নির্মূল হোক অসভ্য শাসন এবং প্রতিষ্ঠা পাক সভ্য রাজনীতি

কেন এ গা জ্বালা?

শহীদ আবরারের নৃশংস হত্যার বিরুদ্ধে ছাত্র ও জনগণ যখন দেশব্যাপী ক্ষেপে উঠেছে তখনই সরকারি মহলে শুরু হয়েছে গা জ্বালা। সে গা জ্বালা নিয়ে তারা আন্দোলনের বিরুদ্ধে শুরু করেছে মিথ্যা রটনা, অভিনয় ও ষড়যন্ত্র । জনগণের ক্ষোভকে তারা জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র বলছে। প্রশ্ন হলো হত্যা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা কি স্রেফ জাময়াত-শিবিরের কাজ?  প্রতিবাদের দায়িত্ব কি শুধু তাদের? ভোট-ডাকাত সরকারেরর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ছাত্রদল-শিবির আড়ালে বুয়েটের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, ‘বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে কেউ যেন তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। এই ঘটনা নিন্দনীয়, নৃশংস ও ন্যক্কারজনক।” হাছান মাহমুদের এরূপ কথার অর্থ কি? রাজনীতি করা এবং আন্দোলন করা দেশের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সে অধিকার যেমন সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের আছে, তেমনই আছে জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি-ছাত্রদলের। সে অধিকার আছে অন্য যে কোন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের। আর আন্দোলন করতে হলে তো মাঠে নামতেই হয়। সরকার বিরোধীদের মাঠে নামা দেখে তাই সরকারি মহলে এতো গা জ্বালা কেন? তবে এ গা জ্বালার মূল কারণ, সরকারের ফ্যাসিবাদী মানস। গণতান্ত্রিক চেতনায় বিরোধীদের আন্দোলন বৈধ ও স্বাভাবিক মনে হয়। কিন্তু ফ্যাসিবাদে সেটি অসহ্য ও নির্মূল যোগ্য অপরাধ গণ্য হয়। তখন ঘটে শাপলা চত্ত্বরের গণহত্যা। অসংখ্য আবরারকেও তখন নৃশংস হত্যার শিকার হতে হয়।  

মিছিল-মিটিংয়ের অধিকার পানাহারেরর ন্যায় প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অতীতে শত শত মিছিল-মিটিং করে আওয়ামী লীগ সে মৌলিক অধিকারের প্রয়োগ করেছে। আজকের বিরোধী দল সে অধীকারের প্রয়োগ করলে সেটিকে নিন্দনীয়, নৃশংস ও ন্যক্কারজনক বলা হবে কেন? অথচ সংবিধান সে মৌলিক অধিকার দানে দল বা ধর্ম ভেদে নাগরিকদের মাঝে কোন রূপ কম বা বেশীর তারতর্ম করে না। সে সাংবিধানিক অধিকার সরকারি দলের নেতাকর্মীদের যতটুকু, তা থেকে একটুও কম নয় বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের। কিন্তু হাছান মাহমুদের ন্যায় ভোট-ডাকাতগণ সে সম-অধিকার অন্যদের দিতে রাজী নয়। তাদের কথা, সে অধিকারের সবটুকু একমাত্র তাদের। ফলে পাকিস্তানী আমল থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ মিটিং-মিছিল করার অধিকার ভোগ করলেও আজ সে অধিকার বিরোধী দলের কাউকে দিতে রাজী নয়। রাজপথে  জামায়াত-শিবির বা বিএনপি-ছাত্রদল দেখলে তাদের রাতের ঘুম হা্রাম হয়ে যায়। শুরু হয় গা জ্বালা। সে গা জ্বালাটিই ধরা পড়ে ভোট ডাকাত হাছান মাহমুদের বক্তব্যে -যা ছাপা হয়েছে দেশের পত্র-পত্রিকায়। বিগত দুটি নির্বাচনে এ ভোট-ডাকাতগণ জনগণের ভোটের অধিকার যেরূপ ছিনতাই করেছে, তেমনি ছিনতাই করতে চায় জনগণের আন্দোলনের অধিকার।

নৈতিক অবক্ষয় ও অপসংস্কৃতির সুনামি

কাউকে সন্মানিত বলার অর্থ তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়া। তাই সভ্য মানুষের ঈমানী দায়ভার হলো, সে সাক্ষ্য দিবে সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষ্যে এবং অন্যায় ও দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে। এখানে স্খলন বা বিচ্যুতি হলে বুঝতে হবে তার ঈমানে রোগ রয়েছে। তাই চোর-ডাকাত ও ভোট-ডাকাতদেরকে মাননীয় বলা ধর্মীয় ভাবে ও নৈতীক ভাবে হারাম তথা নিষিদ্ধ। এরূপ নিষিদ্ধ কর্ম সমাজে অবাধে চলতে থাকলে ডাকাতির ন্যায় শাস্তিযোগ্য অপরাধও সমাজে সন্মানজনক পেশা রূপে প্রতিষ্ঠা পায়। ডাকাতও তখন সমাজে মাননীয় হয়। একই রূপ অপরাধ ঘটে, একজন পতিতাকে সতি-সাধ্বী ও পুতঃপবিত্র বলা হলে। তাতে যেমন সত্য-গোপন হয়, তেমনি গুরুতর গুনাহ হয় একজন অতি নিকৃষ্ট অপরাধীর পক্ষে সাক্ষি দেয়ার। এরূপ সাক্ষিদান শিক্ষিত ও বিবেকবান লোকদের পক্ষ থেকে হলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয় এবং তাতে সমাজে দুর্বৃত্তদের ঘৃণার বদলে তাদের প্রতি সন্মান দেখানোর সংস্কৃতি নির্মিত হয়। তাই সেটি কবিরা গুনাহ। অথচ বাংলাদেশ সেরূপ কবিরা গুনাহই বেশী বেশী হচ্ছে। ফলে হাসিনার ন্যায় ভোট-ডাকাতও মাননীয় বলে সম্বোধিত হয়।

একই রূপ কবিরা গুনাহ হয়, ভারতের আজ্ঞাবহ গোলাম এবং গণতন্ত্র হত্যাকারী বাকশালী মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বললে। কথা হলো, গণতন্ত্র হত্যাকারি ব্যক্তি দেশের ও জনগণের বন্ধু হয় কি করে? চোর-ডাকাতগণ মানুষকে নিঃস্ব করে আর্থিক ভাবে। আর গণতন্ত্রের শত্রুরা নিঃস্ব করে মানবাধিকার থেকে। তখন জনগণ হারায় ভোট দেয়া এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। অর্থের অভাবেও দিন চলে। কিন্তু স্বাধীনতা লুণ্ঠিত হলে জনগণ খাঁচায় বন্দী গোলামে পরিণত হয়। অধিকারহীন মানুষের পক্ষে তখন অসম্ভব হয় সভ্য মানুষ রূপে বাঁচা। স্বৈরাচারি শাসকেরা তাই মানবতার জঘন্যতম শত্রু। ইসলামে তাই অতিশয় নেক কর্ম হলো, এরূপ মানবতার শত্রু অপরাধীদেরকে ঘৃণা করা। সম্ভব হলে তাদের নির্মূল করা। ইসলামে সে নির্মূলের কাজটিই হলো পবিত্র জিহাদ। ব্যক্তির মাঝে ঘৃণার সে মাত্রাটি যতই গভীর হয়, ততই বাড়ে সওয়াব। আর গুরুতর পাপ হলো এরূপ অপরাধীকে সন্মান দেখানো। জনগণের এ পাপে জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা পায় পাপিষ্ট শয়তান। এবং সে সাথে হত্যাযোগ্য গণ্য আবরারের ন্যায় নিরীহ সত্যবাদীরা। সে পাপ থেকে বাঁচতেই সমাজের বিবেকমান এবং ঈমানদার মানুষেরা সচেতন ভাবেই ভোট-ডাকাত হাসিনার নামের আগে কোথাও মাননী্য় বলা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য। একই ভাবে বিরত থাকতে বাধ্য বাকশালী মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বলা থেকে। ব্যক্তির ঈমান তো এভাবেই শুধু নামায-রোযাতে নয়, কথার মধ্য দিয়েও প্রকাশ পায়। সেটি না হলে ঈমান মারা পড়তে বাধ্য।

শুধু নেক কাজকে ভাল বাসলেই সুশীল ও সভ্য হওয়া যায় না। বরং সে জন্য অর্জন করতে হয় চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণ, গুম ও হত্যাকে মনের গভীর থেকে ঘৃণা করার সামর্থ্য। বেশ্যাবৃত্তি করে অর্থ-উপার্জনের ন্যায় ভোট ডাকাতি করে প্রধানমন্ত্রী হওয়াও যে অতিশয় ঘৃণ্য বিষয় –সে ধারণাটি অতি প্রবল হওয়া সুশীল ও সভ্য হওয়ার জন্য জরুরী। একমাত্র তখনই রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তিতে গড়ে উঠে সুস্থ্য সংস্কৃতি। দেশে তেমন একটি সুস্থ্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেলে ঘরের মেয়েরা কখনোই পতিতাবৃত্তিতে যোগ দেয়না। তখন সভ্য ঘরের সন্তানেরা ভোট-ডাকাতিতে নামে না। ভিতরে লালিত ঘৃণার কারণে তারা ভোট-ডাকাতকে কখনোই মাননীয়ও বলে না। ভোট-ডাকাত শেখ হাসিনাকে মাননীয় বললে এবং গণহত্যাকারি, রক্ষিবাহিনী দিয়ে ৩০ হাজার মানব হত্যাকারি এবং ভারতের গোলাম শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বললে নির্মিত হয় ডাকাত পাড়ার অপসংস্কৃতি। অথচ বাংলাদেশে বিগত ৫০ বছর ধরে সে অপসংস্কৃতি গড়ে তোলার কাজটিই লাগাতর হয়েছে। সে অপসংস্কৃতি প্রবল ভাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কারণেই খুনিরা ছাত্রনেতা হয়, ভোট-ডাকাত হাসিনাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রূপে সন্মানিত হয় এবং গণতন্ত্রের শত্রু বাকশালী মুজিবও তখন বঙ্গবন্ধু রূপে চিত্রিত হয়। অথচ পৃথিবীর আর কোথাও ভোট-ডাকাত ও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার ফ্যাসিস্টদের সন্মান দেখানোর এরূপ অসভ্যতা বেঁচে নাই। কিন্তু বাংলাদেশে সে অসভ্যতা প্রবল হওয়ার কারণে দেশ দুর্বৃত্তিতে পর পর ৫ বার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। ইতিহাসে এ উপার্জন একমাত্র বাংলাদেশের। সেরূপ এক প্রবল অসভ্যতার কারণেই মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রম ছাড়া দেশের সেনা অফিসার, সরকারি আমলা, আদালতের বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পত্রিকার সম্পাদক এবং বুদ্ধিজীবীগণও অতি নৃশংস দুর্বৃত্তদের ঘৃণা করার সামর্থ্য পুরাপুরি হারিয়ে ফেলেছে। এবং এ রকম একটি অবস্থার কারণেই দেশপ্রেম গণ্য হচ্ছে হত্যাযোগ্য অপরাধ রূপে। এবং আগ্রাসী ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ গণ্য হচ্ছে স্বাধিনতা রূপে। একই কারণে হাসিনার ন্যায় ভোট-ডাকাতও ক্ষমতার টিকে থাকার সাহসই শুধু পাচ্ছে না, অনেকের কাছে মাননীয় রূপেও গণ্য হচ্ছে।

অভিনয় ও প্রতারণার জাল

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিত অভিনয় করছেন দেশের ভোট-ডাকাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন অভিনয়ের কদরও আছে। কারণ, এমন অভিনয় দিয়ে জনগণকেও সহজে বিভ্রান্ত করা যায়। শেখ মুজিবও স্বাধীনতা, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং ৮ আনা সের চাউল খাওয়ানোর নামে অভিনয় করে ক্ষমতায় গিয়েছিল। এর পরের কাহিনী তো ইতিহাস। অভিনয়ের অংশ রূপেই শহীদ আবরারের পিতামাতাকে ভোট-ডাকাত হাসিনা তার অফিসে ডেকেছে। অথচ দুনিয়া থেকে আবরারকে যারা বিদায় দিল তারা তো হাসিনার দলেরই পোষা গুন্ডা। এর আগেও বহু আবরারকে তারা হত্যা করেছে হাসিনার ঘোষিত “এক লাশের বদলে ১০ লাশ ফেলা”র নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে। তার হাতে গণহত্যা হয়েছে শাপলা চত্ত্বরে। শহীদ হয়েছে এবং ময়লার গাড়িত লাশ গায়েব হয়েছে হিফাজতে ইসলামের মুসল্লিদের।  পিলখানায় হত্যা করা হয়েছে ৫৬ জন সেনা অফিসারকে। মুজিবের ন্যায় হাসিনাও একই রূপ অভিনয় করছে গণতন্ত্রের নামে। ভোটের স্বাধীনতার কথা বলে উপহার দিয়েছে ভোটডাকাতি। বাকশালী মুজিবের ন্যায় হাসিনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ না করলেও নিষিদ্ধ করেছে তাদের রাজপথের রাজনীতি। এভাবে মুজিবের ন্যায় হাসিনাও প্রতিষ্ঠা দিয়েছে অভিনয় ও প্রতারণার এক দুষ্ট রাজনীতি।

ক’দিন আগে ভোট-ডাকাত হাসিনা অভিনয়ের ঢংয়ে সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “আমরা তো সকল ব্যবস্থা নিয়েছি। অতএব আন্দোলন কোন?” ডাকাত হাসিনা এখানে ন্যাকা সেজেছেন। যেন তিনি বুঝেন না, আন্দোলন কেন হয়। আন্দোলন কি হয় স্রেফ একটি খুনের বিরুদ্ধে? আন্দোলন কি হয় কিছু খুনিকে ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি নিয়ে? দেশে তো প্রতিদিন বহু মানুষ খুন হয়। তাই একটি বা দশটি খুনের ঘটনা নিয়ে কি দেশ ব্যাপী কোন আন্দোলন গড়া যায়? আন্দোলন তো হয়, এমন এক জালেম সরকারের নির্মূলে যার নীতিই হলো খুন, গুম, ধর্ষণকে রাজনীতির হাতিয়ার ও কালচারে পরিণত করা। খুনের অপরাধে আসামীদের ফাঁসি হলেও তাই আন্দোলন থামে না। কারণ, আন্দোলন তো অসভ্য ও অত্যাচারি শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে -যা ফ্যাসিবাদকে ধারণ করে ত্রাসের রাজত্বের প্রতিষ্ঠা দেয়।  

অপর দিকে ভোট-ডাকাত হাসিনা ও তার অনুসারিগণ বলা শুরু করেছে, “আবরারের হত্যা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।” কথা হলো আবরারে ত্যাকান্ডাটি কি পারিবারিক বিষয়? এটি কি টাকা-পয়সা বা জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় যে তাতে রাজনীতি হবে না? আবরারকে হত্যা করা হয়েছে নিরেট রাজনৈতিক কারণে। সেটি ঘটেছে ফেসবুকে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার কারণে। তাছাড়া রাজনীতি করা কি কোন নিষিদ্ধ কর্ম? সরকারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও কর্মই তো রাজনৈতিক। সরকারের নিজের রাজনীতি যদি নিষিদ্ধ ও নিন্দনীয় না হয়, তবে অন্যদের রাজনীতি কেন নিষিদ্ধ ও নিন্দনীয় হবে? প্রশ্ন হলো, রাজনীতির বিরুদ্ধে যদি ভোট-ডাকাত হাসিনার এতই ক্ষোভ, তবে ছাত্রলীগর রাজনীতি যেভাবে সন্ত্রাস ও হত্যার নীতিতে পরিণত হয়েছে -সে রাজনীতি কেন বন্ধ করেন না? রাজনীতিকে ছাত্র লীগ কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে তা কি ভোট-ডাকাত হাসিনা বুঝে না? বুয়েটে যে হত্যাকান্ডটি ঘটালো সেটিই কি ছাত্রলীগের একমাত্র নৃশংস হত্যাকান্ড? এ ধরণের হত্যার ঘটনা বাংলাদেশে দুয়েকটি নয়, অসংখ্য বার ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সারা দেশে এভাবে বহুশত ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে গুম ও ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। ছাত্রলীগ এরূপ নৃশংসতার তান্ডব বহু বছর ধরে ঘটিয়ে আসছে। এরূপ নৃশংস অপরাধে সরকার এতদিন তাদেরকে পুরো লাইসেন্স দিয়েছিল। তাদের নীতি ছিল গায়ে ছাত্র শিবিরের ট্যাগ দিয়ে যে কোন ইসলামপ্রেমীকে মেরে ফেলা।

আবরার হত্যার পর ছাত্রগণ আজ জেগে উঠেছে। এরূপ নৃশংস হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন হবে -সেটিই তো অতি স্বাভাবিক ও সভ্য কর্ম। এবং না হওয়াটি অসভ্যতার আলামত। অথচ এরূপ প্রতিবাদ ভোট-ডাকাত অসভ্য সরকারের ভাল লাগেনি। ছাত্রদের এমন একটি বিবেকমান আন্দোলনকে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক বলেছেন। কথা হলো, এতো বড়ো নৃশংস ঘটনার পরও ছাত্ররা নীরব থাকে কি করে? এরূপ মুহুর্তে নীরব থাকাটি তো চরম অসভ্যতা। সেরূপ নীরবতায় দেশে অসভ্যতার সুনামি শুরু হবে –সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? তখন প্রশ্রয় পায় অশুভ খুনিচক্র। তখন আবরারগণ লাশ হয়, নারীরা ধর্ষিতা হয় এবং বীভৎস গুম-খুনও রাজনীতির হাতিয়ারে পরিণত হয়। সে নৃশংস অসভ্যতা থেকে বাঁচাতে ছাত্র ও জনগণ আন্দোলেন নামবে -সেটিই তো স্বাভাবিক। সে আন্দোলনে শিবির, ছাত্রদল ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দল জড়িত হবে -সেটিই তো অতি প্রশংসনীয় বিষয়। একমাত্র এভাবেই তো দেশ ভোট-ডাকাত দুর্বৃত্তদের থেকে মুক্তি পেতে পারে। ১৫/১০/২০১৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *