মুসলিম জীবনে ব্যর্থতা ও অর্জিত আযাব

ফিরোজ মাহবুব কামাল

দুর্বলতার আযাব

এ পৃথিবীতে দুর্বলতা নিয়ে বাঁচাটিই বড় আযাব। তখন আসে শত্রু শক্তির অধিকৃতি। আসে পরাধীনতা, জুলুম, লুন্ঠন, মৃত্যু, ধর্ষণ ও উদ্বাস্তু জীবনের লাঞ্ছনা। তখন অসম্ভব হয় সভ্য জীবন ও পূর্ণ দ্বীন পালন। সে পরাধীন জীবনে নবীজী (সা:)’র ইসলাম -যাতে রয়েছে ইসলামী রাষ্ট্র, শরিয়তের প্রতিষ্ঠা, জিহাদ, শুরা ও মুসলিম ঐক্য, তা শুধু কোর’আনে থেকে যায়। সেগুলো বিলুপ্ত হয় সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে। আজ মুসলিম উম্মাহকে তেমন একটি আযাবই ঘিরে ধরেছে। তারা যে কতটা দুর্বল ও মেরুদন্ডহীন, কতটা বিবেক ও চেতনাহীন এবং কতটা পঙ্গু ও অসহায় –সেটি কোন গোপন বিষয় নয়। ঘরে সশস্ত্র ডাকাত ডুকলে নিরস্ত্র দুর্বল গৃহকর্তার প্রতিবাদের সাহস থাকে না। সন্তানকে খুন বা স্ত্রী-কণ্যাকে ধর্ষিত হতে দেখেও এমন দুর্বল ব্যক্তির কিছু করার সামর্থ্য থাকে না। নিষ্ঠুর বর্বরতাকেও তখন নীরবে সইতে হয় । যুগে যুগে পশুবৎ দুর্বৃত্তদের হাতে এভাবেই কোটি কোটি মানুষ নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিন, কাশ্মির, ভারত, চেচনিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, আরাকানের জনপদে অসংখ্য মানুষ এসব দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত ও ধর্ষিতা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে।

এসবই হলো দুর্বল থাকার আযাব। এ আযাব মুসলিমদের নিজ হাতের কামাই। মহান আল্লাহতায়ালা কাছে অতি অপছন্দের হলো দুর্বল থাকা। সে দুর্বলতা নিজ জীবনে ও নিজ দেশে মানবরূপী হিংস্র পশুদের ডেকে আনে। দুর্বল থাকাটি এজন্যই ঈমানদারের গুণ নয়। শত্রুর হাতে পরাজয় এড়াতে বাঁচতে হয় প্রতি মুহুর্তে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে। এভাবে লড়াই করে বাঁচাটাই হলো জিহাদ। জিহাদ দেয় নিরাপত্তা; দেয় ইজ্জত নিয়ে বাঁচার অধিকার। তাই ইসলামে এটি ফরজ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশটি হলো,“ওয়া আয়েদ্দুলাহুম মাস্তাতা’তুম মিন কুওয়া ওয়া মিন রিবাতিল খাইলি তুরহেবুনা বিহি আদুওয়াল্লাহ ওয়া আদুওয়ালাকুম।” অর্থ: “এবং (হে ঈমানদারগণ) যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নাও সমগ্র সামর্থ্য দিয়ে এবং (যুদ্ধের জন্য) শক্ত ভাবে বাঁধো ঘোড়ার লাগামকে এবং এ ভাবে সন্তস্ত্র করো আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে … ।” –(সুরা আনফাল আয়াত ৬০)। এ কোর’আনী নির্দেশ পালন ততটাই ফরয় যতটা ফরয নামায-রোযা পালন। কারণ এ ফরমানও তো মহান আল্লাহতায়ালার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুসলিম জীবনে কোথায় সে প্রস্তুতি? শিক্ষা-দীক্ষা, বিজ্ঞান ও সামরিক আয়োজনে পিছনে থেকে কি প্রস্তুতি নেয়া যায়? বরং প্রস্তুতি তো শত্রুর হাতে পরাজয় ও গোলামী মেনে নেয়ায়। নিছক নামাজ রোযা, হজ্ব-যাকাত বা দোয়াদরুদ পালনে কি পূর্ণ ইসলাম পালন হয়? সে পথে কি শক্তি, নিরাপত্তা ও ইজ্জতও বাড়ে? বরং তাতে মহাপাপ হয় অপূর্ণ ইসলাম পালনের। এবং সে মহাপাপ আযাব ডেকে আনে। মুসলিমগণ তো সে আযাবের মধ্যেই।

দুর্বলতা নিয়ে বাঁচাতে যে আযাব -নিছক চোখের পানি ফেলে তা থেকে পরিত্রাণ মেলে না। কারণ, পরিত্রাণের পথ সেটি নয়। পরিত্রাণের পথ তো মহান আল্লাহতায়ালার প্রতিটি হুকুমকে মেনে চলায়। সেরূপ মেনে চলাটি লক্ষ্য হলে মুমিনের জীবনে তখন সর্বশক্তি দিয়ে জিহাদের প্রস্তুতিও আসে। মুসলিম জীবনে মূল সমস্যাটি তো এখানেই। নবীজী (সা:)’র সাহাবাদের মাঝে একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেকে সর্বাত্মক ভাবে প্রস্তুত করেননি বা যুদ্ধে অংশ নেননি? কিন্তু আজ পূর্ণ দ্বীন পালনে সে আগ্রহ কই? সর্বসামর্থ্য নিয়ে বেড়ে উঠার প্রস্তুতিই বা কই? নবী করীম (সা:)’র সাহাবাদের মধ্য থেকে এমন কি বৃদ্ধ, যুবক এবং অতিশয় নিঃস্বরাও একাজে স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন। অঙ্গিকারহীন নিষ্ক্রিয়তা চিত্রিত হয়েছে মুনাফিকি রূপে। নবীজী (সা:)’র পিছনে নামায-পাঠও এরূপ মুনাফিকদের মুনাফিকি হওয়া থেকে তাই বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু আজকের মুসলিমদের মাঝে ক’জন আগ্রহী মহান আল্লাহতায়ালার উপরুক্ত হুকুম পালনে? সে আগ্রহ না থাকার প্রমাণ তো যুদ্ধের প্রস্তুতি না থাকা। নবীজীর (সাঃ) নফল ইবাদত, নফল নামায ও বহু নফল আমলকে আমরা সূন্নত গণ্য করি। এ সূন্নত পালন না করলে নিজেকে গোনাহগারও ভাবি। অথচ শত্রুর বিরদ্ধে জিহাদে নিজেকে প্রস্তুত রাখাটি নফল কাজ নয়, এটি ফরজ। কিন্তু সে ফরজ ক’জন পালন করে? সে ফরজ পালনে কতটা বিনিয়োগ হয় নিজের অর্থ, শ্রম, সময় ও মেধার।

উপরুক্ত আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা মুসলিমদেরকে নিজেদের ঘোড়াকে সর্বদা প্রস্তুত রাখার কথা বলেছেন। সে কালে ঘোড়া রণাঙ্গণে ট্যাংকের কাজ দিত। ফলে ঘোড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। দরিদ্র সাহাবীদের সামর্থ্য ছিল না সুন্দর গৃহ নির্মাণের, অনেকের ঘরে এমনকি দুই বেলা খাবারও জুটতো না। কিন্তু জীর্ণ ঘরে বা জ্বরাজীর্ণ বসনে থেকেও তারা উন্নত মানের ঘোড়া কিনতেন। সে ঘোড়াকে সুস্থ্য ও সবল রাখতে অর্থের পাশাপাশি প্রচুর সময়ও ব্যয় করতেন। তাদের বাঁচার মধ্যে ছিল যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার স্ট্রাটেজিক আয়োজন। সে সামরিক প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে যা ব্যয় হতো -তার চেয়ে বেশী ব্যয় হতো সাহাবাদের নিজেদের তহবিল থেকে। এভাবেই তারা নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতেন জান্নাতের এ্যাকাউন্টে। সে কালের দরিদ্র মুসলিমগণ এ পথেই এনেছিলেন উপর্যোপরি বিজয়। তাঁরা পরাস্ত করেছিলেন পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্যের ন্যায় দুটি বিশ্ব শক্তিকে। তাদের এ বিজয়ের সবচেয়ে বড় সম্বল ছিল মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য। তাদেরকে বিজয়ী করতে তিনি বার বার ফেরশতা বাহিনী পাঠিয়েছিলেন। কারণ, সাহাবাগণ পরিণত হয়েছিলনে মহান আল্লাহতায়ালার নিজস্ব বাহিনীতে। আর নিজ বাহনীকে সাহায্য করাই তো তাঁর সূন্নত।

 

পথটি নিশ্চিত পরাজয়ের

মুসলিমগণ যে পথটি বেছে নিয়েছে সেটি নিশ্চিত পরাজয়ের। বিজয় বা গৌরব কখনোই এ পথে আসে না। এবং সে পথে অতীতেও কখনো আসেনি। সকল বিজয় আসে মহান আল্লাহতায়ালা থেকে। পবিত্র কোর’আনে বলা হয়েছে, “ওয়া মা নাছরু ইল্লা মিন ইন্দিল্লাহি” অর্থ: বিজয় আসে একমাত্র আল্লাহ থেকে।” যেখানে তাঁর সাহায্য নাই, সেখানে বিজয়ও নাই। ফলে তাঁর সাহায্য পাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তও আছে। সাহায্য স্রেফ নিছক দোয়ায় জুটে না, অপরিহার্য হলো নিজের জান, মাল, মেধা, শ্রম ও রক্তের বিনিয়োগ। ঈমানদারের নিজের বিনিয়োগ বাড়লে মহান আল্লাহতায়ালাও তাঁর বিনিয়োগে বৃদ্ধি ঘটান। একমাত্র তখনই বিজয় আসে। এটিই হলো তাঁর সনাতন নীতি। পবিত্র কোর’আনে সেরূপ নীতির কথা ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি বার বার শোনানো হয়েছে।

যে দরিদ্র মুসলিম তাঁর জীবনের সমগ্র সঞ্চয়ই শুধু নয়, প্রিয় প্রাণটিও মহান আল্লাহতায়ালার পথে খরচ করতে দু’পায়ে খাড়া হয় তাঁকে তিনি সাহায্য করবেন না -সেটি কি হয়? কারণ, সে তো তাঁর দল তথা হিযবুল্লাহর সৈনিক। তখন ঈমানদারদের দুর্বলতা তিনি পুরণ করেন নিজের অসীম কুদরত দিয়ে। তবে যে কৃষক জমিতে কোন শ্রমই বিনিয়োগ করেনি, বপন করেনি একটি বীজও – সে কি করে ফসল ফলাতে পারে? রাব্বুল আ’লামীনই বা কি করে তার ঘরে ফসল তুলে দিবেন? সারা রাতের নফল ইবাদতে চোখের পানি ফেলে কি অনাবাদী জমিতে ফসল ফলানো যায়? সেটি সম্ভব হলে নবীজী (সাঃ) যুদ্ধের ময়দানে কেন নিজের রক্ত ফেললেন? প্রায় শতকরা ৬০ ভাগের বেশী সাহাবা কেন শহীদ হলেন? বিনিয়োগ ছাড়া যে বিজয় আসে না –এ সত্যটি বুঝে উঠা কি এতোই কঠিন? অথচ মুসলিম জীবনে সে সত্যের উপলব্ধি কোথায়? বিশ্বে আজ প্রায় দেড় শত কোটি মুসলিম। মুসলিম ভূমি একের পর এক অধিকৃত হচ্ছে। মুসলিমগণ দেশে দেশে লাশ হচ্ছে, মহিলারা ধর্ষিতা হচ্ছে। বহু লক্ষ মুসলিম উদ্বাস্তু হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মুসলিমদের নিজেদের বিনিয়োগটি কই?  ক’জন বিনিয়োগ করেছে নিজ অর্থ, রক্ত, শ্রম ও মেধা? নিজেদের নিরাপত্তা বাড়াতে যারা নিজ সামর্থ্যের বিনিয়োগ করে না, মহান আল্লাহতায়ালা কি তাদের বিজয় দেন?

প্রতিটি পরাজয়েরই ইতিহাস থাকে। মুসলিম জীবনে পরাজয়ের শুরু তখন থেকেই যখন ফরজের বদলে নফল পালন বেশী গুরুত্ব পেয়েছে। নফল আদায় না করলে কেউ পাপী হয় না। অথচ ফরজ পালনে ব্যর্থতা শুধু কবিরা গুনাহই নয়, আযাবও ডেকে আনে। মুসলিম মাত্রই মহান আল্লাহতায়ালার সৈনিক। সৈনিকের দায়িত্বপালন প্রতিটি ঈমানদারের উপর ফরজ। এটিই তাঁর সার্বক্ষণিক ইবাদত। অতি গুরুতর অপরাধ হলো সে দায়িত্বপালনে অবহেলা দেখানো। মুসলিম মাত্রই যেমন জ্ঞানী হবে, তেমনি সৈনিক, জেনারেল, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী এবং ডাক্তারও হবে। কিন্তু এসবই হবে মহান আল্লাহতায়ালার সৈনিক রূপে উচ্চতর দায়িত্বপালনের তাগিদে। কারণ দ্বীনকে বিজয়ী করার লড়ায়ে মুর্খ সৈনিক আর জ্ঞানবান সৈনিকের অবদান এক নয়। এ লক্ষ্যে সে যেমন সুন্দর গৃহ ও শহর নির্মান করে, তেমনি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, সেনানীবাস, অস্ত্রশিল্প, কলকারখানা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানও গড়ে। সভ্যতা নির্মানের লড়াইয়ে এগুলোও অপরিহার্য। কারণ সভ্যতা কখনোই তাঁবুতে বা মুর্খদের দ্বারা  গড়ে উঠে না। সুফিদের বড় অপরাধ, মুসলিমদেরকে জিহাদ ও সভ্যতা নির্মাণের মিশন থেকে উঠিয়ে খানকায় বা বদ্ধ গুহায় তুলেছিল এবং ত্বরান্বিত করেছিল সামরিক পরাজয়।

 

পথটি আত্মবিনাশের

মহান আল্লাহতায়ালার জমিনকে পাপ মুক্ত করা ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাই মুসলিম জীবনের মূল মিশন। নইলে অসম্ভব হয় সভ্য জীবন। তখণ প্লাবন আসে পাপাচারে। পাপ নির্মূলের এ পথে লড়াই অনিবার্য। কারণ পাপীরা বিনা যুদ্ধে পথ ছেড়েছে -সে নজির নেই। লড়াই এজন্যই মুসলিম জীবনে অনিবার্য। নবীজী (সা:)’র যুগে কোন মুসলিমই তা থেকে পরিত্রাণ পাননি। পরিস্থিতি আজও তা থেকে ভিন্নতর নয়। আর এ লড়ায়ে জিততে হলে প্রতিটি মুসলিমের যোগ্যতায় বৃদ্ধি আনাটি জুরুরি। মুর্খ, জ্ঞানহীন ও প্রস্তুতিহীন থাকাটি এজন্যই মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের বড় অবাধ্যতা তথা মহাপাপ। এ পাপ আরো বহুপাপের জন্ম দিয়েছে। সত্য যত প্রবলই হোক -তা নিজ গুণে প্রতিষ্ঠা পায় না। প্রতিষ্ঠা পেলেও তা নিজ শক্তিতে টিকে থাকে না। সত্যের প্রতিষ্ঠা ও সেটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য চাই সার্বক্ষণিক সৈনিক। মুসলিম তো সে সৈনিকের কাজই করে। নবীপাক (সা:) এ কাজে আরবের বহু বস্তিতে ঘুরেছেন। গালী খেয়েছেন, রক্তাত্ব হয়েছেন এবং স্বশরীরে বহু যুদ্ধও লড়েছেন। সাহাবাগণ এ মিশন নিয়ে নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, বহু সাগরও অতিক্রম করেছিলেন। কিন্তু নবী জীবনের এ ফরজ ইবাদত আজ ক’জনের জীবনে?

মুসলমিদের মাঝে বিভক্তি গড়া ইসলামে হারাম। অথচ “ওয়া লা তাফাররাকু” (অর্থ: এবং তোমরা বিভক্ত হয়ো না) -মহান আল্লাহতায়ালার এ নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে খোদ মুসলিমগণ। হারাম হলো মুসলিম ভূমিতে অমুসলিম  শত্রু বাহিনীকে ঢেকে আনা। সে পাপ কর্মটিও হচ্ছে মুসলিমদের দ্বারা। মুসলিমদেরকে বলা হয়েছে “বুনিয়ানুম মারসুস” তথা সীসাঢালা প্রাচীরসম দেয়াল গড়তে। সেরূপ একতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রাথমিক যুগের মুসলিমগণ। ফলে মুসলিম রাষ্ট্রের আয়তন শতগুণ বাড়লেও রাষ্ট্রের সংখ্যা একটির স্থলে দুটি হয়নি। এক ও অভিন্ন রাষ্ট্রের মাঝে নানা ভাষী, নানা অঞ্চল ও নানা বর্ণের মানুষ একত্রে বসবাস করেছে। সেদিন মুসলিম বাহিনীর মূলে ছিল এই একতা। ফলে সেদিন মুসলিম জনপদে শত্রুবাহিনীর হাতে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাঠ হয়নি। কোন পাত্রে ময়লা জমলে সুস্থ্য মানুষের চেষ্ঠা হয় সেটিকে ময়লামুক্ত করায়। কিন্তু ময়লা জমেছে এ যুক্তিতে সে পাত্রটিকে ভেঙ্গে ফেলা শিশুসুলভ বালখিল্যতাই শুধু নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ সে জঘন্য অপরাধটি হয়েছে মুসলিম উম্মাহর ভূগোল ভাঙ্গার ক্ষেত্রে।

দেশের জনগণ দশটি ভিন্ন ভাষায় কথা বলে এ যুক্তিতে মুসলিম দেশকে দশ টুকরোয় বিভক্ত করা শুধু বিদয়াতই নয়, সুস্পষ্ট  হারামও। মুসলিম ভুমিতে এজিদদের মত ব্যক্তিদের স্বৈরশাসন একবার নয় বহুবার এসেছে। কিন্তু প্রাথমিক যুগের প্রজ্ঞাবান মুসলিমদের রাগ কখনই সেসব এজিদদের কারণে মুসলিম ভূমির অখন্ড মানচিত্রের  উপর গিয়ে পড়েনি। অপরাধ তো ভূগোলের নয়। ইজ্জত-আবরু, ধর্ম-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতার প্রতিরক্ষায় বৃহৎ ভূগোল শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, অপরিহার্যও। ভূগোল বাড়াতে মুসলিমগণ যে বিস্তর অর্থ ও রক্ত ব্যয় করেছে -সেটি নিছক খেলাতামাশার জন্য নয়। বরং বিশ্বশক্তির মর্যাদা নিয়ে বেড়ে উঠার প্রয়োজনে। সে ভূগোলের ক্ষুদ্রকরণে একমাত্র শত্রুরাই খুশী হতে পারে। ফলে সে আমলে বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় পঞ্চাশ গুণ বৃহৎ মুসলিম ভূমিকে ভাঙ্গার কল্পনা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মগজে ঢুকেনি। এ কাজে পৌত্তলিক, ইহুদী ও খৃষ্টানদের সাথে ষড়যন্ত্রও করেনি। অথচ এযুগের জাতিবিধ্বংসী নেতারা সে জঘন্য অপরাধই করেছে। এরাই শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে মুসলিম ভূগোলকে চূর্ণবিচূর্ণ করেছে। এভাবে বিনষ্ট করেছে বিশ্বশক্তি রূপে উত্থানের সম্ভাবনাকে। আজ যে মুসলিম উম্মাহর মেরুদন্ডহীন পঙ্গুদশা –সে জন্য তো এসব নেতারাই দায়ী। আর শুধু নেতারাই নয়, সাধারণ মুসলিমদের বিবেকশূণ্যতা ও চেতনাশূণ্যতাও কি কম? তাদের অপরাধ, মুজিবের ন্যায় শত্রুর সেবাদাসকে এরা নেতার আসনে বসিয়েছে। শুধু তাই নয়, অপরাধীদেরকে তারা জাতির পিতা বা জাতির বন্ধুরূপেও প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ফলে পাপ শুধু হেজাজের শরিফ হোসেন, তুরস্কের কামালপাশা, আফগানিস্তানের কারজাই বা বাংলাদেশের মুজিবদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বিস্তার পেয়েছে জনগণের মাঝেও। ফলে সে পাপ আযাব নামিয়ে এনেছে জনগণের উপরও।

 

পথটি গাদ্দারীর

অধুনা বিশ্বে মুসলিমদের সংখ্যা ও সম্পদ দুটিই বেড়েছে। সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সম্পদের কথা বাদই দেয়া যাক, শুধু মক্কা, মদিনা, রিয়াদ বা জেদ্দার ন্যায় নগরীগুলোতে যে সম্পদ জমা হয়েছে খোলাফায়ে রাশেদার আমলে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর হাতে তা ছিল না। সেদিন কাদামাটির জীর্ণঘরে বাস করতেন খলিফাগণও। অথচ মুসলিম ইতিহাসের সিংহভাগ গৌরবের নির্মাতা তারাই। মানুষের সৃষ্টির মধ্যে মহান আল্লাহতায়ালার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে। মানব মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য পায় ও সফল হয় -সে এজেন্ডার সাথে একাত্ম হওয়ার কারণে। সে এজেন্ডাটি হলো, “ওয়া মা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসানা ইল্লা লি’ইয়াবুদুন: অর্থ: “ইবাদত ভিন্ন অন্য কোন লক্ষ্যে আমি মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করিনি।”

ফলে যারা মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার সাথে একাত্ম হতে চায়, ইবাদত ভিন্ন তাদের জীবনে অন্য কোন লক্ষ্য থাকতে পারে না। ইবাদতের অর্থ, আল্লাহতায়ালার প্রতিটি হুকুমের আনুগত্য। একাজ ক্ষণিকের নয়, আমৃত্যু। ইবাদত শুধু নামায রোযা বা হজ্ব-যাকাত নয়, বরং যেখানেই আল্লাহর হুকুম, ইবাদত হলো সে হুকুমেরই প্রতি আত্মসমর্পণ। এ ইবাদত যেমন মসজিদে, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যে, রাজনীতি, সংস্কৃতি, অফিস-আদালত ও সামরিক বাহিনীতেও। মুসলিমের ঈমান ও ইবাদত তাঁর আমৃত্যু সহচর। ঈমান নিয়ে সে শুধু মসজিদেই যায় না বা হজ্বই করে না বরং রাজনীতি, অফিস আদালত, সামিরক ও বেসামরিক কর্ম ক্ষেত্রেও ঢুকে। প্রতিটি কাজের মধ্যেই তার ঈমান বিমূর্ত হয়।। আল্লাহর বাহিনীতে নাম লিপিবদ্ধ করার এটিই একমাত্র পথ। এবং এ পথেই প্রাপ্তী ঘটে আল্লাহপাকের গায়েবী মদদ। আল্লাহপাক কি কখনো তাঁর নিজ বাহিনীর পরাজয় চাইতে পারেন? প্রশ্ন হলো, মুসলিমগণ মহান আল্লাহতায়ালার সে ঘোষিত এজেন্ডার সাথে কতটা একাত্ম হতে পেরেছে? কতটা বেড়ে উঠতে পেরেছে তাঁর বাহিনী রূপে?

মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র যে পরাজয় –সে পরাজয় মহান আল্লাহপাকের বাহিনীর নয়। এ পরাজয় মূলত ভন্ড মুসলিমদের -যারা শুধু নামেই মুসলিম। তাদের ইসলাম যে নবীজী (সা:)র ইসলাম নয় –তা নিয়ে কি সন্দেহ আছে? নবীজী (সা:)’র ইসলাম হলে তো তাদের জীবনে ইসলামী রাষ্ট্র, শরিয়ত, জিহাদ ও একতা থাকতো।  মুসলিমদের যে পরিচয় নবীজী (সা:)’র আমলে ছিল, সে পরিচয় নিয়ে কি তারা বেড়ে উঠতে পেরেছে? বরং তাদের রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি, সংস্কৃতি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ তো মহান আল্লাহর এজেন্ডার সাথে গাদ্দারীর আলামত। এমন গাদ্দারী কি আযাবই অনিবার্য করে না। তারা ব্যর্থ হয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার বাহিনীতে নাম লেখাতে। ফলে তাঁর পক্ষ থেকে মদদই বা জুটবে কীরূপে? যারা মিথ্যা বলে, ঘুষ খায়, সূদ খায়, দূর্নীতি করে এবং ইসলামের শত্রুপক্ষকে নির্বাচিত করে –তারা কি করে মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য পেতে পারে? যারা নিজেরাই তাঁর সৈনিক রূপে জিহাদে রাজী নয়, তাদের সাহায্য করলে তো বিজয়ী হয় শয়তান।

 

 

ব্যর্থতাটি মুসলিম হওয়ায়

মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাটি মুসলিম রূপে বেড়ে উঠায়। তাদের সকল ব্যর্থতার কারণ হলো এটি। যে লক্ষ্যে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছিল –বিচ্যুত হয়েছে সে লক্ষ্য থেকে। মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডা বাদ দিয়ে তারা বাঁচছে নিজ স্বার্থ, দলীয় স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ ও গোত্রীয় স্বার্থ চেতনায়। নামায-রোযা-হজ্বের ন্যায় ইবাদত রূপ নিয়েছে নিছক আনুষ্ঠিকতায়। চরিত্র ও কর্মক্ষেত্র পূর্ণ হয়েছে মহান আল্লাহর অবাধ্যতায়। রাজনীতি, সংস্কৃতি, যুদ্ধবিগ্রহ এবং জীবন-সংগ্রামের সর্বক্ষেত্র থেকে বিলুপ্ত হয়েছে আল্লাহতায়ালার অনুগত বান্দাহ হওয়ার আকুতি। দূর্নীতি নির্মূলের এজেন্ডা ছেড়ে তারা জন্ম দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রের। মুসলিমের রাজনীতি হবে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার হাতিয়ারে, অথচ সেটি পরিণত হয়েছে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ারে। মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার বদলে তাদের রাজনৈতিক মিশন হলো, নিজেদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা। এটি যে শিরক –সে উপলব্ধিই বা ক’জনের চেতনায়? প্রশ্ন হলো, ইসলাম থেকে এতো দূরে সরে কি মুসলিম থাকা যায়?

মুসলিমগণ যুদ্ধের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিবে এবং শত্রুকে সন্ত্রস্ত করবে –এটিই ছিল মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশ। কিন্তু মুসলিম জীবনে সে নির্দেশ গুরুত্ব পায়নি। বরং তারা ধরেছে উল্টো পথ। সন্ত্রস্ত করার বদলে সকল সামর্থ্য ব্যয় করে শত্রুকে তুষ্ট করতে। পতন এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, চিহ্নিত শত্রুদের খুশী করতে এরা শুধু মুসলিম ভূমিকেই খন্ডিত করেনা বরং শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জনগণকে নিরস্ত্র ও শক্তিহীনও করে। শেখ মুজিব ও তার দল তাই ভারতকে তুষ্ট করতে গিয়ে ১৯৭১’য়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানকে টুকরো করেছিল। এবং বিলুপ্ত করেছিল ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সীমান্তকে। সে সাথে পঙ্গু করেছিল সেনাবাহিনীকে। গণহত্যা চালিয়েছিল রক্ষিবাহিনী দিয়ে এবং চাপিয়ে দিয়ছিল স্বৈরাচারি বাকশালী শাসন। দূর্ভিক্ষ ডেকে এনে বহু লক্ষ মানুষের জীবনে মৃত্যুও ডেকে এনেছিল। ইসলামের উত্থান রুখতে সংকুচিত করেছিল ইসলামী শিক্ষা ও ইসলামকে বিজয়ী করার রাজনীতি। একমাত্র আল্লাহর শত্রুগণই এমন কাজে খুশি হতে পারে। ইসলামের শত্রুদের খুশি করার এরূপ প্রকল্প নিয়ে কি মহান আল্লাহতায়ার রহমত আশা করা যায়? বরং তা তো আযাব নামিয়ে আনে। বাঙালী মুসলিমের জীবনে তখন আযাব ও অপমান বেড়েছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ভিক্ষার তলাহীন ঝুলি হওয়ার মধ্য দিয়ে।

 

আগ্রহ নিয়ে ইজ্জত নিয়ে বাঁচায়

গোলামী নিয়ে বাঁচায় খরচ নাই। অথচ খরচটি বিশাল নিজ ঈমান-আক্বিদা ও ইজ্জত নিয়ে বাঁচায়। তখন বাঁচতে হয় পদে পদে যুদ্ধ করে। ইজ্জত নিয়ে বাঁচাকে নিশ্চিত করতেই মুসলিমদের উপর জিহাদকে ফরজ করা হয়েছে। আর কোন ধর্মে সে বিধান নাই। অথচ আজকের মুসলিমদের সমস্যাটি হলো তাদের মন থেকে সে ইজ্জত-চিন্তাই বিলুপ্ত হয়েছে। তারা বেছে নিয়েছে বৃহৎ শক্তির গোলামীর পথ। শত্রু শক্তি নারাজ হবে এভাবে সামরিক শক্তি বাড়াতেও তারা অনাগ্রহী। ফলে ক্ষুদ্র ও দরিদ্র উত্তর কোরিয়ার যে সামরিক শক্তি রয়েছে তা ধনকুবের সৌদিদের নেই। উত্তর কোরিয়া আনিবক বোমা নির্মান করছে অথচ সৌদিরা বন্দুকও তৈরি করতে পারে না। কারণ, সৌদিদের সে ইজ্জত-চিন্তাই নেই। নইলে ইসরাইলের চেয়ে প্রায় চারগুণ বৃহৎ জনশক্তি নিয়ে নিজ ভূমিতে কেন মার্কিনীদের স্থান দিবে? একই অবস্থা বাংলাদেশসহ অধিকাংশ মুসলিম দেশের।

ইসলামের শত্রুরা একমাত্র  অস্ত্রের ভাষাই বোঝে। ন্যায়নীতির ওয়াজ তারা বোঝে না। ফলে ভারতের কাছে পাকিস্তানের যে মর্যাদা, বাংলাদেশের তা নেই। পাকিস্তানের সীমানায় তারা পা রাখতে ভয় পায়, অথচ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে গবাদী পশুই শুধু নয় নারী-পুরুষও ধরে নিয়ে যায়। এর কারণ, পাকিস্তানের পারমানবিক অস্ত্র, বিশাল সামরিক বাহিনী ও সদাজাগ্রত যুদ্ধাবস্থা। একই কারণে ক্ষুদ্র উত্তর কোরিয়াকেও সমীহ করে চলছে যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী  ডোনাল্ড রামসফিল্ড ঘোষণা দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ করিয়া থেকে তাদের ৩৭ হাজার সৈন্য সরিয়ে নিবে। কারণ, উত্তর কোরিয়া মিজাইল ও পারমানবিক অস্ত্রের রেঞ্জের মধ্যে তাদের অবস্থান। ফলে ভীতি ঢুকেছে মার্কিনীদের মনে। অথচ বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবত মার্কিন সৈন্যের অপসারণের দাবীতে কত বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী সিয়োলের রাজপথে। কিন্তু এতকাল তাতে কর্ণপাতই করেনি। ১২ বছর যাবত ইরাকে মার্কিন হামলা না হওয়ার কারণ মার্কিনী ন্যায়নীতি নয়। বরং ইরাকের হাতে রাসায়নিক অস্ত্রের ভীতি। সে ভীতি দূর হয় জাতিসংঘ বাহনীর তদন্তের মাধ্যমে। সে ভয় দূর হওয়ার পরই শুরু হয় ইরাকের উপর মার্কিন হামলা।

অস্ত্র ও যুদ্ধের প্রস্তুতি শুধু যুদ্ধজয়ের জন্যই অপরিহার্য নয়, মান-সম্মান ও ইজ্জত-আবরু নিয়ে বাঁচার জন্যও। স্কুল -কলেজ, রাস্তা-ঘাট বা কলকারখানা ও কৃষি বাড়িয়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা যায়, কিন্তু তাতে ইজ্জত-আবরু বাঁচে না। বাড়ে না নিরাপত্তা। কাতারী ও কুয়েতীদের স্বচ্ছলতা কি সাধারণ মার্কিনীদের চেয়ে কম? কিন্তু সে স্বচ্ছলতায় কি ইজ্জত বেড়েছে? কোন সম্মানী ব্যক্তিই অন্দরহমলে চিহ্নিত শত্রু বা অনাত্মীয়কে ঢুকতে দেয়না। কিন্তু এরা দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ প্রকাশ্যে ক্রুসেড ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে তার সেনাবাহিনী মুসলিমদের বন্ধু হয় কি করে? মুসলিম ভূমিতে সে বাহিনী প্রবেশের অনুমতিই বা পায় কি করে? নাদুস-নুদস দেহ নিয়ে পথের অনেক কুকুরও বাঁচে। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালা তো চান তাঁর প্রিয় বান্দাহরা ইজ্জত নিয়ে বাঁচুক। এজন্যই ঘোষণা দিয়েছেন, “ওয়া আয়েদ্দুলাহুম মাস্তাতা’তুম মিন কুওয়া..” অর্থাৎ “প্রস্তুত হও সমগ্র শক্তি দিয়ে।” তাই মহান আল্লাহতায়ালার সদাপ্রস্তুত সৈনিক হিসাবে এ প্রস্তুত হওয়াটিই মহান আল্লাহতায়ালার ইবাদত। এটি ফরজ। কোন মুসলিম কি মহান আল্লাহতায়ালার এ হুকুমের কি অবাধ্য হতে পারে? এমন অবাধ্যতা মহাপাপ। অবাধ্যতার এ পাপ যে আল্লাহতায়ালার আযাবকেই যে অনিবার্য করে তুলে -তা নিয়ে সন্দেহ আছে কি?   ১ম সংস্করণ ১২/০৩/২০০৩; ২য় সংস্করণ ০৫/০১/২০২১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *