চুড়ান্ত বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ

দেশ অধিকৃত দুর্বৃত্তদের হাতে

বাংলাদেশের ব্যর্থতা দ্রুত বিপর্যয়ের শেষ প্রান্তের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশে একটি সরকার আছে। সংসদ ও প্রশাসন আছে। বিশাল পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং বিচার ব্যবস্থাও আছে। কিন্তু যা নাই তা হলো সুশাসন, সুবিচার ও আইনশৃঙ্খলা। দেশ যে আজ কতটা বিপর্যয়ের শিকার সেটা বোঝার জন্য কি বড় রকমের কান্ডজ্ঞানের প্রয়োজন আছে? উনানের পাশে দাড়িয়ে আগুনের উত্তাপ বুঝতে কি বিদ্যাবুদ্ধি লাগে? অন্ধ,বধির ও বোবারাও সেটি টের পায়। জখম পেকে গেলে ফিনকি দিয়ে যেমন পুঁজ বেরুয়,তেমনি পচনের আলামত বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির গভীর থেকে। মুজিব আমলে ব্যর্থতা এতটাই প্রচণ্ডতা পেয়েছিল যে বাংলাদেশ বিশ্বময় পরিচিতি পেয়েছিল ভিক্ষার তলাহীন ঝুড়ি রূপে। মুজিবামল শেষ হলেও বাংলাদেশে তার সুস্থ্যতা আর কোন কালেই ফিরে পায়নি। যে বীজ তিনি রোপন করেছিলেন এবং যে লিগ্যাসী তিনি ছেড়ে গেছেন তা এখন বটবৃক্ষের ন্যায় বিশাল আকার ধারণ করেছে। ফলে দেশ ৫ বার রেকর্ড করেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্ত দেশরূপে। যে রোগ মুজিবামলে শুরু হয়েছিল সেটি না সারিয়ে এ অবধি তার উপর বার বার শুধু চুনকামই হয়েছে।আসল রোগ সারানোর ব্যবস্থা হয়নি। দেশে এখন শুধু বড় রকমের গযব আসতেই বাঁকি।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা, দেশটি অধিকৃত দুর্বৃত্তদের হাতে। সে দখলদারিটি শুধু রাস্তাঘাট ও  অফিস-আদালতে নয়,বরং দেশটির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে। তবে সমস্যা হলো এসব ভয়ানক দুর্বৃত্তদের গায়ে আঁচড় দেবার সামর্থ কারো নাই। এদের হাতেই অসহায় ভাবে জিম্মি হলো দেশের অসহায় জনগণ। ইতিহাসে এভাবেই নানা রাষ্ট্র বার বার অধিকৃত হয়েছে। নমরুদ, ফিরাউন, হিটলার, মুসোলিনি, স্টালিনের রাজ্যে তারাই ছিল সে সময়ের সবচেয়ে ভয়ানক দুর্বৃত্ত। কিন্তু তাদের কোন বিচার হয়নি। তাদের বরং নতশিরে মান্য করতে বাধ্য হতো জনগণ। ফিরাউনের মত দুর্বৃত্তকে মিশরবাসীদের ভগবান বলতে হতো। কিন্তু ফিরাউনের বিচারে অপরাধী চিহ্নিত হয়েছিলেন তিন যাদুকর যারা হযরত মূসা (আঃ)র সাথে প্রতিযোগীতায় নেমে বুঝতে পেরেছিল হযরত মূসা (সাঃ) তাদের মত যাদুকর নন বরং আল্লাহর মহান নবী। আর সেটি বুঝে তাঁরা সাথে সাথে হযরত মূসা (সাঃ)র আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিলেন। কিন্তু ঈমান আনার কারণে তাদের হাত-পা গুলি একটার পর একটা কাটা হয়েছিল। বিচারের নামে এটাই হলো কাফেরদের রীতি।

মুজিবামলে বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় দুষমন কোন সন্ত্রাসী দল ছিল না,বরং ছিলেন খোদ শেখ মুজিব। তিনিই সকল রাজনৈতিক দল ও সকল বিরোধী পত্রিকা নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিলেন। যে কোন সভ্যদেশেই গণতন্ত্রের দুষমনকে মানবতার সবচেয়ে বড় দুষমন বলা হয়। কারণ, অর্থ বা মালামাল ছিনতাইয়ের চেয়ে অনেক বড় ছিনতাই হলো জনগণের অধিকার ছিনতাই। কারণ তাতে ছিনতাই হয় কথা বলার স্বাধিনতা, লেখার স্বাধীনতা, সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং ধর্মপালনের স্বাধিনতা। অর্থাৎ অসম্ভব করে তোলা হয় প্রকৃত ঈমানদার রূপে বেঁচে থাকা ও বেড়ে উঠাটি। তাই জাতি কখনোই চোর-ডাকাত বা সন্ত্রাসীদের ছিনতাইয়ে বিপর্যয়ে পড়ে না, ধ্বংসও হয় না। বরং অতি বিপর্যয়ে পড়ে স্বৈরাচারি শাসকদের কারণে। তাই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ছিনতাইকারি বা সন্ত্রাসী হলো স্বৈরাচারি শাসকগণ। এরা দখলদারি প্রতিষ্ঠা করে এমনকি সাধারণ জনগণের চিন্তার ভূবনেও। এমন দখল জমানোর কারণেই ফিরাউনের ন্যায় দুর্বৃত্তরা জনগণের কাছে নিজেদেরকে ভগবান রূপে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। একই ভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারিটি তার অনুগত মানসিক গোলামদের দ্বারা চিত্রিত হচ্ছে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী রূপে। স্বৈরাচারি শাসকেরা স্বাধীন মানুষের এতটাই দুষমন যে,বাকস্বাধীনতা,রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিয়ে তাদের বাঁচতে দিতে রাজী নয়। তাই তাদের শাসনামলে চোর-ডাকাতদের জেলে তোলা না হলেও কারারুদ্ধে করা হয় মানবাধিকার নিয়ে বাঁচতে চাওয়া মানুষদের। এরাই দেশকে দূর্নীতির শিখরে পৌছে দেয়। বাংলাদেশের আজ  যে দুরাবস্থা তার মূল কারণটি দেশের ভূগোল বা জলবায়ু নয়। দরিদ্র কৃষক-শ্রমিক-তাঁতীও নয়। বরং দুর্বৃত্ত শাসক ও তাদের সহচরগণ যাদের তান্ডব শুরু হয়েছিল শেখ মুজিবের স্বৈরাচারি শাসন থেকে।

 

আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ছিনতাই

বাংলাদেশ সরকারের অপরাধ অনেক। তবে তাদের সবচেয়ে বড় অপরাধটি হলো,তারা ছিনতাই করেছে মহান আ্ল্লাহর সার্বভৌম অধিকার। সে অধিকারটি এ পৃথিবী পৃষ্ঠে শরিয়ত প্রতিষ্ঠার। এই একটি মাত্র অপরাধই আল্লাহর আযাব নামিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট। তবে বাংলাদেশে সে আযাব যে আসছে না তা নয়। আসছে নানারূপে। আল্লাহর আযাব কি শুধু জলোচ্ছ্বাস বা ভূমিকম্প? দুর্বৃত্ত শাসকদের দুর্বিসহ দুঃশাসন কি কম আযাব? তাছাড়া মানুষ পথে ঘাটে যেভাবে গুম হচ্ছে, লাশ হচ্ছে, ধর্ষিতা হচ্ছে এবং ছিনতাই হচ্ছে –সেগুলিকেও কি আল্লাহর রহমত বলা যাবে? এমন কঠিন আযাবই বা আর ক’টি দেশে আছে?

আল্লাহর অধিকার ছিনতাই করেছিল ফিরাউন ও নমরুদ। পৃথিবী পৃষ্টে এটাই হলো সবচেয়ে বড় ছিনতাই,সে সাথে সবচেয়ে বড় অপরাধও। অন্য অপরাধগুলো শুরু হয় এ অপরাধের পথ ধরে। বিশ্বের সকল স্বৈরাচারিগণ এ পথ ধরেই অগ্রসর হয়। মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে সার্বভৌম করে সৃষ্টি করেননি, সৃষ্টি করেছেন তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধি করে। সার্বভৌম হওয়ার অর্থ নিজ খেয়ালখুশি মাফিক নতুন আইন রচনার অধিকার এবং সে সাথে আদালতের আঁওতা থেকে নিজেকে মূক্ত রাখার অধিকার। ফিরাউন-নমরুদ যেমন নিজের ইচ্ছামত আইন দিয়েছে,তেমনি অন্যদের বিচারও করেছে। সে সাথে নিজেদেরকে আদালতের উর্ধ্বে রেখেছে। সার্বভৌম হওয়ার অর্থ তাই আল্লাহর পক্ষ থেকে অর্পিত সীমারেখাকে অতিক্রম করা। ইসলামের পরিভাষায় সীমানা অতিক্রমের এ বিদ্রোহ হলো কুফরি। এমন বিদ্রোহীদেরকেই ইসলামে কাফের বলা হয়।

অথচ খেলাফতের ধারণা বাদ দিয়ে নিজেদেরকে বিচারের বাইরে রাখাকে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট,প্রধানমন্ত্রী,সংসদের স্পিকার এবং আদালতের বিচারকগণ নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার রূপে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই তাদের অপরাধ নিয়ে দেশে  কোন বিচার বসে না। বাংলাদেশে এবং সে সাথে আধুনিক গণতন্ত্রে এটাই হলো সবচেয়ে বড় অবাধ্যতা ও পাপ। কথা হলো, যে গণতন্ত্রে মহান রাব্বুল আলামীনের শরিয়তি আইন প্রতিষ্ঠার সার্বভৌম অধিকারটি ছিনতাই হয় সে গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখাই তো কুফারি। কুফরির এ পাপ কি পুতুল পুঁজার চেয়ে কম? আল্লাহর শরিয়ত ছাড়া ন্যায় বিচার সম্ভব –এমনটি বিশ্বাস করলে কি ঈমান থাকে? সেটি সম্ভব হলে পবিত্র কোরআন নাযিলের প্রয়োজনটি কি? এমন গণতন্ত্রে ক্ষমতাশীল দলের সন্ত্রাসী,ছিনতাইকারি ও খুণিদেরই বিচার থেকে দূরে রাখা হয়। তাই পঞ্চাশের দশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে সংসদ সদস্যদের হাতে ডিপুটি স্পিকার নিহত হলেও তা নিয়ে কোন পুলিশী তদন্ত হয়নি,তা নিয়ে বিচারও বসেনি। সংসদের বুকে সেদিন জঙ্গলের অরাজকতা নেমে এসেছিল।

শেখ মুজিবের আমলে পুলিশী নিরাপত্তায় থাকা অবস্থায় নিহত হয়েছিলেন সিরাজ শিকদার। সিরাজ শিকদারের মৃত্যুর পর সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, “কোথায় আজ সিরাজ শিকদার?” অর্থাৎ কিভাবে সিরাজ শিকদার মারা হয়েছিলেন তা শেখ মুজিব জানতেন এবং তাঁর মৃত্যুতে তিনি যে আনন্দিত হয়েছিল সেটিও সেদিন গোপন থাকেনি। ফলে সে হত্যাটি আত্মহত্যা ছিল না, বরং তাতে সুস্পষ্ট একটি মটিভ ছিল। যে কোন সভ্যদেশে এমন হত্যার বিচার হয়। ইসলামে এমন বিচার না করাটাই মহা পাপ। কিন্তু বাংলাদেশে সে বিচার হয়নি। বিচার হয়নি বর্তমান রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। যদিও বিপুল অর্থ পাওয়া গেছে সেই গাড়ীতে যে গাড়ীতে তিনি স্বয়ং যাচ্ছিলেন।

অথচ যে ইসলামে বাংলাদেশের মুসলমানেরা বিশ্বাসী সে ইসলামে প্রতিটি অপরাধীর বিচার করা ফরয। সে বিচার কারো মুখের দিকে তাকিয়ে হয়, বিচার হয় অপরাধের দিকে তাকিয়ে। ইসলাম শুধু নামায-রোযা-হজ-যাকাতের বিধান দেয় না,হুকুম দেয় ন্যায় বিচারেরও। সে জন্য শরিয়তি বিধানও দেয়। তাই শরিয়তি বিধান পালন ছাড়া ইসলাম পালন হয়না। তাই ইসলামে মানুষের সার্বভৌম হওয়ার ধারণাটি যেমন নাই, তেমনি নাই কোন শাসক,সাংসদ বা বিচারককে বিচারের উর্দ্ধে রাখার সুযোগ। ন্যায়-বিচার শুধু যে রোজহাশরের বিষয় তা নয়, ইহকালের বিষয়ও। বিচার না হলে অপরাধীদের ধরা পড়ার সুযোগটি কোথায়? দেশে শান্তিই বা প্রতিষ্ঠিত হয় কীরূপে? তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো,বাংলাদেশের সরকার, সংসদ সসদস্যগণ ও আদালতের বিচারকগণ নিজেদেরকে বিচার থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখলেও তারা অন্যদের বিচার নিয়ে প্রচণ্ড আগ্রহী। এসব বিচারে তাদের মূল আগ্রহটি ন্যায়-বিচার নিয়ে নেই,বরং বিপক্ষকে ঘায়েল করা নিয়ে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার খাতিরে একসময় যাদেরকে রাস্তায় লগিবৈঠা নিয়ে পেটাতো, এখন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী হওযার অভিযোগে এনে যুদ্ধের ৪০ বছর পর আদালতে তুলেছে।

বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা যে ভয়ানক ভাবে বিপন্ন সেটি এখন আর কোন গোপন বিষয় নয়। বাংলাদেশের কৃষি,শিল্পে যত না রোগ, তার চেয়ে বেশী রোগ এখন দেশের আইন-আদালতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে দেশ যে রকম বিপর্যয়ের মুখে সেটি কোন চোর-ডাকাতদের সৃষ্ট নয়,দেশের দুর্বৃত্তকবলিত প্রশাসনেরও নয়। বরং সেটি আদালতের সৃষ্টি। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির অধীনে পর পর কয়েকটি নির্বাচন হলো এবং দেশ ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হতে যাচ্ছিল তা দেশের আদালত এক কলমের খোঁচায় অস্থিতিশীল করে দিল। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় দুর্যোগটি সৃষ্টি হয়েছে এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নিয়ে।পাকিস্তানের রাজনীতিকে পঞ্চাশের দশকে সবচেয়ে বড় অস্থিতিশীল করেছিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জাস্টিস মুনির। নির্বাচিত গণপরিষদ বাতিলের স্বৈরাচারি হুকুমকে তিনি আইনসিদ্ধ বলেছিলেন। অথচ করাচী হাইকোর্ট গণপরিষদ ভেঙ্গে দেয়াকে বেআইনী বলে রায় দিয়েছিল। জাস্টিস মুনিরের সে রায়ের মধ্য দিয়ে সেদিন যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছিল,পাকিস্তান আর কোন কালেই সে অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্তি পায়নি। অথচ গণপরিষদ তখন শাসনতন্ত্র তৈরীর অনেক কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। পাকিস্তানের সকল চোরডাকাত ও অন্যান্য অপরাধীরা মিলেও দেশটির এতবড় ক্ষতি করিনি, যা করেছে আদালতের এ রায়টি। বাংলাদেশও কি আজ সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে?

তত্ত্বাবধাক সরকারের বিরুদ্ধে রায়টি দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারাপতি জনাব খায়রুল হক। তবে খবর হলো,ইনিই সেই বিচারপতি যিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকা ত্রান নিয়েছেন।(সূত্র- দৈনিক আমার দেশ,৩০/৫/১১)। তিনি যে কতটা অসহায় তার প্রমাণ হলো প্রধানমন্ত্রীর ত্রান-তহবিল থেকে নেয়া দশ লক্ষ টাকার এ ভিক্ষা। ভিখারী মানুষকে দিয়ে মসজিদের ইমামতি চালানোর বিধান ইসলামে নেই। তাকে কোন দায়িত্বশীল পদে বসানোরও কোন নির্দেশ নাই। কারণ নবীজী (সাঃ) বলেছেন দারিদ্র্যতা মানুষকে কুফরি তথা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতার কাছে পৌঁছে দেয়। বেড়া ভেঙ্গে ফসল খাওয়ার তাড়নাটি অন্য ছাগলের চেয়ে ক্ষুদার্ত ছাগলেরই বেশী। তেমনি অবস্থা ভিখারী মানুষেরও। তাই যে ব্যক্তি ত্রাণতহবিল থেকে অর্থ নেয় তাকে কি দেশের প্রধান বিচারক করা যায়? তাতে কি নিরপেক্ষ বিচার আশা করা যায়? অথচ বাংলাদেশে সেটিই হয়েছে।

রহস্যময় হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পূর্ণ রায়টি এখনও প্রকাশিত হয়নি।রায়টি ঘোষণার ১৫ দিনের মাথায় ২০১১ সালের ১৭ মে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসরে যান। এখনও এ মামলার লিখিত রায় প্রকাশ হয়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গত ২৯ মার্চ রায় লেখা শেষ করে আপিল বিভাগে জমা দিয়েছেন। এখনও রায়টি প্রকাশিত না হওয়ায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন বলে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাবেক বিচারপতি টিএইচ খান সাংবাদিকদের বলেন, খায়রুল হকের এ বক্তব্যে আইনজীবী হিসেবে আমরা বিস্মিত হয়েছি। কারণ, সাংবিধানিক পদে যারা দায়িত্ব পালন করেন, পদে বসার আগে তাদের একটি শপথ নিতে হয়। দায়িত্ব পালনকালীন তারা শপথ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর আর শপথের বাধ্যবাধকতা থাকে না। অবসরে যাওয়ার পর সাধারণ নাগরিকের কাতারে চলে আসেন। শপথের আওতা থেকে বের হয়ে সাধারণ নাগরিকে পরিণত হওয়া কোনো ব্যক্তি রায় লিখতে পারেন না। বিচরপতি এবিএম খায়রুল হক যেদিন চাকরি থেকে অবসরে গেছেন সেদিন থেকে সাধারণ নাগরিক। তিনি আর শপথের মধ্যে নেই। এ অবস্থায় এক বছর ধরে নিজের মতো করে রায় লিখেছেন। এ রায় কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তার লেখা রায়ের সঙ্গে অন্য কোনো কর্মরত বিচারপতি একমত বা দ্বিমত করেও স্বাক্ষর দিতে পারেন না। বিচারপতি টিএইচ খান বলেন, আমাদের সংবিধান, আপিল বিভাগের রুলস কোথায়ও বলা নেই অবসরের পর বিচারপতিরা রায় লিখতে পারবেন এবং রায়ে স্বাক্ষর করতে পারবেন। অবসরের পর কেউ রায় লিখলে বা রায়ে স্বাক্ষর করলে সেটা বৈধ হবে না। রাজনৈতিক গরজে অনেক কিছুই রাতারাতি করা হয়। শেখ মুজিব তাই কয়েক মিনিটে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধানকে পাল্টিয়ে একদলীয় বাকশালী সংবিধানে পরিণত করেছিলেন। একই কাজ করেছেন সাবেক বিচারপতি জনাব এবিএম খায়রুল হক। তাড়াহুড়ায় তিনি পুরা রায়টিও লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এই হলো বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার হাল।

 

বিচারকদের বিরুদ্ধে সংসদ স্পিকার

আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সংসদের স্পিকার জনাব আব্দুল হামিদ। আদালতের বিরুদ্ধে জনগণকে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকিও দিয়েছেন। সড়ক ভবন নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি রায়কে কেন্দ্র করে ২৯ মে জাতীয় সংসদের স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন,“আদালত নিরপেক্ষ ও স্বাধীন। কিন্তু দেশের মানুষের বিচারের ক্ষেত্রে বছরের পর বছর লেগে যাবে আর নিজেদের বিষয় বলে বিচার বিভাগ ঝটপট সিদ্ধান্ত নেবেন,এটা ভালো দেখায় না। কেবল নিজেদের বিষয়টি দেখলে সরকার কীভাবে চলবে? সরকারকেও সহযোগিতা করতে হবে।” (সূত্রঃ আমার দেশ, ১০/০৬/১২)। বুঝা যাচ্ছে স্পিকার জনাব অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ আদালতের বিচার নিয়ে খুশি নন। আদালতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ,আদালত নিজের বিষয়ের বিচারগুলো খুব তড়িঘড়ি করে,কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে বিচারগুলোর নিষ্পত্তিতে বছরের পর বছর লাগিয়ে দেয়। আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে এ এক বিরাট অভিযোগ। এমন অভিযোগ বিচারকদের ন্যায়পরায়না, নিরপেক্ষতা ও কাণ্ডজ্ঞানের বিরুদ্ধে। বিচারকদের শুধু নিজেদের বিষয়টি দেখলে চলে না, নিরপেক্ষতার সাথে দেখতে হয় অন্যদের বিষয়গুলো। এমন সামর্থ বিচারক হওয়ার জন্য ন্যূনতম সামর্থ, সেটি না থাকলে কারো পক্ষে আদালতে বিচারক রূপে বসার অধিকার থাকে না। বিচারকগণের যে সে যোগ্যতা নাই সে অভিযোগ এনেছেন দেশের সংসদের স্পিকার এ্যাডভোকেট জনাব আব্দুল হামিদ।

ছাগলের গলায় রশি বাঁধতে হয়।নইলে সে সীমা অতিক্রম করে এবং অপরের ক্ষেত খায়। মানুষও ছাগলের চেয়ে কম অবাধ্য নয়। সুযোগ পেলেই সে সীমা অতিক্রম করে। সেটি যেমন সাধারণ মানুষের বেলায় তেমনি দেশের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী,সংসদ সদস্য এবং আদালতের বিচারকদের বেলায়। তাই মন্ত্রীর গাড়ীতে যেমন লক্ষ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়,তেমনি দেশের প্রধান বিচারপতির তহবিলে ত্রাণতহবিল থেকে নেয়া ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। মুজিবের মৃত্যুর পর তার গৃহেও তাই বিপুল অর্থ পাওয়া গিয়েছিল। রাশি রাশি অর্থ পাওয়া গিয়েছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদের সরকারি গৃহেও। প্রেসিডেন্ট,প্রধানমন্ত্রী ও বিচারকদের বিচারের উর্দ্ধে রাখলে এমনটিই হয়। ইসলামে তাই কাউকে যেমন সার্বভৌম রাখা হয়নি,তেমনি বিচারের উর্ধ্বেও রাখা হয়নি। বরং কোন মানুষকে এরূপ সার্বভৌম রাখাটা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে বড় বিদ্রোহ।

 

স্পিকারের বিরুদ্ধে বিচারক

আদালতের বিরুদ্ধে স্পিকার আব্দুল হামিদের অভিযোগটি যে গুরুতর সেটি বুঝা যায় বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ায়। তিনি জনাব আব্দুল হামিদের মন্তব্যের কঠোর নিন্দা করেছেন। বিচারকদের বিরুদ্ধে এমন কথা কোন সাধারণ নাগরিক বললে ইতিমধ্যে হয়তো তাকে জেলে উঠতে হতো। দৈনিক আমার দেশের সম্পাদককে এর চেয়ে কম গুরুতর কথা বলায় কয়েকমাস জেলের ভাত খেতে হয়েছে।এবার যিনি বলেছেন তিনি যে শুধু স্পিকার তাই নন,সরকারি দলের প্রভাবশালী সদস্যও। স্পিকারের বক্তব্য গোচরে আনলে বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী যা বলেন তার সারসংক্ষেপ হলো,এটা হলো রাষ্ট্রদ্রোহিতা। স্পিকারের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ এনেছেন,সুপ্রিমকোর্টের বিরুদ্ধে তিনি জনগণকে উসকানি দিয়েছেন এবং তাঁর বক্তব্য আদালত অবমাননাকর। তিনি একথাও বলেছেন, স্পিকার তাঁর পদের মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন,ওই পদে থাকার অধিকার তাঁর নেই। স্পিকারের মন্তব্য আনপ্রিসিডেন্টেড। উক্ত বিচারক স্পিকারকে নসিহত করেছেন,তিনি একজন আইনজীবী,তার আর অ্যাডভোকেট পদ ব্যবহার করা উচিত নয়। এবং বলেছেন,স্পিকারের বিচার বিভাগ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। স্পিকার তার অজ্ঞতা দেখিয়েছেন। একজন স্পিকার এত অজ্ঞ হতে পারেন, তা আমরা ভাবতে পারি না। স্পিকারের বক্তব্য শুধু অজ্ঞতাই নয়,তার বক্তব্য অমার্জনীয়। স্পিকার সংসদের প্রতীক,ওই প্রতীক হতে হলে যোগ্যতা থাকতে হয়। পড়ালেখা জানতে হয়। এটা হলো অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্কর। (সূত্রঃ আমার দেশ, ১০/০৬/১২)। এখানে প্রশ্ন হলো,আইন-আদলত নিয়ে জ্ঞানের ব্যাপারে সংসদের স্পিকার যদি মুর্খ রূপে চিত্রিত হন এবং সেটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক কর্তৃক,তবে তিনি বা কীরূপে সদস্যরূপে স্পিকার রূপে বহাল থাকেন? তারও কি পদত্যাগ করা উচিত নয়? সংসদ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান,সে প্রতিষ্ঠানের প্রধান যদি আদালতের বিচারে অযোগ্য লোক হয়,তবে কি দেশ চলে?

 

তলির বেড়াল লাফিয়ে বের হয়েছে

অবশ্য বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর বক্তব্যের পর প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ হয়েছেন সংসদ সদস্যরা। রাগের মাথায় অতি মিথ্যাবাদীরাই অনেক সময় সত্য কথা বলে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছে। এবার আওয়ামী লীগের থলির বিড়াল লাফিয়ে বেড়িয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগের হাতে আদালত যে দারুন দলীয় করণের শিকার হয়েছে সেটি অন্যরা এতকাল বলে এসছে। এখন সেটি আওয়ামী লীগের এমপিরাই বলা শুরু করেছেন। তারা বলেন,শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী মানিক হাইকোর্টের বিচারপতি হয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের দয়ায়। কোনো লিখিত পরীক্ষা ও যোগ্যতা ছাড়াই তিনি বিচারপতি হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার গত আমলে এ লোককে যোগ্যতা ছাড়া এবং পরীক্ষা ছাড়া হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগ করেছে। এ ব্যক্তি বিচারক হওয়ার পর সারাদেশের সচিব,আইজিসহ যত ভদ্রলোক আছেন তাদের সামান্য কারণে হাইকোর্টে ডেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে বেইজ্জতি করেন। এ বিচারপতি সেই ব্যক্তি-যিনি বিমানে সামনের আসনে বসার জন্য বিমানের এমডিকে হাইকোর্টে ডেকে বেইজ্জতি করেছেন। এই ব্যক্তি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তিনি কোনো সুস্থ মানুষ নন।(সূত্রঃ আমার দেশ, ১০/০৬/১২)। আরো বলেছেন, শামসুদ্দিন মানিক ভাগ্যবান। আমাদের আবদুল মতিন খসরু আইনমন্ত্রী থাকাকালে তাকে বিচারক করেছেন। বিএনপি তাকে কনফার্ম করেনি। আমরা এবার ক্ষমতায় আসার পর তাকে কনফার্ম করেছি। তিনি আজ আমাদের বিরুদ্ধে,পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন। আরো বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় আমরাই স্লোগান তুলেছিলাম, “বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা”। এ স্লোগানে প্রতিরোধ গড়ার পর আগরতলা মামলার প্রধান বিচারপতি লুঙ্গি পরে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তারা বলেন, শামসুদ্দিন মানিক একজন স্যাডিস্ট। তিনি মানুষকে অপমান করে মজা পান। তা না হলে একজন ট্রাফিক পুলিশ, যিনি হয়তো তাকে দেখেননি, স্যালুট না দেয়ায় গাড়ি থেকে নেমে তাকে কানে ধরে উঠবস করিয়েছেন। ইত্যাদি। (সূত্রঃ আমার দেশ, ১০/০৬/১২)। কথা হলো, আওয়ামী লীগ নেতাদের এসব কথা যদি সত্য হয় তবে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক মানসিক ভাবে অতি অসুস্থ্য ব্যক্তি। এমন অসুস্থ্যতা তো কলেরা-টাইফয়েডের মত হঠাৎ হয় না। নিশ্চয়ই এ রোগে তিনি বহু কাল ধরে ভুগছেন। আদলতে এমন ব্যক্তি স্থান পেল কি করে? এ অপকর্মটি কি খোদ আওয়ামী লীগের নয়?

যে বিচারপতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের এত অভিযোগ,তারাই তাকে যোগ্যতা যাচাই না করে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতি রূপে নিয়োগ দিয়েছিল। কারণ, জনাব শামসুদ্দিন মানিক ছিলেন বেশীর লবির লোক,লন্ডনে এসে তিনি ঘাদানিকের সভায় যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতার তখন বাহবা দিয়েছে। ন্যায় বিচারে যে আওয়ামী লীগের সামান্যতম আগ্রহ নাই তার প্রমাণ এই শামসুদ্দিন মানিক। দেশের প্রশসনে ও আদালতে তাদের বসানো এমন মানিকদের সংখ্যা কি কম? আদালতকে অতীতে তারাই লাঠি দেখিয়েছে।জনাব নাসিম মন্ত্রী থাকা কালে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে বস্তিবাসী ও তাদের বস্তি পাঠিয়েছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সত্য ছিল সে কথা এখন তারা নিজেরাই বলে। সে ষড়যন্ত্রের সুষ্ঠবিচারের অধিকার সে সময়ের আদালতের ছিল। অথচ সে মামলার বিচারকদের বিরুদ্ধে হুমকী দেয়া হয়েছিল এবং সে হুমকীর ফলে বিচারক পালিয়েছিল সে কথাও তারা আজ বলছে। ন্যায় বিচার নিয়ে আওয়ামী লীগের ভীতি যে কতটা বিকট তাদের এরূপ কথাবার্তা কি সেটাই প্রমাণ করে না?

কথা নিছক শামসুদ্দিন মানিককের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ক্ষোভ নিয়ে নয়,বরং ন্যায় বিচারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান নিয়ে। প্রশ্ন তাদের মানসিকতা নিয়ে। তারা বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের বিরুদ্ধে কথা বললেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে দেয়া বিচারপতি খায়রুলের হকে রায় নিয়ে কথা বলেন না। সে রায় যেহেতু তাদের পক্ষে গেছে তারা তাই তাঁর রায়কে ঐতিহাসিকও বলেছেন। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দেশের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা যেমন নয় তেমনি সুশাসন প্রতিষ্ঠাও নয়। তাদের লক্ষ্য যে কোন ভাবে ক্ষমতা দখল। কিন্তু সেটিও এখন বিপদে পড়েছে। কারণ, নিজেদের অবাধ্য ও ক্ষুদার্ত নেতাকর্মীগণই তাদের ফসল লুটেখাওয়া শুরু করেছে। তাদের রোগটা তাই বাইরের নয়,নিতান্তই ভিতরের। দেহে পচন ধরলে তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও আর ঠিক মত কাজ করেনা। আওয়ামী লীগ সে ভয়ানক পচনের শিকার। তাই দিন দিন দলের বিড়ম্বনা বাড়ছে। তবে যে জীবাণূ তারা বহন করছে সেটির মহামারি থেকে কি দেশ বাঁচবে? ১০/০৬/১২

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *