সবচেয়ে বড় অপরাধটি কর্ম হচ্ছে শিক্ষাঙ্গণে

 ফিরোজ মাহবুব কামাল

প্রতি রাষ্ট্রেই নানারূপ অপরাধ কর্ম ঘটে। কিন্তু সবচেয়ে জঘন্য অপরাধটি চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও মানব হত্যা নয় বরং সেটি মানুষকে জাহান্নামের আগুনে নেয়ার। সে ভয়ানক অপরাধটি করে শয়তান ও তার অনুসারিরা। তাই শয়তানকে আল্লাহতায়ালা সবচেয়ে বড় দুশমন বলেছেন। শয়তান ও তার অনুসারিরা সেটি করে কুশিক্ষার মাধ্যমে। সে অপরাধ কর্ম চালানোর জন্য শয়তান ও অনুসারিরা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে দখলে নেয়। তখন সেগুলি পরিণত হয় অপরাধ কর্মের সমগ্র দেশব্যাপী বিস্তৃত ইন্ডাস্ট্রিতে। অতি পরিতাপের বিষয় হলো, সবচেয়ে ভয়ানক সে অপরাধ কর্মটি হচ্ছে বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে।

চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও মানব হত্যা শিকার হওয়াতে কেউ জাহান্নামে যায় না। বহু নিরপরাধ-নিরীহ মানুষও সেরূপ অপরাধের শিকার হয়। কিন্তু কোটি কোটি মানুষ জাহান্নামে যাবে কুশিক্ষা পাওয়াতে। অপরাধটি এখানে চেতনা রাজ্যে বিষ প্রয়োগের। সে বিষটি সেক্যুলারিজম, জাতীয়তাবাদ,ফ্যাসিবাদ, হিন্দুত্ববাদ, নাস্তিকতাবাদ, কম্যুনিজমের ন্যায় বিষাক্ত মতবাদের। অপরাধটি এখানে বিবেক হত্যার। তখন একজন সুবোধ বালকও নৃশংস খুনি, ধর্ষক, সন্ত্রাসীতে পরিণত হয়। অথচ বাংলাদেশে সে ভয়ানক অপরাধকর্মটি কোন ডাকাতপল্লী, পতিতাপল্লী বা সন্ত্রাসীদের আখড়ায় হচ্ছে না। বরং অতি ব্যাপক ভাবে হচ্ছে দেশের হাজার হাজার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলাদেশে যারা শাপলা চত্বরের গণহত্যা, পিলখানায় হত্যাকান্ড, ২০১৮ সালের ভোটডাকাতি  ও জাহাঙ্গির বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণে সেঞ্চুরি  করেছে তারা বেড়ে উঠেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই। এরাই বাংলাদেশকে এ শতাব্দীর শুরুতে দুর্বৃত্তিতে বিশ্বমাঝে ৫ বার প্রথম স্থানে পৌঁছে দিয়েছে। সে গুরুতর অপরাধ কর্মের সাথে জড়িত শিক্ষাব্যবস্থার সাথে জড়িত ব্যক্তিগণ। তারা যেমন শিক্ষানীতির প্রণেতাগণ তেমনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা, পাঠ্যপুস্তকের লেখক ও শিক্ষকগণ।

বুয়েটের ন্যায় একটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পাল ছাত্র যেভাবে আবরার ফাহাদ নামক নিরীহ ছাত্রকে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করলো, সেটিই সুস্পষ্ট প্রমাণ করে দুর্বৃত্তায়নের প্রক্রিয়া বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গণে কতটা প্রবল। ১৯৭৩ সালে এমন খুনিরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলে ৭ জন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এরূপ ঘটনার সংখ্য এখন অসংখ্য। এবং সেটি ঘটতে শুরু করে বাংলাদেশের রাজনীতি ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব ও তার অনুসারিদের দখলে যাওয়ার পর। এর আগে বাংলার মাটিতে এরূপ নৃশংস বর্বরতা ঘটেনি। একাত্তরের এরাই হাজার হাজার বিহারীকে হত্যা করেছে, বহু বিহারী নারীকে ধর্ষণ করেছে এবং ছিনিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬ লাখ বিহারীর ঘরবাড়ী ও দোকানপাট। এটাই হলো একাত্তরের অর্জিত স্বাধীনতা যা মুজিবের অনুসারিদের দিয়েছে অপরাধকর্মের সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতা। নৃশংস অপরাধের প্রতি এরূপ অসভ্য আসক্তিকে বলা হয় একাত্তরের চেতনা। বাংলার বুকে যখন কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না এবং অধিকাংশ মানুষ ছিল নিরক্ষর, তখনও কি এরূপ নৃশংস ও অসভ্য কান্ড বাংলার বুকে ঘটেছে? তাই প্রশ্ন, প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা শিক্ষাখাতে ব্যয় করে লাভ কি?

মুষ্টিমেয় কিছু লোকের চুরি-ডাকাতি, গুম, খুন ও দুর্বৃত্তির কারণে কোন জাতি অসভ্য ও ব্যর্থ হয় না। সমগ্র দেশ তাতে আযাবের মুখে পড়ে না। কিন্তু রাষ্ট্র ব্যর্থ হয় এবং জনগণ জাহান্নামের যাত্রী রূপে বেড়ে উঠে কুশিক্ষার কারণে। দুর্বৃত্তি তখন কোভিডের ন্যায় মহামারির রূপ ধারণ করে। তাতে মানব সৃষ্টির মূল এজেন্ডাই ব্যর্থ হয়ে যায়। মহান আল্লাহতায়ালা চান, মানুষ এ পৃথিবী পৃষ্টে তাঁর খলিফা রূপে বাঁচবে। গড়ে তুলবে সুসভ্য সভ্যতা। কিন্তু কুশিক্ষিত মানুষদের দ্বারা সেটি হয় না; তারা বরং দুর্বৃত্ত ও বিদ্রোহী হয়। মহান আল্লাহতায়ালার খলিফা হওয়ার বদলে তারা শয়তানের খলিফায় পরিণত হয়। মুসলিম রূপে বেড়ে উঠা দূরে থাক, এমন দুর্বৃত্তের পক্ষে অসম্ভব হয় ন্যূনতম সভ্য মানুষ রূপে বেড়ে উঠা। কুশিক্ষা এভাবেই মানব জীবনে সবচেয়ে ভয়ংকর নাশকতাটি ঘটায়। নামে মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও এরাই বাংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশগুলিতে ইসলামের পরাজয় বাড়িয়েছে এবং বিজয় বাড়িয়েছে শয়তানের। সম্পদের প্রাচুর্য্য বাড়িয়ে এদের কল্যাণ করা যায় না। এরা ছুটে চলে জাহান্নামের দিকে। 

আল্লাহতায়ালার মহান সূন্নত হলো, যখনই তিনি কারো কল্যাণ চান, তাকে জ্ঞান দান করেন। বাড়িয়ে দেন তাঁর চিন্তা-ভাবনার সামর্থ্য। দেন, ন্যায়-অন্যায় এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে তারতম্য করার সামর্থ্য। তখন সে ব্যক্তি পায় জান্নাতের যোগ্য রূপে বেড়ে উঠার ঈমানী বল। অনেক কাফেরকেও আল্লাহতায়ালা দৈহিক শক্তি, সম্পদ ও সন্তান দান করেন; কিন্তু তাদেরকে ওহীর জ্ঞান দেন না। ওহীর জ্ঞানশূণ্যতার কারণে এমন ব্যক্তিগণ পথভ্রষ্ট হয়। এ জন্যই মহান আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দানটি অর্থসম্পদ নয়, সেটি হলো পবিত্র কুর’আনের জ্ঞান। অর্থসম্পদ জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচায় না। বাচায় কুর’আনের জ্ঞান। এ জ্ঞানই ব্যক্তির মনে আল্লাহর ভয় তথা তাকওয়া সৃষ্টি করে। সে কথা বলেছেন খোদ মহান আল্লাহতায়ালা। এ প্রসঙ্গে তাঁর বয়ান: “ইন্নামা ইয়াখশাল্লাহা মিন ইবাদিহিল উলামা।” অর্থ: সকল মানবদের মাঝে একমাত্র জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে।” অর্থাৎ‍ যার মধ্যে ওহীর জ্ঞান নাই তার মধ্যে আল্লাহতায়ালার ভয়ও নাই। আর সে ভয় না থাকলে নেক আমলে আগ্রহ আসবে কোত্থেকে? কুর’আনের জ্ঞান হলো ঈমানের খাদ্য যা ব্যক্তিকে নেক আমলের সামর্থ্য দেয় এবং বাঁচায় পাপ থেকে। এজন্যই কোন দেশ যখন গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, চুরি-ডাকাতি ও ভোটডাকাতির প্লাবনে ভাসতে থাকে, তখন বুঝতে হবে সে জাতির জীবনে ওহীর জ্ঞান জুটেনি। ফলে হিদায়েতও জুটেনি। এবং আল্লাহর ভয়ও সৃষ্টি হয়নি। এমন জাতি দুর্বৃত্তিতে বিশ্বরেকর্ড গড়বে –সেটিই তো স্বাভাবিক। বাংলাদেশ সেটি প্রমাণও করেছে। অথচ আল্লাহতায়ালার ভয় থাকলে ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের জিহাদ শুরু হতো। কারণ, সভ্য ভাবে বাঁচার সেটিই একমাত্র পথ।

আরবগণ যে কারণে বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয় এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতার জন্ম দেয় -তার মূলে তেল-গ্যাস ও সোনা-রূপার খনি ছিল না। আরবের আলো-বাতাস ও জলবায়ুও ছিল না। তাদের বিজয় ও গৌরবের মূলে ছিল পবিত্র কুর’আনের জ্ঞান। এবং সে সাথে নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাদের প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র। তখন রাষ্ট্রের সমগ্র সামর্থ্যের বিনিয়োগ হয়েছিল সকল নাগরিকের মাঝে কুর’আনী জ্ঞান ছড়িয়ে দেয়ার কাজে। ফলে মুসলিমগণ পরিণত হয় সে সময়ের সবচেয়ে শিক্ষিত জাতিতে। মানব ইতিহাসের বিস্ময়কর ভাষা বিপ্লব আসে বাংলাদেশের চেয়ে ৫০ গুণ বৃহৎ ভূ-খন্ড জুড়ে। মিশর, সুদান, ইরাক, সিরিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, আলজিরিয়া, মৌরিতানিয়ার ন্যায় দেশে মানুষ স্বেচ্ছায় তাদের মাতৃভাষা পাল্টিয়ে কুর’আনের ভাষাকে গ্রহণ করে। আরবী ভাষা পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ভাষায়। তখন জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয় প্রতিটি ঘর ও প্রতিটি মসজিদ।

উন্নত সভ্যতার নির্মাণে শুধু সম্পদের প্রাচুর্য থাকলে চলে না, থাকতে হয় জ্ঞানের সমৃদ্ধিও। শুধু ক্ষেতে-খামার ও শিল্পে বিপ্লব আনলে চলে না, সবচেয়ে বড় বিপ্লব আনতে হয় ভাষার অঙ্গণে। কারণ ভাষাই মনের ভূবনে জ্ঞানের সরবরাহ করে। আরবী ভাষায় সে বিপ্লবটি এনেছিল পবিত্র কুর‌’আন। সে কুর’আনী জ্ঞানের বলেই সাহাবাগণ ফেরেশতাদের চেয়েও শ্রেষ্ঠতর হতে পেরেছিলেন। ফলে তারা পরিণত হতে পেরেছিলেন মহান আল্লাহতায়ালার একনিষ্ঠ খলিফায় ও সৈনিকে। মহান আল্লাহতায়ালা কি কখনো তার নিজ বাহিনীর পরাজয় চান? ফলে তাদের সাহায্যে রণাঙ্গণে ফেরেশতাগণ নেমে এসেছিলেন। একারণেই তাদের জন্য বার বার বিজয়লাভ সহজ হয়ে যায়। মুসলিমদের অতীত গৌরব মুল কারণ সেই কুর’আনী জ্ঞান ও ইসলামী রাষ্ট্রের বিস্ময়কর নেয়ামত। কিন্তু মুসলিমদের মাঝে আজ এর কোনটিই বেঁচে নেই -না সে কুর‌’আনী জ্ঞান, না ইসলামী রাষ্ট্র।

 বরং বাংলাদেশের মত সেক্যুলারিস্টদের শাসিত দেশগুলিতে ঘটছে বিপরীতটি। রাষ্ট্র পরিণত হয়েছে চোরডাকাত ও ভোটডাকাত ফ্যাসিস্টদের অধিকৃত ইনস্টিটিউটে। ফলে সমগ্র রাষ্ট্র ও তার বিশাল অবকাঠামো পরিণত হয়েছে দুর্বৃত্তায়নের হাতিয়ারে। শিক্ষার নামে চলছে কুশিক্ষা। বাংলা ভাষা পরিণত হয়েছে হিন্দুত্ববাদের পৌত্তলিক বয়ান বাঙালি মুসলিমের চেতনায় পৌঁছানোর পাইপ লাইনে। ফলে বাংলাদেশীরা ইতিহাস গড়ছে দ্রুত নীচে নামায়। তারা বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ভোটডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি, ট্রেজারি লুট ও অর্থপাচারের ন্যায় দুর্বৃত্তিতে। তাদের সম্পর্ক নাই পবিত্র কুর’আনের সাথে। তারা অনুসরণ করেনা নবীজী (সা:)’র আদর্শ। নবীজী (সা:) যে ভাবে জিহাদ করলেন এবং প্রতিষ্ঠা দিলেন ইসলামী রাষ্ট্রের -সেটিকে এরা মনে করে পলিটিক্যাল ইসলাম। সে ইসলামকে তারা গালি দেয় মৌলবাদ সন্ত্রাস ও বলে।

রাজনীতিতে শয়তানের পক্ষ বিজয়ী হওয়ায় মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূলের পবিত্র সূন্নত বেঁচে নাই। বরং প্রতিষ্ঠা পেয়েছে শয়তানের সূন্নত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিও তাদের দখলে। ফলে যতই বাড়ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ততই বাড়ছে দুর্বৃত্ত উৎপাদনের আয়োজন। ফলে বেড়ে চলেছে জাহান্নামের যাত্রীর সংখ্যা। নবীজী (সা:) ১০টি বছর রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। তাই ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা নবীজী (সা:)‌‌’র শ্রষ্ঠতম সূন্নত। মুসলিম উম্মাহ সেদিন সর্ববৃহৎ বিশ্বশক্তির মর্যাদা পেয়েছিল সে রাষ্ট্রের জন্যই -বেশী বেশী মসজিদ-মাদ্রাসার জন্য নয়। কিন্তু যেরূপ রাষ্ট্র নবীজী (সা:) প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন সেরূপ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা মুখে আনাই বাংলাদেশে অপরাধ। এটিকে তারা জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সন্ত্রাস বলে।  

বাংলাদেশে শাসক শ্রেণীর সম্পর্ক হিন্দুত্ববাদী ভারতের সাথে। দেশটির জন্মও হিন্দুত্ববাদীদের হাত ধরে। ফলে জন্ম থেকেই বাংলাদেশ ভারতে অধিকৃত। দেশের প্রতিদিনের রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি ও সামরিক নীতি চলে ভারতে রাডারের নীচে। ক্ষমতাসীনদের এজেন্ডা দিন দিন হিন্দুত্ববাদীদের আরো কাছে নেয়া। তাই বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক ও মিডিয়ায় হিন্দুত্ববাদের বয়ান। পৌত্তলিক রবিন্দ্রনাথের হিন্দুত্বাবাদী গান না গাইলে স্কুল-মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম শুরু করা যায়না। কথা হলো, হিন্দুত্ববাদীদের সাথে মিতালী ও মহান আল্লাহতায়ালার কিতাবের প্রতি অবহেলা দেখিয়ে কি তাঁর কাছে প্রিয় হওয়া যায়? সফল হয় কি মুসলিম রূপে বাঁচা?

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *