বাঙালি মুসলিমের ব্যর্থতার কারণ: উদ্যোগ নাই চেতনার পরিশুদ্ধির  

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 সবচেয়ে বড় বাধা জনগণের অসুস্থ চেতনা

 বাংলাদেশে খুনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার হটানোর আন্দোলন সফল হয়েছে। সফল হয়েছিল ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের অপসারণও। বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনুসের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে নানামুখী রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কাজ । রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য তিনি গঠন করেছেন অনেকগুলি কমিটি। কিন্তু নাই জনজীবনে পরিশুদ্ধির উদ্যোগ। এমনকি বাংলাদেশীদের পরিচালিত টিভি ও সোসাল মিডিয়ার শো’গুলিতেও নাই জনগণ জীবনে পরিবর্তন ও পরিশুদ্ধি নিয়ে আলোচনা। এমন কি সে আলোচনা নাই দেশের পত্র-পত্রিকা গুলিতেও। আলোচনা নাই দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও আলেমদের মাঝেও। যেন দেশের যত সমস্যা তা শুধু সরকার, প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়েই। এনিয়ে কোন বিতর্ক নাই যে, ফ্যাসিবাদী দুর্বৃত্ত সরকার ছিল সভ্য সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। তবে ত্রুটি রাজনৈতিক দলগুলোরও কম নয়। কিন্তু সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের পথে বাধা শুধু দুর্বৃত্ত সরকারই নয়, বরং বিশাল বাধা যে অনুন্নত, অশিক্ষিত ও দায়িত্বজ্ঞান বিবর্জিত জনগণ -সে বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে না। 

বাংলাদেশের জনগণের ব্যর্থতাটি বিশাল। সেটি বুঝা যায় জনগণ যখন মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্রের খুনি, বাকশালী ফ্যাসিস্ট ও দুর্ভিক্ষের জনক, হিন্দুত্ববাদী ভারতের সেবাদাস ও দুর্নীতির লালন কর্তাকে ঘৃণা না করে বরং জাতির নেতা, পিতা ও বঙ্গবন্ধুর মর্যাদায় বসায়। কোন সভ্য, উন্নত ও ঈমানদার মানুষ এমন রুচি বিবর্জিত কাজ করেনা। কারণ দুর্বৃত্ত অপরাধীকে সম্মান করা কোন দেশেই কোন সভ্য কর্ম নয়।  এমন কাজে জনগণের বুদ্ধিবৃত্তিক সুস্থতার পরিচয় মেলে না। বরং এতে ধরা পড়ে জনগণের দূষিত, অসুস্থ ও আত্মঘাতী চেতনা। এমন জনগণকে দিয়ে সভ্য রাষ্ট্রের নির্মাণ অসম্ভব। যেমন অসম্ভব হিংস্র পশু ভরা গহিন জঙ্গলে নিরাপদ গৃহ নির্মাণ।

অসুস্থ ও আত্মঘাতী চেতনার জনগণ বরং মুজিবের ন্যায় অপরাধীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে এবং গণহত্যা ও ভোটডাকাতির সংঘটক হাসিনাকে মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী বলবে –সেটিই স্বাভাবিক। এমন আত্মঘাতী জনগণই তো উর্বর ক্ষেত্র তৈরী করে ভোটডাকাতি, ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও ভারতের ন্যায় শত্রু শক্তির আগ্রাসনের। একাত্তরে তো সেটিই দেখা গেছে। এরাই কি একাত্তরে ভারতের ন্যায় চিহ্নিত শত্রু শক্তির সাহায্য নিয়ে নিজেদের হাতে গড়া পাকিস্তানকে খণ্ডিত করে ভারতের হাতে তুলে দেয়নি? অথচ সে পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক পাঞ্জাবী, পাঠান, সিন্ধি বা বেলুচ ছিল না, বরং ছিল পূর্ব পাাকিস্তানী বাঙালিগণ।

পশ্চিম বাংলার বাঙালিদের উপর রাষ্ট্র ভাষা রূপে হিন্দিকে চাপানো হয়েছে। কিন্তু সে জন্য কোন ভারতীয় বাঙালি এ কথা কখনোই বলেনি যে বাঙালির মুখের ভাষা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সে কথা বলেছে অসুস্থ চেতনার পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম বাঙালিরা। পশ্চিম বাংলার বাঙালি হিন্দুদের কাছে ভারতের অখণ্ডতা গুরুত্বপূর্ণ; কিন্তু বাঙালি মুসলিমদের কাছে পাকিস্তানের অখণ্ডতা গুরুত্ব পায়নি। বরং পাকিস্তানের ন্যায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রের খণ্ডিত করণ, মুসলিম উম্মাহর ক্ষতিসাধন এবং হিন্দুত্ববাদী ভারতের বিজয় এদের কাছে উৎসবের বিষয় গণ্য হয়। সে উৎসবটি প্রতিবছর দেখা যায় বছর ঘুরে ১৬ ডিসেম্বর এলে। এমন দূষিত চেতনা নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্রের ন্যায় মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নির্মাণ কি সম্ভব?

বাঙালি মুসলিম জনগণ নিজেদের মুসলিম রূপে দাবী করলেও তারা ইসলামের অতি মৌলিক বিষয়টি বুঝতে পারেনা যে, রাজনীতি একমাত্র তখনই হালাল হয় যখন লক্ষ্য হয় ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব, তারা শরিয়া আইন, মুসলিম ঐক্য ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠা। রাজনীতি তখন স্রেফ রাজনীতি থাকে না, পবিত্র জিহাদে পরিণত হয়। আর যে রাজনীতি জিহাদ নয়, সে রাজনীতি শত ভাগ হারাম। কারণ ব্যক্তির সময়, মেধা, অর্থ, দৈহিক বল ও প্রতি ফোটা রক্ত  হলো মহান আল্লাহ তায়ালার দেয়া অমূল্য আমানত।  এগুলি ব্যয় হবে একমাত্র তারই এজেন্ডাকে বিজয়ী করার কাজে। এবং সে এজেন্ডাটি হলো ইসলামের বিজয় এবং সকল প্রকার অনৈসলামের নির্মূল। অপর দিকে যে রাজনীতির লক্ষ্য, ইসলামকে পরাজিত রাখা -সে রাজনীতি শতভাগ হারাম। সে রাজনীতি হলো জাহান্নামের জায়গা কেনার রাজনীতি। এবং সে হারাম রাজনীতির কারণেই অতীতে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির ন্যায় আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব ও তাঁর শরিয়া প্রতিষ্ঠার বিরোধী  রাজনৈতিক দলগুলি। এবং সে হারাম রাজনীতির কারণেই খণ্ডিত হয়েছে পাকিস্তান এবং ১৯৭১’য়ে বিজয় পেয়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারত।   

 

অক্ষত রয়েছে মূর্তিপূজার সংস্কৃতি

দেশ থেকে মুজিবের মূর্তি নির্মূল হয়েছে; কিন্তু এখনো অক্ষত রয়ে গেছে মূর্তি পূজার সংস্কৃতি। সেটি প্রতি বছর দর্শনীয় হয় ২১শে ফেব্রেয়ারি এলে। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা নগ্ন পদে পূজা স্তম্ভের পদ তলে ফুল দিয়ে পৌত্তলিক রীতির মহড়া দেয়। বিশুদ্ধ এ হিন্দুয়ানী ধর্মী রীতিতে ইসলামের কোন স্থান নাই। শ্রদ্ধা জানানোর নামে এমন পৌত্তলিক রীতি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের আর কোন দেশে নাই। অথচ এ পৌত্তলিকতা বেঁচে আছে মসজিদ-মাদ্রাসার দেশ বাংলাদেশে। এর কারণ, বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক বিজয় একাকী আসে না। সাথে আনে বিজয়ী পক্ষের ধর্মীয় রীতি। বাংলাদেশে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি ও বুদ্ধিরৃত্তির বিজয়টি বিশাল। অন্য কোন মুসলিম দেশে হিন্দুত্ববাদ এরূন্প বিজয় পায়নি। ফলে হিন্দুত্বের সে বিজয় দেখা যায় যেমন একুশের পূজা স্তম্ভে, তেমনি রমনার বটতলার বর্ষবরণ ও বসন্ত বরণে।    বিস্ময়ের বিষয় হলো, পৌত্তলিক সংস্কৃতির কাছে এমন আত্মসমর্পণ নিয়ে বাংলাদেশের আলেম, ইমাম ও পীরগণ নীরব। তারা ব্যস্ত ওয়াজের নামে নিজেদের ধর্ম ব্যবসা এবং পীরগীরি ও ফেরকার বাণিজ্য নিয়ে। হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির জোয়ারে ভেসে ছাত্র-জনতা যে জাহান্নামের দিকে যাচ্ছে -তা নিয়ে এ হুজুরগণ ভাবে না। তারা ভাবে শুধু নিজেদের রুটিরুজি ও ধর্ম ব্যবসা নিয়ে।  

প্রশ্ন হলো, হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির কাছে যারা আত্মসমর্পণ করে -তাদের দিয়ে কি কখনো ইসলামী পরিবার, রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণ সম্ভব? এমন যুব সম্প্রদায় দিয়ে কি করে সম্ভব বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুরক্ষা? ভূ-রাজনৈতিক স্বাধীনতা বাঁচাতে হলে শত্রু শক্তির বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক অধিকৃতি থেকে চেতনার ভূমিকে বাঁচাতে হয়। কিন্তু বাঙালি মুসলিমের চেতনার ভূমিকে সুরক্ষিত রাখার কাজটি হয়নি। হিন্দুত্ববাদীদের হাতে চেতনার ভূমি অধিকৃত করার কাজটি শুরু হয় পাকিস্তান আমল থেকেই; সেটি পূর্ণ বিজয় লাভ করে ১৯৭১’য়ে যুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী ভারতের সামরিক বিজয়ের পর। একমাত্র কুর’আনী দর্শনই শত্রুর সে বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক অধিকৃতি থেকে দেশকে বাঁচাতে পারতো। কিন্তু সে বাঁচানোর কাজটি কখনোই হয়নি। ফলে হাসিনার পতন হলেও বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের চেতনার ভূমি এখনো অধিকৃত রয়ে আছে ইসলাম বিরোধী দূষিত দর্শনে। বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের জন্য সেটিই হলো বিপদের মূল কারণ।   

 

 রাষ্ট্রকে পাল্টাতে হলে প্রথমে জনগণকে পাল্টাতে হবে

ঘোড়ার আগে গাড়ি জোড়া যায় না। তেমনি জনগণকে না পাল্টালে সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের কাজটি হয়না। এটিই হলো নবীজী (সা:)’র জীবনের অন্যতম প্রধান শিক্ষা। জনগণের মাঝে সর্বপ্রথম সৃষ্টি করতে হয় মিথ্যা, দুর্বৃত্তি ও অবিচারকে ঘৃণা করা এবং সত্য ও সুবিচারকে ভালবাসার সামর্থ্য। তবে ঈমানদারের শুধু অসত্য ও অন্যায়কে ঘৃণা করার সামর্থ্য থাকলে চলে না, থাকতে হয় সেগুলির নির্মূলে জিহাদে নামার প্রবল তাড়না। সে তাড়নার মাঝে মুমিনের ঈমান দেখা যায়। সে তাড়না না থাকাটিই মুনাফিকি। সে তাড়না প্রতিটি মুসলিম নারী ও পুরুষকে দুর্বৃত্ত নির্মূলের জিহাদে মুজাহিদে পরিণত করে। তবে সে জিহাদের শক্তিশালী ও সর্বশেষ্ঠ হাতিয়ার হলো ইসলামী রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের বিশাল প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো এবং বিপুল লোকবল। ইসলামী রাষ্ট্র না থাকলে সে কাজটি লাখ লাখ মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়েও সম্ভব নয়।

ইসলামকে বিজয়ী করার কাজে নবীজী (সা:) রাষ্ট্রের ক্ষমতা বুঝতেন। অতি পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশের আলেমগণ রাষ্ট্রের সে ক্ষমতা বুঝেন না। তাই তারা রাজনীতি নাই। বরং তাদের অনেকে রাজনীতিতে না থাকাটি দ্বীনদারী মনে করেন। তারা ভাবেন বেশী বেশী নামাজ-রোজা, মসজিদ-মাদ্রাসা, ওয়াজ মহফিল  ও দোয়া-দরুদের মাধ্যমেই দ্বীনের বিজয় আনবেন। অথচ মদিনায় হিজরতের পর ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় নবীজী (সা:) একদিনও বিলম্ব করেননি। তিনি ১০টি বছর সে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। কিন্তু তার আগে মক্কায় ১৩টি বছর নিরলস ভাবে কাজ করেছেন জনগণ মনের ভূবন পাল্টানোর এজেন্ডা নিয়ে। এটি ছিল তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ। সে জিহাদের অস্ত্র ছিল কুর’আন। পবিত্র কুর’আনে সে জিহাদের হুকুম এসেছে এভাবে, “জাহিদু বিহি জিহাদান কবিরা”। অর্থ: এই কুর’আন দিয়ে বড় জিহাদটি করো।

 

 শুরুর কাজটিই কোন কালেই হয়নি

নবীজী (সা:) যেখান থেকে ইসলামকে বিজয়ী করার কাজের শুরু করেছিলেন, সে কাজটিই বাংলাদেশে কোন কালেই হয়নি। এমন কি সুলতানী ও মোগল আমলেও হয়নি। এমন কি আজও হচ্ছে না। মুসলিম শাসকগণ ব্যস্ত থেকেছে রাজ্য বিস্তার, রাজ্য শাসন ও তাদের আরাম আয়েশ নিয়ে। ইসলামের প্রচারে তাদের কোন আগ্রহ ছিলনা। ফলে মিশর, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক ও মরক্কোর ন্যায় দেশগুলিতে যেরূপ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ইসলাম কবুল করেছে ,সেটি বাংলা ও ভারতের ক্ষেত্রে ঘটেনি। ফলে ভারতে ৬ শত বছরের মুসলিম শাসনের পরও মুসলিমগণ সংখ্যালঘিষ্ঠই থেকে গেছে। ফলে ভারত জুড়ে বিজয়ী থেকে গেছে পৌত্তলিকতার আদিম অজ্ঞতা।  এর কারণ, মুসলিম শাসকগণ নিজেরাই ব্যর্থ হয়েছে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হতে।

অপর দিকে সুফি-দরবেশগণ ব্যস্ত থেকেছে খানকা, হুজরা ও দরগা নির্মাণ ও যিকির ও ওজিফা পাঠ নিয়ে। তাদের কাছে কুর’আন বুঝা ও জনগণকে কুর’আন বুঝানো গুরুত্ব পায়নি। ফলে মিশর, ইরাক, সুদান, লিবিয়া, আলজিরিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়ার জনগণ মুসলিম হওয়ার সাথে সাথে যেরূপ কুর‌’আন বুঝার লক্ষ্যে মাতৃভাষাকে পরিত্যাগ করে আরবী ভাষাকে গ্রহণ করেছিল -তেমনটি বাংলাদেশে ঘটেনি। ফলে সাধিত হয়নি সঠিক ভাবে সে কুর’আনী ইসলাম বুঝার কাজ। ফলে নবীজী (সা:) যে ইসলাম প্রতিষ্ঠা দিয়ে যান তা বাংলাদেশে কোন কালেই প্রতিষ্ঠা পায়নি। এর ফলে নবীজী (সা:)’র আমলের ই্সলাম বাদ দিয়েই বাংলা ও ভারতের মুসলিমগণ ইসলাম পালন করেছে। প্রতিষ্ঠা ফলে প্রতিষ্ঠা পায়নি এমন কি ইসলামী সাংস্কৃতি। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনেকে আধা হিন্দু রয়ে গেছে। সে হিন্দু প্রভাব বেঁচে থাকার কারণেই বাঙালি মুসলিমগণ ২১শে ফেব্রেয়ারিতে স্তম্ভের পাদদেশে নগ্ন পদে ফুল দিয়ে হিন্দুদের মত পূজা করে। তাছাড়া হিন্দু সংস্কৃতির প্রবল প্রকাশ দেখা যায় বাঙালি মুসলিমের বর্ষবরণ ও বসন্তবরণ অনুষ্ঠানে। অনেকের গরু কুর’বানীতে অনাগ্রহ তো চেতনায় পৌত্তলিকতা বেঁচে থাকার কারণে।    

বাঙালি ও ভারতীয় মুসলমদের ব্যর্থতাটি প্রকট ভাবে ধরা পড়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের দিকে নজর দিলে।  নবীজী (সা:) ও সাহাবাদের যুগের মুসলিমগণ সে আমলের বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদে প্রত্যেকেই মুজাহিদ পরিণত হয়েছিলেন। তবে তাদের সে জিহাদ শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদে সীমিত থাকেনি; সশস্ত্র জিহাদেও তারা শামিল হয়েছিলেন।  অথচ সে জিহাদে আজ এমনকি আলেম, আল্লামা, ইমাম এবং পীর সাহেবদেরও দেখা যায়না। বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদের মূল হাতিয়ার হলো পবিত্র কুর’আন। অথচ সে কুর’আন বুঝতে তারা আগ্রহী নয়। তারা দায়িত্ব সারে স্রেফ না বুঝে তেলাওয়াত করে।  যারা ইসলামী দলের নেতাকর্মী, তারাও কুর’আন বুঝার ক্ষেত্রে ও বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদে তেমন একটা নেই। তারা ব্যস্ত রাজনৈতিক বয়ান নিয়ে। তারা যেন ভিত না গড়েই ইসলামী রাষ্ট্রের ইমারত গড়বেন!  এটি তো নিশ্চিত ব্যর্থতার পথ। সাফল্যের পথ তো একমাত্র নবীজী (সা:)’র প্রদর্শিত পথ।  আর নবীজী (সা:)’র পথটি পদে পদে কুর’আন অনুসরণের পথ। কিন্তু যারা কুর’আন বুঝলোই না, তারা সে পথ অনুসরণ করবে কিরূপে? সফলই বা হবে কিরূপে? এ পথ যে ব্যর্থতার পথ তা নিয়ে সন্দেহ থাকে কি? আর এ ব্যর্থতা যে জাহান্নামে হাজির করবে -তা নিয়েও কে সন্দেহ থাকে? ২৪‌/০৬/২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *