঙ্গলে বা কাফেরদের ঘরে বেড়ে উঠেছে? তারা তো বেড়ে উঠেছে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে।       

ইসলামে বাধ্যতামূলক শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত নয়, বাধ্যতামূলক হলো ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং অনৈক্যকে পরিহার করা। একতাবদ্ধ হওয়ার হুকুম এসেছে সুরা আল ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে। বলে হয়েছে আল্লাহতয়ালার রশি পবিত্র কুর’আনকে শক্ত ভাবে এবং একতাবদ্ধ ভাবে ধরতে। এবং সাবধান করা হয়েছে বিভক্ত না হতে। কথা হলো, মহান আল্লাহতায়ালার হুকুম যেখানে সুস্পষ্ট, সে হুকুম অমান্য করলে কি ঈমান থাকে? কুর’আনী হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তো কাফিরে পরিণত করে। সুরা সাফ’য়ের ৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালার ঘোষণাটি হলো, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ভালবাসেন যারা লড়াই করে তাঁর রাস্তায় সীসাঢালা দেয়ালের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে।” এর অর্থ দাড়ায়, যারা অনৈক্য গড়ে তারাই তাঁর হুকুমের অবাধ্য হয় এবং শাস্তির যোগ্য বিবেচিত হয়। অনৈক্যই মুসলিমদের সবচেয়ে বড় দুশমন। এটি উম্মাহর দেহে আত্মঘাত বাড়ায়। অতীতে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় বড় ক্ষতিগুলো অর্থ-সম্পদ ও জনসংখ্যার কমতির কারণে হয়নি, সেটি হয়েছে অনৈক্যের কারণে। কিছু লোকের চুরি-ডাকাতি, মদপান, জ্বিনা ও খুনের কারণে মুসলিম উম্মাহর পরাজয় আসেনি। বরং পরাজয় এসেছে, খেলাফা ভেঙ্গে গেছে এবং মুসলিম ভূমি শত্রুর দখলে গেছে অনৈক্যের কারণে। তাই অতি জঘন্য হারাম কর্ম হলো ভাষা,বর্ণ, গোত্র, অঞ্চলের নামে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি গড়া। বিভক্তি যে আযাবকে অনিবার্য করে –সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা ইমরানের ১০৫ নম্বর আয়াতে।

 কুশিক্ষার নাশকতা

ব্যক্তির দৈহিক দুর্বলতা জানিয়ে দেয়, তার খাদ্যে পুষ্টির মান ভাল নয়। তেমনি ব্যক্তির দুর্বৃত্তি বার্তা দেয়, তার শিক্ষায় রয়েছে কুশিক্ষার উপকরণ। সে কুশিক্ষাই বাংলাদেশে পরিচর্যা দিয়েছে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি। এর ফলে বঙ্গীয় এ বদ্বীপে একাত্তরে ঘটেছে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ও বর্বরতম ঘটনা। সেটি ভারত থেকে আশ্রয় নিতে আসা অবাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। এদিক দিয়ে তাদের তূলনা চলে বাঙালী জাতীয়তাবাদীদের আদর্শিক আত্মীয় মায়ানমারের বর্বর বর্ণবাদী বার্মীজদের। বাংলাদেশের সেক্যুলার শিক্ষা নীতির নাশকতাটি স্রেফ এই নয় যে, এটি বিলুপ্ত করতে পেরেছে বাঙালি মুসলিম মগজ থেকে প্যান-ইসলামিক চেতনা। বরং এর ভয়ংকর নাশকতাটি হলো, এ শিক্ষা ব্যবস্থা কেড়ে নিয়েছে নৃশংস বর্বরতাকে ঘৃণা করার সামর্থ্য। কেড়ে নিয়েছে সুনীতি নিয়ে বেড়ে উঠার ঈমানী বল। যে জাতি তার ইতিহাসের নৃশংস বর্বরতার নায়কদের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে না, সে জাতি কি কখনো সে নৃশংস বর্বরতা থেকে মুক্তি পায়। রোগ থেকে আরোগ্য পেতে হলে সে রোগের পরিচিতিটি জানতে হয়। সে সাথে জানতে হয় সে রোগ কেন হয় –রোগের সে প্যাথোলজিটি। এরপর আসে সে রোগ থেকে মুক্তির পালা। বিষয়টি অবিকল নৈতীক ও সামাজিক রোগের ক্ষেত্রে। কিন্তু বাঙালিগণ তাদের চরিত্রের কদর্য রূপটি জানতে রাজী নয়। তারা জানতে চায় না বাঙালির ইতিহাসের কুকীর্তির নায়কদের। জার্মানীর ইতিহাসে হিটলার ও তার গ্যাস চেম্বারের ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এজন্যই বাংলা সাহিত্যে ৬ লাখ বিহারী ও ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে একাত্তরে সংগঠিত নৃশংসতার কোন বিবরণ নেই। লেখা হয়নি মুজিবের ফ্যাসিবাদী নৃশংসতা ও গণতন্ত্র হত্যার কথা। লেখা হয়নি শাপলা চত্বরে সংঘটিত হেফাজতে ইসলামের মুসল্লীদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিবরণ। একই কারণে জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গণে ধর্ষণে সেঞ্চুরির বিষয়টিও বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা থেকে হারিয়ে গেছে। ফলে বাঙালি হারিয়েছে নৃশংসতাকে ঘৃণা করার সামর্থ্য। আরো ভয়ংকর বিষয় হলো, হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাতির সর্দারনীও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শত প্রফেসরের কাছে শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় গণ্য হয়। এমন কি এরা ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের ভোটডাকাতিকেও সুষ্ঠ নির্বাচন বলে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিবেকবান সভ্য মানুষ উৎপাদনে যে কতটা বন্ধা -এ হলো তার নজির। উর্বর প্রমাণিত হয়েছে দুর্বৃত্ত উৎপাদনে। এজন্যই বিশ্বের ৫০০টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় একাধিক ভারতীয়, পাকিস্তানী ও নেপালী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নাই।

বিপুল সংখ্যক বাঙালির বিবেক যে কতটা রুগ্ন ও বিষাক্ত -সেটি বুঝতে কি এরপরও কোন গবেষণার প্রয়োজন আছে? দেহে একবার রোগ দেখা দিলে বুদ্ধিমান ব্যক্তি তা সারা জীবন মনে রাখে এবং ভবিষ্যতে তা থেকে বাঁচার জন্য সব সময় সতর্ক থাকে। বিবেকমান জনগোষ্ঠিও তেমনি নিজেদের ইতিহাসের কালো অধ্যায়গুলি ভুলে যায় না, বরং স্মৃতিতে তার লক্ষণগুলো আজীবন বাঁচিয়ে রাখে তা থেকে ভবিষ্যতে বাঁচার আশায়। নইলে আত্মভোলা জনগণের জীবনে বিহারী হত্যা ও ধর্ষণ, বাকশালী স্বৈরাচার, শাপলা চত্বরের গণহত্যা এবং ভোট ডাকাতির ন্যায় অসভ্য কান্ডগুলো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। অথচ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও ইতিহাসের বইয়ের কাজ হয়েছে সে ভয়ানক অপরাধগুলিকে ভূলিয়ে দেয়ার। বরং যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করলো, একদলীয় বাকশালী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা দিল, দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে রেকর্ড গড়লো, দুর্ভিক্ষ বহু লক্ষ মানুষের প্রাণনাশ ঘটালো -তাদেরকে প্রতিষ্ঠা দিচ্ছে শ্রেষ্ঠ বাঙালি রূপে।

সভ্য ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নির্মাণে শিক্ষার ভূমিকা গভীর। সুশিক্ষা শুধু ঈমানই বাড়ায় না, ঈমানদারদের মাঝে সিমেন্টও লাগায়। ফলে গড়ে উঠে অটুট ঐক্য ও সামাজিক সংহতি। অপর দিকে কুশিক্ষা বাড়ায় বিভেদ ও সংঘাত। গড়ে তোলে বিভক্তির দেয়াল। মুসলিমদের মাঝে অনৈক্য দেখে অন্ততঃ এ বিষয়টি নিশ্চিত বলা যায়, তাদের মাঝে সুশিক্ষা নাই। অথচ সুশিক্ষার কারণেই ইসলামের গৌরবকালে আরব, কুর্দি, তুর্কি, ইরানী ও আফ্রিকান মুসলিমগণ নিজেদের ভাষা ও বর্ণের কথা ভূলে একতাবদ্ধ উম্মাহর জন্ম দিয়েছিল। কিন্ত ইসলামী শিক্ষা থেকে যখনই তারা দূরে সরেছে, তখন শুধু বিভক্তিই বাড়েনি, বেড়েছে ভাষাভিত্তিক সংঘাত এবং পরিণতিতে এসেছে পরাজয় ও অপমান। একতা ছাড়া অসম্ভব হয় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ও সভ্যতার নির্মাণ। অসম্ভব হয় স্বাধীনতা ও ইজ্জত নিয়ে বাঁচা। অসম্ভব হয় শরিয়ত, হুদুদ, একতা ও খেলাফার ন্যায় ইসলামের মূল বিধানগুলির প্রতিষ্ঠা। এভাবে ব্যর্থ হয়, ইসলামের মূল এজেন্ডার বাস্তবায়ন। যাদের মধ্যে ঈমান আছে এবং বাঁচে ভিশন নিয়ে, তারা শুধু ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন বর্ণ ও ভিন্ন এলাকার ঈমানদার মানুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক জামাতে নামাজই পড়ে না; তারা একত্রে রাষ্ট্র গড়ে এবং একই রণাঙ্গনে যুদ্ধও করে। এটিই তো ঈমানের লক্ষণ। সে ঈমানের কারণে বাঙালি, পাঞ্জাবী, বিহারী, সিন্ধি, পাঠান, গুজরাতি ও অন্যান্য ভাষার মুসলিমগণ একত্রে মিলে ১৯৪৭’য়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। সে অভিন্ন চেতনার কারণেই ১৯৭১’য়ে কোন আলেম, পীর বা কোন ইসলামী দল পাকিস্তান ভাঙ্গাকে সমর্থন করেনি। তাদের কেউ ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়নি এবং ভারতীয় বাহিনীর সাথে মিলে যুদ্ধও করেনি।

 ভূলটি হয়েছে শুরুতেই

মুসলিম উম্মাহর জীবনে জ্ঞানার্জন, ঈমান, একতা ও জিহাদ একত্রে চলে। কুর’আনী জ্ঞান বাড়লে শুধু ঈমানই বাড়ে না, বাড়ে ঈমানদারের মাঝে একতা ও জিহাদ। তাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে বিপ্লব আনতে হলে শিক্ষা থেকে শুরু করতে হয়। এজন্যই মহান আল্লাহতায়ালা মুসলিম গড়ার কাজটি সর্বপ্রথম নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ফরজ করে শুরু করেননি। বরং শুরু করেছিলেন কুর’আনী জ্ঞানার্জনকে ফরজ করে। কুর’আনী জ্ঞান থেকে দূরে সরলে যেমন ঈমান কমতে থাকে, তেমনি বিলুপ্ত হলে একতা ও জিহাদ। তখন জাহিলিয়াত তথা অজ্ঞতার যুগের ন্যায় ভাষা, বর্ণ, গোত্র ও অঞ্চলের নামে বিভক্তির অসংখ্য দেয়াল গড়ে উঠে। জাতীয় ও গোত্রীয় রাষ্ট্রের নামে সে বিভক্তির দেয়ালকে সুরক্ষা দেয়া তখন দেশপ্রেম গণ্য হয়। আজ মুসলিমগণ যেরূপ ৫০টির অধিক রাষ্ট্রে বিভক্ত তার মূল কারণ তো কুর’আনী জ্ঞানের বিলুপ্তি এবং ইসলাম থেকে দূরে সরা।

বিভক্তির দেয়াল গড়া এবং বিভক্তিকে বাঁচিয়ের রাখার যে রক্তাত্ব লড়াই -সেটি কি ঈমানের লক্ষণ? ঈমান তো একতাবদ্ধ হতে বলে। বিভক্তি তো বেঈমানীর লক্ষণ। ভাষা ও অঞ্চলের নামে বিভক্তির দেয়াল দেখেই বুঝা যায় জনগণ কতটা ঈমান শূণ্য। ঈমানের উপস্থিতি বুঝতে তখন জনগণের নামাজ-রোজার হিসাব নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। প্রকৃত ঈমানদারের মনে মুসলিম উম্মাহর বিভক্তি ও পরাজয় নিয়ে মাতম উঠবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? কিন্তু মুসলিমদের মাঝে আজ সে মাতম নাই, বিভক্তি নিয়ে সে দুঃখবোধও নাই। বরং আছে সে বিভক্ত মানচিত্র গড়ে নিয়ে নিয়মিত উৎসব। হাজার হাজার কোটি ব্যয়ে সেনাবাহিনী গড়া হয় সে বিভক্তিকে বাঁচিয়ে রাখায়। অথচ ঈমানদারের বিনিয়োগ, বুদ্ধিবৃত্তি ও জিহাদ তো মুসলিম উম্মাহকে একতাবদ্ধ করতে। মুসলিমদের মাঝে অটুট একতা চান মহান আল্লাহতায়ালা এবং বিভক্তি চায় শয়তান। বিভ্ক্ত মানচিত্র ও বিভক্তির দেয়াল গড়ে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব জুড়ে চলছে শয়তানকে খুশি করার আয়োজন। দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হয়েছে তেমন একটি হারাম চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখায়।

অথচ মুসলিম জাহানে যখন কোন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, তখনও একজন নিরক্ষর ভেড়ার রাখালও মুসলিম উম্মাহর একতার গুরুত্ব বুঝতো। বিভক্তিকে হারাম মনে করতো। তাই আরব, ইরানী, তুর্কি, কুর্দি, মুর মুসলিমগণ তখন একত্রে কাঁধে কাঁধ যুদ্ধ করেছে এবং এক অখণ্ড রাষ্ট্রে বসবাস করেছে। এটিই তো ঈমানদারী। অথচ আজকের মুসলিমগণ তেমন একটি রাষ্ট্রের কথা ভাবতেও পারেনা। ভারতের নানা ভাষাভাষী হিন্দুগণ সেটি পারলেও, মুসলিমগণ সেটি পারে না। মুসলিমগণ সিরাতাল মুস্তাকীম থেকে যে কতটা দূরে সরিয়েছে –তা মুসলিম উম্মাহর এ বিভক্ত মানচিত্র দেখলেই সেটি বুঝা যায়। সিরাতাল মুস্তাকীম তো একতার পথ; তাই যে পথে বিভক্তি ও সংঘাত -সেটি কখনোই সিরাতাল মুস্তাকীম নয়। প্রশ্ন হলো, যে পথটি সিরাতাল মুস্তাকীম নয়, সে পথে চলে কি জান্নাতে পৌঁছা যায়? কিন্তু সে ভাবনাই বা ক’জনের? ভাবনার সে সামর্থ্যটি আসে কুর’আনী জ্ঞান থেকে। বাংলাদেশে সে জ্ঞান ক’জনের? ফলে বাড়ছে চিন্তাশূণ্য মানুষের ভিড়; এবং বাড়ছে সিরাতাল মুস্তাকীম থেকে বিচ্যুতি। আসলে ভূলটি হয়েছে শুরুতেই। যা শেখানো ফরজ ছিল –সেটিই শুরুতে শেখানো হয়নি। মানা হয়নি শিক্ষা থেকে শুরু করার মহান আল্লাহতায়ালার পবিত্র সূন্নত।

 নাশকতা চিন্তাশূণ্যতার

জ্ঞানের অর্থ শুধু তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত, গদ্য-পদ্য, পরিসংখ্যান বা কিসসা-কাহিনী জানা নয়, বরং নানা বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা এবং সে চিন্তা-ভাবনা থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামর্থ্য। যার মধ্যে সেরূপ সামর্থ্য আছে তাকেই জ্ঞানবান বলা হয়। পবিত্র কুর’আনের নানা স্থানে নানা ভাবে মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে চিন্তা-ভাবনায় উৎসাহিত করেছেন। প্রতিটি জীবজন্তু, উদ্ভিদ, পর্বত, নদী, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র এবং প্রকৃতির প্রতিটি দৃশ্যই মহান আল্লাহর মূল্যবান আয়াত। মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর নিজের কুদরতকে জাহির করেছেন তাঁর অগণিত সৃষ্টির মাঝে। ফলে যারা স্রষ্টার প্রমাণ চায়, তাদের জন্য তিনি অসংখ্য প্রমাণ রেখেছেন তাদের চোখের সামনে। কুর’আনের ভাষায় এগুলো হলো “আয়াতিল লি’উলিল আলবাব। অর্থ: চিন্তাশীল মানুষের জন্য নিদর্শন। বিদ্যাশিক্ষার কাজ মূলত মহান আল্লাহর সে আয়াতগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণের সামর্থ্য সৃষ্টি করা। মানুষের মনে মহান আল্লাহতায়ালার সে আয়াতগুলি বহু ভাবে বহু কথা বলে। কোনটি সরব ভাবে,কোনটি নীরব ভাবে। ব্যক্তির চক্ষু, কর্ণ, বিবেকের সামনে এগুলো লাগাতর সাক্ষ্য দেয় সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতায়ালার অপার-অসীম কুদরতের। সমগ্র বিশ্বটি তখন পাঠশালা বা লাইব্রেরী মনে হয়। বিদ্যাশিক্ষার কাজ হলো সৃষ্টিজগতের পক্ষ থেকে দেয়া সাক্ষ্যদান বুঝতে এবং সে সাথে আল্লাহর পক্ষে সাক্ষ্যদানে সামর্থ্য সৃষ্টি করা। সে সামর্থ্য অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাগে না। সেজন্য যা জরুরি  তা হলো গভীর পর্যবেক্ষণ ও তা নিয়ে চিন্তার সামর্থ্য। ইসলামে চিন্তাকে তাই শ্রেষ্ঠ ইবাদত বলা হয়েছে। চিন্তার বলে আল্লাহর অসংখ্য আয়াত থেকে শিক্ষা নেয়ার যে সামর্থ্য গড়ে উঠে তার গুণে মানব ইতিহাসের বহু নিরক্ষর ব্যক্তিও বিখ্যাত দার্শনিকে পরিণত হয়েছে। অথচ সে সামর্থ্য না থাকায় বহু পি.এইচ.ডি. ধারিও প্রচণ্ড আহম্মক হয়। এমন আহম্মকদের কাছে মুর্তি, গরু-ছাগল ও সাপ-শকুন যেমন ভগবান গণ্য হয়, তেমনি দেশের শত্রু, জনগণের শত্রু এবং অতি স্বৈরাচারী দুর্বৃত্তরাও মহমানব মনে হয়। চিন্তাশূণ্যতার এটিই হলো নাশকতা।

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এমন আহম্মকের সংখ্যাই শুধু বাড়েনি, বেড়েছে ভয়ানক দুর্বৃত্তের সংখ্যাও। এই শিক্ষা ব্যবস্থার কাজ হয়েছে, শুধু চিন্তার সামর্থ্য কেড়ে নেয়া নয়, বরং কুর’আনের সাথে সম্পর্ককে ছিন্ন করারও। পারিবারিক বা সাংস্কৃতিক সূত্রে কুর’আনের সাথে যদি কোনরূপ সম্পর্ক গড়েও উঠে, বাংলাদেশের শিক্ষা নীতির কাজ হলো, সে সম্পর্ক বহাল রাখাকে কঠিন করে দেয়া। শিক্ষাব্যবস্থার কাজ হয়েছে ছাত্রদের ইবাদতের সামর্থ্য শুধু কেড়ে নেয়া নয়, বরং সে সামর্থ্য যাতে গড়ে না উঠে তার ব্যবস্থা করা। এ শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলিম শিশুর জীবনে ভ্যালু এ্যাড বা মূল্য সংযোজন না করে বরং পারিবারিক বা সাংস্কৃতিক সূত্রে সংযোজিত মূল্যও কেড়ে নিচেছ। ফলে কৃষকের সুবোধ পুত্রটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ব্যভিচারী, ধর্ষক, চোরডাকাত, সন্ত্রাসী ও খুনি হয়ে বের হচ্ছে। এরাই রাজপথে আল্লাহর শরিয়তী বিধানের প্রতিষ্ঠা রুখতে লড়াইয়ে নামছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামের বিপক্ষে আজ যে বিপুল বাহিনী এবং পথেঘাটে, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যে যে অসংখ্যক দুর্বৃত্ত -তারা কি কাফিরদের ঘরে, মন্দিরে বা বনেজঙ্গেলে বেড়ে উঠেছে? তারা তো বেড়ে উঠেছে দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে।

 দুর্গ ইসলামের শত্রুপক্ষের

অজ্ঞ লোকদের সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়। কিন্তু জ্ঞানী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সেটি কঠিন হয়। বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধীদের শক্তির মূল উৎস হলো, কুর’আন থেকে জ্ঞানলাভে অসমর্থ জনগণ। তারা চায়, ইসলাম নিয়ে জনগণের এ অজ্ঞতা দীর্ঘজীবী হোক। এবং চায়, সে অজ্ঞতা আরো গভীরতর হোক। বাংলাদেশের ন্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরিণত হয়েছে বাঙালি মুসলিমের আত্মঘাতের হাতিয়ারে। এজন্যই এ শিক্ষাব্যবস্থায় কুর’আনী জ্ঞানের কোন স্থান নাই। পবিত্র কুর’আনের জ্ঞান বাড়লে সে জ্ঞান শক্তি জোগায় ঈমান নিয়ে বেড়ে উঠায়। তারা ইসলামের বিজয়ে তখন আপোষহীন হয়। শরিয়ত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন তখন বিপুল সংখ্যায় আপোষহীন মুজাহিদ পায়। এখানেই ইসলামের শত্রুপক্ষের ভয়। সে ভয় নিয়েই য়ভয়। ভয়। আরবী ভাষা এবং সে সাথে পবিত্র কুর’আনের চর্চা রুখা হচ্ছে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি কৌশল রূপে।

দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আজ ইসলামের শত্রু পক্ষের মূল ক্যান্টনমেন্ট তথা দুর্গ। মহান আল্লাহতায়ালার দেয়া শরিয়তী আইন প্রতিষ্ঠা নিয়ে রাজপথে নামলে তার বিরুদ্ধে যারা বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধ শুরু করে বা অস্ত্র হাতে যারা হামলা করে তারা কোন মন্দির,গীর্জা বা বনজঙ্গল থেকে আসে না। বরং আসে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অঙ্গণ থেকেই। অথচ এগুলির নির্মাণে ও পরিচালনায় ব্যয় হয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকদের দেয়া রাজস্বের অর্থ। প্রশ্ন হলো, শিক্ষার নামে মুসলিমগণ কি এভাবে নিজ ধর্ম, নিজ ঈমান, সর্বোপরি মহান আল্লাহতায়ালার শত্রু পালনে অর্থ জোগাতে থাকবে? মেনে চলবে কি শিক্ষাঙ্গণের উপর ইসলামের শত্রুপক্ষের এরূপ দখলদারী? এটি তো পাপের পথে তথা জাহান্নামের পথে বিনিয়োগ। ভয়ানক বিপদের কথা হলো, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমন বিনিয়োগেই ছাত্রদের ও অভিভাবকদের উৎসাহ জুগাচ্ছে। এভাবে মানুষ নিজ খরচে নিজেদের বিপদ বাড়াচ্ছে। পবিত্র কুর’আনের ভাষায় এরাই হলো প্রকৃত ক্ষতির মধ্যে –যার বলা হয়েছে সুরা আছরে। শিক্ষার কাজ হলো মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচানো ও সাফল্যের পথ দেখানে। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সে কাজটিই হচ্ছে না। ১১/০৬/২০২২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *