বিবিধ ভাবনা ৬১

ফিরোজ মাহবুব কামাল

১. চাই নতুন ফসল

হিফাজতে ইসলামের হুজুরগণ সাংবাদিক সন্মেলন করে বলেন তারা রাজনীতিতে নাই।এটি চরম সূন্নত বিরোধী কথা। যার মধ্যে ইসলামের সামান্য জ্ঞান আছে তারা কি এরূপ কথা বলতে পারে? এসব হুজুরদের কাছে প্রশ্ন হলো, নবীজী (সা:) কি ১০ বছর মদিনায় রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন না? খোলাফায়ে রাশেদা কারা চালালো? সে কালে কারা ছিলেন নানা প্রদেশের গভর্নর, বিচারক ও প্রশাসক? রাজনীতিতে না থাকলে কি রাষ্ট্র চালানো যায়? নবীজী (সা:)’র এমন কোন সাহাবা ছিলেন যিনি জিহাদ করেননি? জিহাদই তো মুমিনের রাজনীতি।

পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশে মাদ্রাসাগুলিতে অতীতের এসব ইতিহাস শেখানো হয় না। তাই নবীজীর রাজনীতির সূন্নত হুজুরদের মধ্যে নাই। তারা জিহাদে নাই। যে সূন্নতে জানমালের কুরবানী দিতে হয় -তাতে তারা নাই। তারা আছেন মিলাদ, মুরদা দাফন, কুর’আন খতম, মুয়াযযীনী ও ইমামতি নিয়ে। ফলে দেশের আদালত থেকে বিলুপ্ত হয়েছে শরিয়ত। রাজনীতির ময়দানসহ সমগ্র দেশ দখলে গেছে ইসলামের শত্রু পক্ষের হাতে। বিস্ময়ের বিষয় হলো, বহু হুজুর ভোটচোর হাসিনাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং কওমী জননী বলে।

তাই বাংলাদেশের বিপদ শুধু ভোটচোর হাসিনা ও তার দুর্বৃত্ত বাহিনী নিয়ে নয়, বরং বিভ্রান্ত মোল্লা-মৌলভীদের নিয়েও। শত শত মাদ্রাসার এরূপ ফসল থেকে কি কোন কল্যাণ আশা করা যায়?  রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্লাবনের প্রবল স্রোতে সব যেন ভেসে গেছে। নতুন ফসল ফলানো ছাড়া মুক্তি নাই।

২. নবীজী (সা:) কি তবে জঙ্গি নন?

মহান নবীজী (সা:)’র ঘরে শুধু জায়নামায ছিল না, অনেকগুলি তলোয়ার ও ঢাল ছিল। ছিল, ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সদা প্রস্তুতি। সেরূপ প্রস্তুতি থাকাটি শুধু নবীজী (সা:)’র সূন্নতই নয়, মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশও। শত্রুর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে সর্বদা প্রস্তুত থাকার সে নির্দেশটি এসেছে সুরা আনফালের ৬০ নম্বর আয়াতে। তাই যুদ্ধের প্রস্তুতি না থাকাটাই মহান আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।

ইসলামের শত্রুরা নিজেরা যুদ্ধ করে। মুসলিম দেশগুলিকে দখলে নেয় ও মুসলিমদের হত্যা ও ধর্ষণ করে। এরাই আবার মুসলিমদের বলে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এবং নসিহত করে, ঘরে বসে তসবিহ পড়।অথচ নবীজী (সা) তসবিহ পড়েছেন ও দুর্বৃত্তদের নির্মূলে জিহাদও করেছেন।

আজ মুসলিমগণ দেশে দেশে ইসলামের শত্রুপক্ষের দখলদারির শিকার। আর যেখানে শত্রুপক্ষের দখলদারি থাকবে, সেখানে যুদ্ধও আসবে। সেটিই স্বাভাবিক। ইসলামে সে যুদ্ধটিকেই পবিত্র জিহাদ বলা হয়। অথচ ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যারাই জিহাদের কথা বলে তাদেরকেই বাংলাদেশে জঙ্গি রূপে চিহ্নিত করা হচ্ছে। যেন জঙ্গি হওয়াটাই অপরাধ। সেটিই যদি হয় তবে একথাও বলা যায়, খোদ নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাদের সবাই জঙ্গি ছিলেন। জঙ্গি একটি উর্দু শব্দ; এসেছে জঙ্গ তথা যুদ্ধ থেকে। জঙ্গি তো সেই যে যুদ্ধ করে। যুদ্ধ তো নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাদের জীবনে ছিল। তাদের প্রতিটি যুদ্ধই ছিল জিহাদ। সেসব জিহাদে তাঁরা আবু জাহেলসহ বহু কাফেরকে হত্যা করেছেন। অতএব জঙ্গি না হলে ইসলামের বিজয় আসতো কি করে?  তাহলে প্রশ্ন হলো, নবীজী (সা:) কি জঙ্গি নন? ফলে জঙ্গি হওয়াটি অপরাধ হবে কেন? বরং এটি তো ফরজ। আসলে এসব কথা তারাই বলে যারা ইসলামকে সব সময় পরাজিত দেখতে চায়। এজন্যই মুসলিমদের তারা যুদ্ধ থেকে দূরে রাখতে চায়। অথচ ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও বিজয় বৃদ্ধির জিহাদ ছাড়া ভিন্ন পথ নাই। আর মহান আল্লাহতায়ালা তো সেটিই চান।  

৩. রাজনীতির গুরুত্ব

যাদের দেশপ্রেমিক তারা রাজনীতিতে যোগ দেয়। কারণ রাজনীতিই হলো শত্রুদের হাত থেকে দেশ বাঁচানোর হাতিয়ার। তাই শত্রুদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলো রাজনীতিতে নামতেই হবে। যাদের ঈমান আছে তারাও অবশ্যই রাজনীতিতে যোগ দেয়। কারণ রাজনীতিই হলো ইসলামের শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদের জায়গা। রাজনীতিবিদগণই দেশ চালায়। এবং রাজনীতির ময়দানেই সিদ্ধান্ত  নেয়া হয় দেশ কোন নীতিতে চলবে। ফলে যারা রাজনীতিতে নাই দেশের উপর নিয়ন্ত্রণে তাদের কোন ভূমিকা থাকে না। তাই যারার আল্লাহর দ্বীনের বিজয় চায় তাদের জন্য রাজনীতিতে যোগ দেয়া ছাড়া কোন উপায় নাই। নবীজী (সা:)কে তাই রাজনীতিতে নামতে হয়েছে এবং তাঁকে রাষ্ট্র প্রধান হতে হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামও রাজনীতিতে নেমেছেন। তাদের অনেকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন, প্রদেশের গভর্নর হয়েছেন, প্রশাসক হয়েছেন। এবং বিচারকের আসনেও বসছেন। সেটি কি কখনো নামায-রোযায় নিজেদের ধর্ম-কর্ম সীমিত রাখলে সম্ভব হতো?

যারা রাজনীতিতে নাই, বুঝতে হবে ইসলামের বিজয় নিয়ে ও শত্রুদের পরাজিত করা নিয়ে তাদের কোন আগ্রহ নাই। তারা বাঁচে গরুছাগলের ন্যায় স্রেফ পানাহার নিয়ে। মুসলিমদের পতনের মূল কারণ এটিই। তারা পরিত্যাগ করেছে নবীজী (সা)’র রাজনৈতিক সূন্নত। নবীজী (সা)’র রাজনীতির মূল কথা হলো, ক্ষমতার মসনদ থেকে মিথ্যার ধ্বজাধারী ও দুর্বৃত্তদের নির্মূল এবং সত্যদ্বীন ও ন্যায় বিচারের প্রতিষ্ঠা। মুসলিমদের যখন বিশ্বশক্তির মর্যাদা ছিল তখন তারা শুধু নামায-রোযাই আদায় করতেন না। রাজনীতির ময়দানে তারা প্রত্যেকেই লড়াকু সৈনিক ছিলেন। সবাব জীবনে শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ ছিল। আজ বাংলাদেশে মসজিদগুলিতে নামাযীর অভাব হয়না। কিন্তু দারুন অভাব হলো রাজনীতির ময়দানে ইসলামের পক্ষে মুজাহিদের। ফলে মাঠ দখল করে নিয়েছে ইসলামের শত্রুপক্ষ।  

৪. অমান্য হচ্ছে মহান আল্লাহতায়ালার আইনের

মহান আল্লাহতায়ালার নিজের ভাষায় তাঁর নিজের পরিচয়টি দিয়েছেন পবিত্র কুর’আনে। সেটি হলো, “মালিকুল মুলক” তথা সমগ্র বিশ্বের মালিক তথা রাজা। আইন ছাড়া রাজার রাজত্ব চলে না, রাজ্যে শান্তিও আসে না। তাই মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর রাজ্যে বসবাসকারি সকল মানবের জন্য আইন প্রণয়ন করেছেন -যাকে বলা হয় শরিয়ত। মানব জাতির শান্তি, শৃঙ্খলা ও সফলতা নির্ভর করে সে আইনের প্রয়োগের উপর। নামায যেমন তাঁর বিধান, তেমনি শরিয়তও হলো তাঁর বিধান। নামায না পডলে যেমন কাফের হয়, তেমনি কাফের হয় সে আইন না মানলে। সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নম্বর আয়াতে। অথচ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে সে আইনে আদালতে বিচার হয় না। বিচার হয় কাফেরদের আইনে। সে আইনে ব্যভিচারও বৈধ যদি তা সম্মতিতে হয়। মহান প্রভু মহান আল্লাহতায়ালার বিরুদ্ধে এর চেয়ে বড় বিদ্রোহ আর কি হতে পারে? এ বিদ্রোহীদের কি তিনি জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন?

দেশের পুলিশ, প্রশাসন ও আদালতের কাজ হলো, যারা আইন মানে না -তাদের শাস্তি দেয়া। মুসলিম মাত্রই মহান আল্লাহতায়ার পুলিশ তথা প্রহরী। তাদের দায়িত্ব, মহান আল্লাহতায়ালার আইনের প্রতিরক্ষা দেয়া। মহান আল্লাহতায়ালার সে পুলিশগণ সক্রিয় ছিল মুসলিমদের গৌরব কালে। তখন মহান আল্লাহতায়ালার শরিয়তী আইন অমান্য করলে পুলিশগণ অপরাধীদের গ্রেফতার করতো এবং আদালত তাদের শাস্তি দিত। কিন্তু আজ মহান আল্লাহতায়ালার সে পুলিশ কই? তারা পুলিশ পরিণত হয়েছে শয়তানী শক্তির প্রণিত আইনের।

৫. যেদেশে দুর্বৃত্তকেও সন্মাতি করা হয়

কোথাও আগুন জ্বললে সে আগুনকে দ্রুত থামাতে হয়। আগুন না থামিয়ে তাতে পেট্রোল ঢালাটি গুরুতর অপরাধ। তখন ধ্বংস নেমে আসে। তেমনি কোথাও চুরিডাকাতি, গুম-খুন ও ধর্ষণের কান্ড ঘটলে দ্রুত সে অপকর্মের নায়কদের শাস্তি দিতে হয়। এটিই সভ্য সমাজের রীতি। নইলে সমাজ অসভ্যতায় ভরে উঠে। তাই অতি ঘৃণীত অপরাধ হলো, চোর-ডাকাত, গুম-খুন ও ধর্ষকের নায়কদের শাস্তি না দিয়ে তাদেরকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসিয়ে সন্মানিত করা। আগুনে পেট্রোল ঢালার মত এটিও অতি ভয়ানক। এতে বিলুপ্ত হয় সুস্থ্য মূল্যবোধ ও দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে মানুষের ঘৃনাবোধ। তখন দেশে জোয়ার আসে দুর্বৃত্তির। অথচ বাংলাদেশে সেটিই হচ্ছে। দেশটিতে দেশজুড়ে ভোটডাকাতি করা হলেও আদালতে ভোটডাকাতকে শাস্তি দেয়া হয়না। বরং তাকে ক্ষমতার শীর্ষ আসনে বসিয়ে তাকে সন্মানিত প্রধানমন্ত্রী বলা হয়। এরচেয়ে গুরুতর অপরাধ আর কি হতে পারে? অপরাধীকে এভাবে সন্মানিত করে কি কখনো সভ্য সমাজ নির্মিত হয়?

৬. অভিশপ্ত ইহুদীদের পথে মুসলিম

পবিত্র কুর’আনের সুরা জুম্মা’তে ইহুদী আলেমদের ভারবাহি গাধা বলা হয়েছে। কারণ, তারা হযরত মুসা (আ:)’র উপর নাযিলকৃত তাওরাত গ্রন্থটি সাথে বহন করে বেড়ায় এবং পাঠও করে। তবে তাওরাতে বর্ণিত শরিয়তি আইন রাষ্ট্রে প্রয়োগ করে না। ফলে শরিয়তি আইন শুধু কেতাবেই রয়ে গেছে। এটি হলো মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এরূপ বিদ্রোহ তাদর উপর কঠোর আযাবও এনেছে। পবিত্র কুর’আনে তাদের এ বিদ্রোহের ইতিহাস সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে -যাতে মুসলিমগণ তাদের ন্যায় বিদ্রোহের পথ না ধরে। সেরূপ বিদ্রোহ যে আযাব নামিয়ে আনে -সে হুশিয়ারীও বার বার শোনানো হয়েছে।

অথচ পরিতাপের বিষয় হলো, মুসলিমগণ সে অভিশপ্ত ইহুদীদের পথই ধরেছে। ফলে একই রূপ গাধা বিপুল সংখ্যায় বেড়েছে মুসলিম সমাজেও। তারা বার বার কুর’আন পড়ে এবং কুর’আনে হাফিজও হয়। কিন্তু তারা রাষ্ট্রের বুকে শরিয়তের প্রতিষ্ঠা দেয় না। তারা ভাবে এতেই আল্লাহতায়ালা খুশি হবেন। অথচ শরিয়তের প্রতিষ্ঠা হলো মুসলিম রাজনীতির গোলপোষ্ট। শরিয়ত হলো মহান আল্লাহতায়ালার নিজের জমিনে তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সে সার্বভৌমত্বের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লাগাতর জিহাদ ছিল নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাদের জীবনে। এবং সে জিহাদে সাহাবাদের বেশীর ভাগ শহীদ হয়ে গেছেন। অথচ শরিয়ত প্রতিষ্ঠার সে জিহাদ না থাকায় মুসলিম দেশগুলিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে কাফেরদের প্রণীত আইন। ফলে ব্যাভিচার, বেশ্যাবৃত্তি, মদ্যপান, জুয়ার ন্যায় বহু অপরাধও আইনসিদ্ধ হয়ে গেছে। শরিয়তের আইনভিত্তিক প্রাপ্য শাস্তি পাচ্ছে না ভয়ানক চোর-ডাকাত এবং ধর্ষকগণও।

অথচ সুরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নম্বর আয়াতে অতি স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যারা তার নাযিলকৃত শরিয়তী আইন অনুযায়ী বিচার করেনা তারা কাফের, জালেম ও ফাসেক। তাই প্রশ্ন হলো, পবিত্র কুর’আনের এরূপ আয়াত বার বার তেলাওয়াতে লাভ কি যদি তা পালন করা না হয়? এমন আমলহীন তেলাওয়াতে কি আল্লাহতায়ালা খুশি হন? ইসলাম কি শুধু কি নামায়-রোযা ও হজ-যাকাতে সীমিত? সেটি তো সকল ধর্ম ও সকল আদর্শের উপর মহান আল্লাহতায়ালার এই কুর’আনী বিধানের বিজয়। সেটি মহান আল্লাহতায়ালার নিজের ভাষায় “লি’ইউযহিরাহু আলা দ্বীনি কুল্লিহি”। অর্থ: সকল ধর্ম ও মতাদর্শের উপর তাঁর নির্দেশিত দ্বীনের তথা ইসলামের বিজয়।

ইহুদী-খৃষ্টানেরা বেঁচে আছে কিন্ত হযরত মূসা (আ:) ও হযরত ঈসা (আ:)র শিক্ষা বেঁচে নাই। একই পথ ধরেছে মুসলিমগণ। ফলে বিপুল সংখ্যায় তারা বেঁচে আছে; কিন্তু বেঁচে নাই নবীজী (সা:)র ইসলাম যাতে ছিল ইসলামী রাষ্ট্র, সে রাষ্ট্রের অখণ্ডিত বিশাল ভূমি, শরিয়ত, খেলাফত, শুরা-ভিত্তিক শাসন ও জিহাদ। শরিয়ত বেঁচে থাকলে কি মুসলিম দেশে বেশ্যালয়, ব্যাভিচার, মদ, জুয়া ও সূদী ব্যাংকের ন্যায় হারাম আচার প্রতিষ্ঠা পেত?

৭. সভ্যতর সমাজ নির্মাণের খরচ

সভ্যতর সমাজ নির্মাণের খরচটি বিশাল। ডাকাতেরা কখনোই স্বেচ্ছায় ডাকাতির মাল ফেরত দেয় না। ছিঁচকে চোর ধরতে হলেও তার পিছনে বহু দূর দৌড়াতে হয়। চোর-ডাকাত, ভোট-ডাকাত ও নানারূপ দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দেশ বাঁচাানোর খরচটি আরো বিশাল। সে লক্ষ্যে দেশবাসীকে সর্বদা যুদ্ধ নিয়ে বাঁচতে হয়। এ রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধটি বেতনভোগী পুলিশ বা সেপাহী দিয়ে হয়না। ইসলাম এটিকে বেতনভোগীদের পেশা নয়, পবিত্র জিহাদ তথা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতের মর্যাদা দিয়েছে। আর ইবাদতে বিনিয়োগ করতে হয় নিজের জান, মাল, মেধা, শ্রম তথা সমগ্র সামর্থের। ঈমানদার তখন মহান আল্লাহতায়ালা সার্বক্ষণিক সৈনিকে পরিণত হয়। ইসলামের ইতিহাসে বড় বড় বিজয় এনেছে তো এরূপ অবৈতনিক সৈনিকেরা। মহান আল্লাহতায়ালা ঈমানদারের সে বিনিয়োগের প্রতিদান দেন অনন্ত-অসীমকালের জন্য নেয়ামত ভরা জান্নাত দিয়ে।

ক্ষুধা থেকে বাঁচতে উপার্জনে নামতে হয়, নইলে জীবন বাঁচে না। তেমনি শয়তানী শক্তির গোলামী থেকে বাঁচতে লাগাতর জিহাদে নামতে হয়। নইলে ইসলাম নিয়ে বাঁচা যায় না। ঈমানদার রূপে বাঁচা ও সভ্যতা নির্মাণের এ পথটিই হলো জিহাদের পথ। এছাড়া কোন ভিন্ন পথ না্ই। সমগ্র মানব সমাজে এটিই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে একাজের পুরস্কারও সবচেয়ে বেশী। মুসলিমগণ তাদের গৌরব কালে যেরূপ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতার জন্ম দিতে পেরছিলেন -তার মূলে ছিল জিহাদ। জনগণের জীবনে জিহাদের ন্যায় এ ফরজ ইবাদতটি না থাকলে দেশবাসীর উপর অসভ্যদের শাসন চেপে বসে। ধর্মের নামে তখন অধর্ম শুরু হয় এবং চাপানো হয় জুলুম-নির্যাতনের দুর্বৃত্ত শাসন। তখন কঠিন করা হয় সিরাতুল মুস্তাকীমে চলা। এবং সরকারি উদ্যোগে সহজ করা হয় জাহান্নামের পথে চলা। বাংলাদেশ হলো তারই উদাহরণ। ২৮/০৬/২০২১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *