বাঙালি মুসলিমের ১৯৭১’য়ের অর্জন

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 

একাত্তরের অর্জন: অরক্ষিত স্বাধীনতা

বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় যদি ভারতের চেয়ে দ্বি-গুণ বা তিন গুণও হয় তবুও বাংলাদেশীদের ভারতীয় আগ্রাসনের ভয় নিয়েই বাঁচতে হবে -যেমন বাঁচতে হয় ঘরের পাশের জঙ্গলে নেকড়ে বাঘ আছে, এমন ঘরের বাসিন্দাকে। ভারতের মোকাবেলার সামর্থ্য বাংলাদেশের নাই। ভারতের  শক্তি তার বিশাল ভূগোলে, অর্থনীতিতে নয়। সামরিক ভাবে অরক্ষিত দেশের কি স্বাধীনতা থাকে? সেরূপ এক অরক্ষিত বাংলাদেশই হলো একাত্তরের অর্জন। স্বাধীনতা তো তাদেরই জুটে যাদের থাকে স্বাধীনতা বাঁচানোর সক্ষমতা। নেকড়ের সামনে ভেড়ার স্বাধীনতা থাকে না। তাই ভারতের সামনে সামরিক ভাবে অরক্ষিত হায়দারাবাদ, কাশ্মীর, গোয়া, মাদভাদাড় ও সিকিমের স্বাধীনতা বাঁচেনি। পাকিস্তান থেকে বিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বাধীনতাও হয়েছে দুর্বল ও অরক্ষিত। ১৯৪৭’য়ের অর্জন থেকে ১৯৭১’য়ের অর্জনের এখানেই মূল পার্থক্য।

বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার জন্য ভারত যুদ্ধ করে দিয়েছে –এটি হলো দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিথ্যা। ভারত তার নিজের যুদ্ধ নিজে করেছে; সে সাথে সে যুদ্ধে সহযোগিতা নিয়েছে বাঙালি কলাবোরেটরদের থেকে। এ সত্য যারা বুঝে না, বুঝতে হবে তাদের বুঝার সামর্থ্য শিশু সুলভ। ভারত যুদ্ধ করেছে মূলত ২টি কারণে। এক). শত্রু রাষ্ট্র পাকিস্তানকে খণ্ডিত করতে ও দুর্বল করতে; দুই). বিচ্ছিন্ন ও অধিনত এক ক্ষুদ্র বাংলাদেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে। বাংলাদেশ নামে ভারতের পূর্ব সীমান্তে আরেক শক্তিশালী পাকিস্তান নির্মিত হোক -ভারত কখনোই সেটি চায়নি। এবং সেটি ভবিষ্যতেও হতে দিতে চাইবে না। তাছাড়া ইতিহাস থেকে সাক্ষ্য মেলে, কারো স্বাধীনতা নিয়ে ভারত কখনোই কোন কালে মাথা ঘামায়নি, কোন অর্থ দেয়নি এবং যুদ্ধও করেনি। বরং ভারত বিনিয়োগ করেছে ও যুদ্ধ করেছে অন্য দেশের উপর নিজের দখল জমাতে। সেটি করেছে হায়দারাবাদ ও কাশ্মীর দখলে নিতে। ভারত ১৯৭১ সালে সেটিই করেছে বাংলাদেশের মাটিতে। আগামী বহুশত বছর যাবত এ দাসত্বই ভুগতে হবে বাঙালি মুসলিমদের। অথচ এ দাসত্ব পারমানবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তানীদের নাই। কারণ, দেশটি একটি পারমানবিক শক্তি; ফলে রয়েছে স্বাধীনতা বাঁচানোর সক্ষমতা।  

বাংলাদেশের মূল সমস্যাটি অর্থনৈতিক নয়, বরং সেটি ভূ-রাজনৈতিক। সেটি ক্ষুদ্র ভূগোলের এবং ভারতসেবী রাজনীতির। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি রাশিয়ার চেয়ে বড়। কিন্তু ক্ষুদ্র ভূগোলের কারণে দেশটি রাশিয়ার ন্যায় বিশ্বশক্তি হওয়ার কথা ভাবতেও পারেনা। বরং বাঁচতে হয় পারমানবিক উত্তর কোরিয়র ভয় নিয়ে। ক্ষুদ্র ভূগোল নিয়ে ভারতের ন্যায় আগ্রাসী ও মুসলিম বিদ্বেষী একটি বৃহৎ শক্তির পাশে বসবাসের এটিই হলো সবচেয়ে বড় বিপদ। তখন বাঁচতে হয় অনুগত এক আশ্রিত দেশের মর্যাদা নিয়ে।  বিশ্বের অন্যান্যরাও এরচেয়ে বেশী মর্যাদা দিতে রাজী হয়না। তাই আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তি রূপে ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের উপর দাদাগিরির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের জন্য এটিই হলো বাস্তবতা। প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ বাংলাদেশীগণ যেমন আজ পাচ্ছে না, আগামীতেও পাবে না। ব্রিটিশ আমলে জমিদারের পাশের বাড়ীর কৃষককে যেমন সকাল-বিকাল জমিদারকে কুর্ণিশ করে চলতে হতো, আজ সে একই অবস্থা বাংলাদেশের। ২০২৪ আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, সে স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার লাগাতর ষড়যন্ত্র হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে -যেমন শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পর।   

স্বাধীন থাকার জন্য অতি জরুরি হলো প্রতিরক্ষার সামর্থ্য। সে জন্য অপরিহার্য হলো বৃহৎ ভূগোল ও বৃহৎ অর্থনীতি। প্রতিরক্ষার সামর্থ্য বাড়াতেই শেরে বাংলা ফজলুল হক, খাজা নাযিমুদ্দীন, সোহরাওয়ার্দীর ন্যায় বাংলার মুসলিম নেতাগণ স্বেচ্ছায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানে যোগ দিয়েছিলেন। একই কারণে ১৯৭১’য়ে সকল ইসলামী দল, সকল হাক্কানী পীর ও সকল আলেম পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। অথচ আজ তাদেরকে দেশের স্বাধীনতার শত্রু বলে গালী দেয়া হয়। এই হলো মুজিবভক্ত বাঙালি কাপালিকদের বিচার। অথচ ১৯৪৭ সালে কেউ জোর করে বা ষড়যন্ত্র করে বাংলাকে পাকিস্তানভুক্ত করেনি। বৃহত্তর সিলেটের জনগণ সেদিন ভোট দিয়ে ভারত ছেড়ে পাকিস্তানভুক্ত হয়েছিল। ফলে আসামের মুসলিমগণ যেরূপ গণহত্যা, নির্যাতন ও অপমানের শিকার হচ্ছে -তা থেকে তারা বেঁচেছে। সিলেটের জনগণের আর্থিক অবস্থা আসাম ও পশ্চিম বাংলার যে কোন জেলার জনগণের চেয়ে অনেক ভাল। পশ্চিম বাংলার  ৩ কোটি মুসলিম সে প্রদেশের সরকারি চাকুরীতে শতকরা  ৫ ভাগও নেই। অথচ তারা পশ্চিম বাংলার জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ হলো মুসলিম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ বিষয়গুলি পড়ানো হয় না।

 

ইতিহাস লুকানোর অপরাধ

বাংলাদেশে স্কুলে পড়ানো হয়, বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের উপনিবেশ। অথচ এ সত্য পড়ানো হয় না যে, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আযম মহম্মদ আলীর জিন্নাহর মৃত্যুর পর তাঁর আসনে যিনি বসেছিলেন তিনি কোন পাঞ্জাবী, সিন্ধি বা পাঠান ছিলেন না, তিনি ছিলেন ঢাকার খাজা নাযিমুদ্দীন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ অবধি ২১ বছরে দেশটির ৪ জন প্রধানমন্ত্রী, ২ জন প্রেসিডেন্ট, ৩ জন স্পীকার, ৩ জন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন বাঙালি। উপনিবেশ হলে কি সেটি সম্ভব হতো? ব্রিটিশের ১৯০ বছরের শাসনামলে কোন বাঙালি কি সমগ্র ভারত দূরে থাক, নিজ প্রদেশ বাংলার গভর্নর হতে পেরেছে? কথা হলো, বিদেশী শক্তির উপনিবেশ হওয়ার অর্থ কি এসব ভারতসেবী দুর্বৃত্তগণ বোঝে?

অনেক ইসলামপন্থীগণ আজ আর ১৯৭১ নিয়ে ভাবতে চান না। একাত্তরে যা কিছু হয়েছে -তারা তা  ভূলে যেতে চান। ইংরেজীতে একটি কথা আছে sweep undeer the carpet; এর অর্থ, ঘরের ময়লা কার্পেটের নীচে ঢেকে দাও। এ হলো গৃহে যে ময়লা আছে -সেটি ভূলে থাকার কপট নীতি। সত্য ইতিহাসকেও তার এভাবে ঢেকে দিতে চায়। অর্থাৎ ইতিহাসকে তারা ভূলে থাকতে চায়। কোন গৃহে আগুন লাগলে, খুনের ঘটনা ঘটলে বা কেউই ধর্ষিতা হলে -সে স্মৃতি সে পরিবার কখনো ভূলে না। সে দুঃখ কার্পেটে নীচে দেয়া যায়না। তেমনি একটি জাতি কোন শত্রু শক্তির হাতে পরাজিত, অধিকৃত, খণ্ডিত ও লুণ্ঠিত হলে -সেটি সে জাতির জন্য অবিস্মরণীয় ইতিহাস হয়ে দাঁড়ায়। সেটি কখনো ভুলে থাকা যায়না। তাই কোন ঈমানদার ১৯৭১য়ের স্মৃতি ভুলতে পারে না। কারণ তা থেকে শিক্ষনীয় বিষয় অনেক।  

পাকিস্তানকে ঘিরে শুধু বাঙালি মুসলিমদের নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিমদের একটি স্বপ্ন ছিল। সেটি ছিল খেলাফত বিলুপ্তির পর বিভক্ত উম্মাহর অভিভাবক রাষ্ট্র রূপে বেড়ে ঊঠার। এমন রাষ্ট্রকে বলা হয় civilisational state তথা সভ্যতার অভিভাবকরূপী রাষ্ট্র। ভারত সে স্বপ্নের উপর আঘাত হেনেছে। মুসলিম উম্মাহর স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও ইজ্জত নিয়ে যারা ভাবে -তাদের কাছে সে ভারতীয় আঘাত ভূলবার নয়। তবে যাদের রাজনীতি হলো নিছক বাণিজ্য ও স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি, তারা শুধু দলকে ও দলীয় রাজনীতি নিয়ে ভাবে। একাত্তরের ঘটনা তাদের কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নয়। একাত্তর ভূলে তারা তাই সামনে এগিয়ে যেতে চায়। একাত্তর থেকে শিক্ষা নেয়াতেও তাদের কোন আগ্রহ নাই। বাংলাদেশের ইসলামপন্থী দলগুলি সেটিই হলো আজকের রাজনীতি। অথচ যারা অতীতের ইতিহাস ভূলে যায়, তারা কখনো নতুন ইতিহাস নির্মাণ করতে পারে না। সময়ের তালে ভেসে যাওয়া ছাড়া তাদের কোন নীতি বা রাজনীতি থাকে না।  

 

অপরাধ উম্মাহর বিরুদ্ধে           

শেখ মুজিব ও তার অনুসারীদের অপরাধটি গুরুতর। তাদের অপরাধটি শুধু বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়, বরং সেটি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে। মুজিব ও তার অনুসারীরা একাত্ম হয়েছিল শয়তানের ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী খলিফাদের সাথে। তাদের সাথে তারা সামরিক ও রাজনৈতিক কোয়ালিশন গড়েছিল। মুসলিম ইতিহাসে সেটি অনন্য। তাদের অভিন্ন এজেন্ডা ছিল -সেটি যেমন পাকিস্তানে বিরুদ্ধে তেমনি ইসলামের উত্থানের বিরুদ্ধে। ভারতের এজেন্ডাই ছিল মুজিবের এজেন্ডা। মুজিবের নেতৃত্বে সে এজেন্ডা পূরণে একাত্ম হয়েছিল বাঙালি ফাসিস্ট, বাঙালি সেক্যুলারিস্ট ও বাঙালি কম্যুনিস্টগণ; ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ ছিল দীর্ঘ দিনের। বঙ্গীয় এ বদ্বীপে ইসলামের বিজয় রুখতে ইসলাম থেকে দূরে সরা এসব বাঙালিগণ ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের ন্যায় ছিল একই রূপ বদ্ধপরিকর। তাদের মাঝে সেদিন যে রাজনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক কোয়ালিশন গড়ে উঠেছিল -তা আজও অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। কারণ কোন ভূমিতে ইসলাম থাকলে, সে ভূমিতে শয়তানের এজেন্ডাও থাকে। একাত্তরের ইতিহাস বুঝতে হলে ইসলাম বিরোধী কোয়ালিশনের এ রাজনৈতিক প্রকল্পকে অবশ্যই বুঝতে হবে। এবং বুঝতে হবে, একাত্তরে যারা বাঙালি মুসলিমের ও ইসলামের শত্রু ছিল, তারা আজও ইসলাম ও বাঙালি মুসলিমের শত্রু। তারা শত্রুই থাকবে ভবিষ্যতেও। কারণ সময় পাল্টালেও শত্রুর এজেন্ডা পাল্টায় না। সব যুগের এবং সব দেশের ফিরাউনদের এজেন্ডা এক ও অভিন্ন।     

 

দেশ ভাঙ্গার প্রতিটি যুদ্ধই অসভ্য যুদ্ধ

সভ্য মানুষেরা কখনো দেশ ভাঙ্গতে যুদ্ধ করে না। প্রতিটি ঘর ভাঙ্গা যেমন অসভ্য কর্ম। তেমনি অসভ্য কর্ম হলো দেশভাঙ্গা। কারণ, তাতে দুর্বলতা ও পরাধীনতা বাড়ে। দেশ ভাঙ্গা একমাত্র তখনই জায়েজ হয় যখন সেটি কোন কাফির দেশ ভেঙ্গে ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ হয় -যেমন সেটি ছিল ১৯৪৭’য়ে ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তানের নির্মাণ। এই এতটি কারণ ছাড়া সভ্য মানুষের শত্রুতা কখনোই দেশের ভূগোলের বিরুদ্ধে থাকে না। এমনকি জাতিসংঘের আইনেও সেটি অবৈধ ও অন্যায়। সভ্য মানুষ লড়াই করে শোষণ মু্ক্ত, স্বৈরাচার মুক্ত, জালেম মুক্ত ও দুর্বৃত্ত মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণে। কিন্তু মুজিবের সে সভ্য কাজে আগ্রহ ছিল না। সে নিজেই ছিল অতি বড় মাপের দুর্বৃত্ত, জালেম ও স্বৈরাচারী এবং সে ভারতের জন্য খুলে দিয়েছিল শোষণের দরজা। ক্ষমতায় গিয়ে মুজিব সেটি প্রমাণও করেছে। মুজিবের যেমন পাকিস্তান প্রেম ছিল না, তেমনি ছিল না বাংলাদেশ প্রেম। কোন স্বৈরাচারীর সেটি থাকে না, তার শুধু আত্মপ্রেমী হয়।  তাই বাংলাদেশের মানুষ যখন লাখে লাখে মারা যাচ্ছিল, তখন মুজিব তার পুত্রকে সোনার মুকুট পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছে।      

 

অপরাধ বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে

বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুজিবের অপরাধের খতিয়ানটি বিশাল। বাংলাদেশকে মুজিব শুধু ভারতের সাথে সম্পাদিত ২৫ সালা দাসচুক্তিতে আবদ্ধ এক গোলাম রাষ্ট্রে পরিণত করেনি, বরং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠি রূপে বাঙালি মুসলিমগণ বিশ্ব-রাজনীতি ও মুসলিম বিশ্বের রাজনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারতো -সে অভূতপূর্ব সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। এটি ছিল বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুজিব ও তার অনুসারীদের বিশাল নাশকতা। ইতিহাসে কখনোই সংখ্যাগরিষ্ঠরা সংখ্যালঘিষ্ঠদের থেকে পৃথক হয়নি। কিন্তু মুজিব সে অস্বাভাবিক কর্মটি করেছে ভারতীয় এজেন্ডাকে বিজয়ী করতে। সে সাথে বাঙালি মুসলিমদের স্বার্থহানী ঘটাতে। বাঙালি মুসলিমদের শত শত বছর বাঁচতে হবে সে বঞ্চনা নিয়ে। এটা ছিল বাঙালি মুসলিমের ১৯৪৭’য়ের চেতনার সাথে মুজিবের গাদ্দারী। মুজিব সেটি করেছে ১৯৭০’য়ে নির্বাচনে ৬ দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের সংবিধান তৈরী ও স্বায়ত্বশাসনের প্রতিশ্রুতিতে সরকার গঠনের নামে ভোট নিয়ে। কখনোই মুজিব পাকিস্তান ভাঙ্গা এবং ভারতের সাথে চুক্তিবদ্ধ গোলাম হওয়ার জন্য সে নির্বাচনে ভোট নেয়নি।

মুজিবের ইচ্ছা ছিল আজীবন ক্ষমতায় থাকার প্রচণ্ড নেশা; এটিই ছিল তার জীবনের মূল এজেন্ডা। সে এজেন্ডা তাকে বাকশালী ফ্যাসিস্টে পরিণত করেছিল। মুজিবের সে এজেন্ডা পূরণ করতে বাংলাদেশের বুক থেকে গণতন্ত্রকে যেমন কবরে যেতে হয়েছে, তেমনি ভারতের গোলাম হতে হয়েছে বাঙালি মুসলিমদের। মুজিবের সে ভারত সেবা ও স্বৈরাচারের পথ ধরে তার কন্যা হাসিনা দিয়েছে নৃশংস স্বৈরাচার, গুম, খুন, বিচার বহির্ভুত হত্যা, গণহত্যা, ফাঁসি ও আয়না ঘরের রাজনীতি। এসবই হলো একাত্তরের অর্জন -যাতে নিজেদের অপরাধের কদর্য ইতিহাস নিয়ে বেঁচে আছে অপরাধী মুজিব, অপরাধী হাসিনা ও তাদের অপরাধী অনুসারীরা।   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *