সে কালের মুসলিম ও এ কালের মুসলিম

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 মুসলিম কি কভু  মত্ত হয় জাতি পূজা, ভাষা পূজা ও ভূগোল পূজা নিয়ে?

একতা আল্লাহর ফরমান, বিভক্তি নিয়ে কি উৎসব করে উম্মত্ত অহংকারে?

বাঁচে কি কভু নিজ দেশে শরিয়তের নির্বাসন দিয়ে?

 করে কি বিলুপ্তি সার্বভৌমত্ব মহান আল্লাহর?

এসবই তো কাফেরের কাজ, মুসলিমের হয় কি করে?

 

মুসলিমের কাজ কি নিজের খোদা নিজেই হওয়া?

আইন গড়ার যে দায় কেবল মহান আল্লাহর -সেটি কি নিজ হাতে নেয়া?

সেটি কি কাফেরদের অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণে মুসলিম দেশ ভাঙ্গা?

যেমনটি বাঙালী করেছে একাত্তরে ভারতের কোলে চড়ে?

সেটি কি ইসলাম ছেড়ে জাতীয়তীবাদী, সোসালিস্ট ও সেক্যুলারিস্ট হওয়া?

সেটি কি রবীন্দ্র পাঠ, মূর্তি গড়া, মঙ্গল প্রদীপ ও একুশের স্তম্ভ পূজা?

সেটি কি শিক্ষা থেকে কুরআনের বিলুপ্তি?

সেটি কি আল্লাহর রাজ্যে আল্লাহরই পরাজয়?

 

রাষ্ট্র গড়া ও রাষ্ট্র ভাঙ্গা এবং তা নিয়ে যুদ্ধ করা -এই তো ইতিহাস,

সৃষ্টিশীল সভ্য কাজের তূলনা কি হয় মুসলিমদের সাথে?

শ্রেষ্ঠ মানব, শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র ও শ্রেষ্ঠ সভ্যতা তো মুসলিমেরই দান।

শাসক টেনেছেন উঠের রশি, চাকর বসেছেন পিঠে,

                                    খলিফা টেনেছেন আটার বস্তা গরীব-দুঃস্থের ঘরে,

সে ইতিহাস কি অন্য কারো আছে?

 

মানব গড়া ও রাষ্ট্র গড়া যে শ্রেষ্ঠ শিল্প -সেটি তো মুসলিমদেরই দান।

একাজ যে রাজনীতি নয়, শ্রেষ্ঠ ইবাদত সেটিই তো শেখায় ইসলাম।

অর্ধেকের বেশী সাহাবা শহীদ হয়েছেন এ পবিত্র ইবাদতে।

এরূপ ইতিহাসও কি কভু আছে?

 

সেকালের মুসলিম এনেছে বিজয় কুরআন আঁকড়ে ধরে,

একালে এনেছে পরাজয় ও বাড়িয়েছে অপমান কুরআন বর্জন করে।

সেকালের গর্ব একতা গড়ায় ও ভূগোল বাড়ানো নিয়ে,

একালে উৎসব কাফেরদের সাথে মিতালী গড়ে বিভক্তি-বিভাজনে।

বাঙালীর তাই বিশাল গর্ব পাকিস্তান ভাঙ্গা নিয়ে।

ভারত জুড়ে এনেছে প্লাবন কাফেরদের উল্লাসে।

কভু কি মুসলিম করেছে এমন আগে?   

 

মুসলিমগণ আজ নেমেছে অনেক নীচে,

চালকের যে সিটে নবীজী বসেছেন,

                                     সে সিটটি আজ হয়েছে হাই্জ্যাক দুর্বৃত্তের হাতে।

সে সিটে বসে ভেংচি দেখায় ভোটদস্যু ফ্যাসিস্ট,

কি পচন আজ! দস্যুনেত্রীও প্রধানমন্ত্রী হয়!

ডাকাতও শ্রদ্ধা পায়, মাননীয় হয়, মুসলিমদের দেশে!

এরূপ কি কভু সভ্য দেশে ঘটে?

                                                             

                                 শুধু নামায-রোযা, হজ্জ-যাকাত ও তাসবিহ-তাহলিল নয়,

জিহাদ নিয়ে সেদিন বাঁচতো সবাই, এনেছে বিজয় বিপুল রক্ত ব্যয়ে।

হয়েছে জিহাদ মিথ্যাচার ও স্বৈরাচার নির্মূলে,

অথচ আজ জিহাদ না হয়ে যুদ্ধ হয় বিপুল রক্ত ব্যয়ে,

 সেটি মিথ্যাচার ও স্বৈরাচার বাঁচাতে!

 

সেকালে নানা দেশের মানুষ ভেসেছে মুসলিমদের গড়া স্রোতে,

পেয়েছে পথ জান্নাত অভিমুখে।

অথচ মুসলিম আজ ভাসে কাফেরদের গড়া স্রোতে।

সিরাতুল মুস্তাকীম ছেড়েছে তারা বহু শতাব্দী আগে।

জিহাদকে বলে সন্ত্রাস, ধরে কাফেরদের পথ,

 রাজস্ব দেয়, অস্ত্র ধরে এবং যুদ্ধ করে কাফেরদের বিজয়ে।

ভারতও তাই লক্ষ লক্ষ নওকর পায় বাংলাদেশের বুকে।

                                                                                              

সেকালে বিদ্রোহ ও যুদ্ধ ছিল মিথ্যা ও দুর্বৃত্ত নির্মূলে,

অর্থ ও রক্ত ব্যয় হয়েছে জান্নাতের যোগ্য হতে।

অথচ মুসলিমেরা একালে বিদ্রোহ করে খোদ আল্লাহরই বিরুদ্ধে। 

মুসলিম ভোটে ও মুসলিম রক্তে ইসলাম আজ পরাজিত মুসলিমেরই দেশে।

৩০/১২/২০২১।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *